কাতার বিশ্বকাপের প্রথম কোয়ার্টার ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছে ব্রাজিল ও ক্রোয়েশিয়া। বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায় এজুকেশন সিটি স্টেডিয়ামে শুরু হয়েছে ম্যাচটি। এই ম্যাচের জয়ী দল চলে যাবে সেমিফাইনালে। আর পরাজিত দল দেশের বিমান ধরবে।
ব্রাজিলের বিপক্ষে ম্যাচটা ৫০-৫০ নয়। ক্রোয়েশিয়ার সেরা তারকা এবং শেষ বিশ্বকাপ খেলতে আসা লুকা মডরিচের সরল স্বীকারোক্তি। ব্রাজিল শুধু তাদের বিপক্ষে ম্যাচে নয় আসরের ফেবারিট সেটাও তিনি মেনে নিয়েছেন। ম্যাচটা ৬০-৪০ নাকি ৭০-৩০ তা অবশ্য লুকা বলেননি। তবে শেষের আগে তারা হাল ছেড়ে দেবেন না সেটা পরিষ্কার করে বলে দিয়েছেন।
এই ‘ছেড়ে দেব না’ বলার সাহস লুকা মডরিচদের আছে। কারণ তারা রাশিয়া বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলেছেন। কারণ তাদের দলে বিশ্বমানের ডিফেন্ডার আছেন। যারা এখন পর্যন্ত আসরে মাত্র দুটি গোল হজম করেছে। তাদের মিডফিল্ড অভিজ্ঞ এবং আসরের অন্যতম সেরা। জিততে হলে ওই মিডফিল্ড পার কর রক্ষণ ভেঙেই গোল করতে হবে সেলেসাওদের।
ক্রোয়াটদের সেন্ট্রাল ডিফেন্সে আছেন ডিজান লভরেন। ৩৩ বছর বয়সী এই তারকা জাতীয় দলে খেলছেন ১৩ বছর। ২০১৪-২০ পর্যন্ত লিভারপুলের রক্ষণ সামলেছেন তিনি। উচ্চতা ছয় ফিট দুই ইঞ্চি। অর্থাৎ এরিয়াল বা উপরের বলে তিনিই কর্তৃত্ব করবেন। তার পাশে দাঁড়িয়ে খেলবেন জোসকো গ্রাভারডিওল। ২০ বছর বয়সী ছয় ফুট এক ইঞ্চির এই ডিফেন্ডারকে চেলসি নজরে রাখতে শুরু করেছে। নতুন থিয়াগো সিলভা ভাবতে শুরু করেছে। তার দাম ১০০ মিলিয়ন হওয়া উচিত বলে অনেকে মনে করছেন।
দলটির দুই ফুল ব্যাকও শক্তিশালী। বোর্না বেরিসিক রেঞ্জার্সে চেলেন। তিনিও ছয় ফুটের ওপরে লম্বা। লেফটে খেলা জুরানভিক খেলেন সেল্টিকে। দলটির মিডফিল্ডে আছে মায়েস্ত্রো লুকা মডরিচ। যিনি জাতীয় দলে খেলছেন ১৬ বছর, রিয়াল মাদ্রিদে ১০ বছর। ১১ নম্বর জার্সিতে খেলা অভিজ্ঞ ব্রোজোভিক ইন্টার মিলানের মাঝমাঠের সেরা ভরসা। ক্লাবটিতে সাত বছর খেলছেন তিনি। জাতীয় দলে খেলার অভিজ্ঞতা আট বছর। আর চেলসির মাতেও কোভাচিক গতি, শারীরিক শক্তি দিয়ে প্রতিপক্ষের আক্রমণ ভাঙতে বেশ পটু। সাবেক ইন্টার মিয়ান ও রিয়াল মিডফিল্ডার আক্রমণে উঠতেও পারদর্শী।
আসরের অন্যতম সেরা আক্রমণভাগ ব্রাজিলের। নেইমার, ভিনিসিয়াস ও রিচার্লিসনরা যেকোন আক্রমণভাগ ভেঙে দিতে পারেন। কিন্তু ক্রোয়াট রক্ষণের বিপক্ষে পরীক্ষাটা বেশি দিতে হতে পারে তাদের। বিশেষ করে আগের চার ম্যাচে যে পরিমাণ সুযোগ সেলেসাওরা হারিয়েছে ক্রোয়াটদের বিপক্ষ ওই মিসের মিছিলে নামলে খেসারত দিতে হতে পারে তিতের দলের। পেরিসিচ, ক্রামারিক গতিময় কাউন্টার অ্যাটাকে ধরিয়ে দিতে পারে বাড়ির টিকিট।
বিশ্বকাপে অবশ্য এবারই প্রথম মুখোমুখি হচ্ছে না ব্রাজিল ও ক্রোয়েশিয়া। এর আগে ২০০৬ ও ২০১৪ বিশ্বকাপে মুখোমুখি হয়েছিল তারা। দুইবারই জিতেছে ব্রাজিল। ২০০৬ বিশ্বকাপে ১-০ ও ২০১৪ বিশ্বকাপে ৩-১ ব্যবধানে জিতেছিল সেলেসাঁওরা।
এবার দেখার বিষয় ব্রাজিলকে প্রথমবার বিশ্বকাপে হারাতে পারে কিনা ক্রোয়েশিয়া। নাকি নেইমার-কাসেমিরোদের জয়ের পাল্লা আরও ভারী হয়।
ব্রাজিলের শুরু একাদশ: অ্যালিসন, থিয়াগো সিলভা, মারকুইনহোস, দানিলো, এদার মিলিতাও, নেইমার, ক্যাসেমিরো, লুকাস পাকুয়েতা, রিচার্লিসন, ভিনিসিউস জুনিয়র ও রাফিনহা।
ক্রোয়েশিয়ার শুরুর একাদশ: ডমিনিক লিভাকোভিচ, জোস্কো গভার্দিওল, দেজান লোভরেন, বোর্না সোসা, জোসিপ জুরানোভিচ, মার্সেলো ব্রোজোভিচ, মাতেও কোভাসিক, লুকা মড্রিক, আন্দ্রেজ ক্রামরিক, ইভান পেরিসিক ও মারিও প্যাসালিক।
নয়াশতাব্দী/জেডআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ