ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে প্রথম একাদশে খেলা অধিকাংশ আর্জেন্টাইন ফুটবলার অনুশীলনে অনুপস্থিত থাকলেও সকলের চিন্তা লিওনেল মেসিকে নিয়েই। বৃহস্পতিবার (১৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় কাতার বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন নম্বর অনুশীলন মাঠে আর্জেন্টিনার অধিনায়ককে ছাড়াই লিওনেল স্কালোনি ফ্রান্স ম্যাচের প্রস্তুতি শুরু করায় হঠাৎ করেই উদ্বেগ বাড়তে শুরু করে দিয়েছে।
ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে সেমিফাইনালেই দেখা গিয়েছিল বাঁ পায়ের হ্যামস্ট্রিংয়ে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন মেসি। তখন থেকেই উদ্বেগ বাড়তে শুরু করে শিবিরে।
দলের তরফে এই ব্যাপারে কিছু জানানো না হলেও আর্জেন্টিনার সাংবাদিকরা জানান, পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সময় কাটানোর জন্য ফুটবলারদের বুধবার বিশ্রাম দিয়েছিলেন স্কালোনি। কিন্তু মেসি দীর্ঘক্ষণ সময় কাটান ফিজিয়োথেরাপিস্টের সঙ্গে।
বৃহস্পতিবার তিনি অনুশীলনে না নামায় রহস্য আরও ঘনীভূত হচ্ছে। আর্জেন্টিনার টিম ম্যানেজমেন্টের তরফে এ দিনও দাবি করা হয়েছে, মেসি সম্পূর্ণ সুস্থই রয়েছেন। টানা ম্যাচ খেলে যেহেতু ক্লান্ত, তাই মাঠে নামেননি অনুশীলন করতে। কাতার বিশ্ববিদ্যালয়ের জিমেই ফ্রান্স ম্যাচের প্রস্তুতি নিচ্ছেন তিনি।
সন্ধ্যায় মেসিকে নিয়ে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়লেও বৃহস্পতিবার সকালে আর্জেন্টিনা শিবিরে ছিল ফুরফুরে আবহ। কিট ম্যানেজার ডাইনিংরুমে ঘোষণা করেন, ১৯৭৮ ও ১৯৮৬ এর বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা যে ঐতিহ্যবাহী নীল-সাদা জার্সি পরে খেলে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল, রোববার (১৮ ডিসেম্বর) ফ্রান্সের বিরুদ্ধে ফাইনালেও তা পরবেন মেসিরা। জানিয়েছে ফিফা।
আর্জেন্টিনার সাংবাদিকদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী দলের সকলে এই খবর শুনে উচ্ছ্বসিত হয়ে উঠলেও মেসি ও কোচ লিওনেল স্কালোনি নির্লিপ্ত ছিলেন। দু’জনের কেউই নাকি কী জার্সি পরে ফাইনালে খেলবে আর্জেন্টিনা, তা নিয়ে আগ্রহী নন। দু’জনেরই পাখির চোখ ফ্রান্সকে হারিয়ে ৩৬ বছর পরে বিশ্বকাপ জেতা। রোববার লুসেল স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপ ফাইনাল তো শুধুমাত্র আর্জেন্টিনা বনাম ফ্রান্স দ্বৈরথ নয়। শেষবারের মতো বিশ্বকাপ জেতার সুযোগ মেসির কাছে। ডিয়েগো ম্যারাডোনার নজির স্পর্শ করার হাতছানি। চার বছর আগে রাশিয়া বিশ্বকাপে ফ্রান্সের কাছে হেরে বিদায়ের বদলা নেওয়ার লড়াই। আরও একবার ইউরোপকে হারিয়ে লাতিন আমেরিকার ফুটবল শিল্পকে বিশ্বসেরা করার সংকল্প।
ফাইনালের জন্য মেসি কীভাবে নিজেকে প্রস্তুত করছেন, তা দেখতেই বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কাতার বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঠে সাংবাদিকদের ভিড় উপচে পড়েছিল। অ্যাঞ্জল ডি মারিয়া, লাওতারো মার্তিনেজরা একে একে মাঠে নামলেও সকলেই অপেক্ষা করছিলেন মেসিকে দেখার জন্যই। শেষ পর্যন্ত সেই আশা অপূর্ণই থেকে গেল। আর্জেন্টিনার সাংবাদিকদের কেউ কেউ বললেন, ‘‘মনে হচ্ছে সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরা বেরিয়ে গেলে মেসি অনুশীলনে নামবেন। ফাইনালের আগে আর্জেন্টিনা অধিনায়ক নিজেকে গুটিয়ে রাখতে চান। তাই সকলের সামনে অনুশীলন করলেন না।’’
নয়াশতাব্দী/জেডআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ