গ্রুপ পর্বের হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পর থেকেই শুরু হচ্ছে নকআউটের দ্বৈরথ। এই পর্বের প্রথম ম্যাচেই মুখোমুখি হচ্ছে 'এ' গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন নেদারল্যান্ডস ও 'বি' গ্রুপের রানার্স আপ যুক্তরাষ্ট্র। দুই দলই চলতি আসরে এখন পর্যন্ত হারেনি কোনো ম্যাচ। তবে কাগজে কলমে কিছুটা পিছিয়ে থাকবেন ক্রিস্টিয়ান পুলিসিকরা। ফিনিশিংও দুশ্চিন্তা হতে পারে আমেরিকানদের জন্য, গ্রুপ পর্বে ডাচদের পাঁচ গোলের বিপরীতে তাদের গোলসংখ্যা মাত্র দুই।
শনিবার (৩ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায় খলিফা আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হচ্ছে দুই দল। শক্তির বিচারে ডাচরা অনেক এগিয়ে। তবে নিজেদের যাত্রার সমাপ্তি টানতে চাইবে না যুক্তরাষ্ট্রও। তবে ভালো করতে তিন বিভাগেই সেরাটা খেলতে হবে পুলিসিক বাহিনীকে। অন্যদিকে ডাচদের থাকতে হবে সতর্ক, অঘটনময় গ্রুপ পর্বের পর শেষ ষোলোতে এমন কিছু নিশ্চিতভাবেই চাইবে না তারা।
ম্যাচের ফলাফল জানা যাবে ম্যাচ শেষেই, তবে তার আগে দুই দলের সম্ভাব্য একাদশ ও ফর্মেশন দেখে নেয়া যাক-
নেদারল্যান্ডস: (৩-৪-১-২): নোপার্ট (গোলরক্ষক), টিম্বার, ভ্যান ডাইক, আকে, ব্লিন্ড, ডি ইয়ং, ডি রুন, ডামফ্রিস, ক্লাসেন, গাকপো, ডিপাই।
যুক্তরাষ্ট্র: (৪-৩-৩) টার্নার (গোলরক্ষক), রবিনসন, ডেস্ট, রিম, ক্যামেরন, মুসাহ, অ্যাডামস, ম্যাকেনি, পুলিসিক, অ্যারনসন, উইয়াহ
দুই দলের আজকের ম্যাচে নজর থাকবে যাদের ওপর-
তিন গোল করে যৌথভাবে সর্বোচ্চ গোলদাতাদের তালিকার শীর্ষে থাকা কডি গাকপোর দিকে আবারও চেয়ে থাকবে ডাচ ভক্তরা। মেমফিস ডিপাই, ডেভি ক্লাসেনদেরও বজায় রাখতে হবে নিজেদের দারুণ বোঝাপড়া। সেই সঙ্গে বদলী হিসেবে সুযোগ পেলে স্টিভেন বার্গুইনকেও দেখাতে হবে গতির ঝলক। মাঝমাঠে ডিলে ব্লিন্ড, ফ্রাঙ্কি ডি ইয়ংদেরও করতে হবে নামের প্রতি সুবিচার। দলের মতো রক্ষণের নেতৃত্বও দিতে হবে ভার্জিল ভ্যান ডাইককে।
গ্রুপ পর্বে মাত্র দুই গোল করে শেষ ষোলোতে পা রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। গোলের ধারায় ফেরার কোন বিকল্প নেই তাদের। তবে যুক্তরাষ্ট্র ভক্তদের জন্য আশাবাদী করতে পারে ইরানের বিপক্ষে দলের সবচেয়ে বড় তারকা পুলিসিকের গোল পাওয়া। ডাচদের বিপক্ষে টিম উইয়াহকে যোগ্য সঙ্গটা দিতে হবে চেলসি তারকাকে। তাছাড়া মাঝমাঠে ওয়েস্টন ম্যাকেনি ও ডিফেন্সে সার্জিনো ডেস্টকেও রাখতে হবে ভূমিকা।
নেদারল্যান্ডস ও যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য পরিসংখ্যান-
১) বিশ্বকাপে এবারই প্রথম মুখোমুখি হচ্ছে নেদারল্যান্ডস ও যুক্তরাষ্ট্র। তবে দুই দলের মধ্যে পাঁচটি প্রীতি ম্যাচের চারটিতে জিতেছে ডাচরা।
২) প্রথমবারের মতো টানা তিনটি বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠতে পারার হাতছানি রয়েছে নেদারল্যান্ডসের।
৩) তৃতীয় কোচ ১১টি বিশ্বকাপের প্রতিটি ম্যাচে অপরাজিত থাকতে পারেন (টাই-ব্রেকার ড্র হিসাবে ধরা হয়েছে) লুইস ফন হাল। আগের ১০ ম্যাচের ৭টি জয় ও ৩টি ড্র। লুইজ ফিলিপ স্কোলারি ২০০২-২০০৬ সালের মধ্যে ব্রাজিল ও পর্তুগালের হয়ে ১২টি ম্যাচ এবং মারিও জাগালো ১৯৭০-১৯৭৪ সালের মধ্যে ব্রাজিলের হয়ে ১১টি ম্যাচ অপরাজিত ছিলেন।
৪) যুক্তরাষ্ট্র প্রথমবারের মতো নিজেদের টানা তিনটি বিশ্বকাপে (২০১০, ২০১৪, ২০১১) শেষ ষোলোতে পৌঁছেছে।
৫) ২০২১ সালের আগস্টে ফন হাল কোচ হওয়ার পর থেকে নেদারল্যান্ডস একটিও ম্যাচ হারেনি। ১৮টি ম্যাচে অপরাজিত রয়েছে, এরমধ্যে ১৩টি জয় এবং পাঁচটি ড্র।
৬) যুক্তরাষ্ট্র তাদের শেষ দুটি দ্বিতীয় রাউন্ডের ম্যাচে অতিরিক্ত সময়ে গিয়ে হেরেছে, পেনাল্টি শুটআউটে পৌঁছানোর আগে ঘানা ও বেলজিয়াম উভয়ের কাছে ২-১ গোলে হার মানে।
৭) বিশ্বকাপে কোনো ইউরোপীয় দেশের বিপক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের শেষ জয়টি ২০০২ সালে পর্তুগালের বিপক্ষে, এরপর ইউরোপীয় প্রতিপক্ষের বিপক্ষে টানা ১১টি ম্যাচে জয়হীন তারা।
নয়াশতাব্দী/এমএস
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ