কাতার বিশ্বকাপ মিশনে মাঠে নেমেছে নেইমারের ব্রাজিল। লুসাইল স্টেডিয়ামে সেলেকাওদের প্রতিপক্ষ সার্বিয়া। বাংলাদেশ সময় রাত ১টায় শুরু হয়েছে দুই দলের ম্যাচ। রিচার্লিশনের জোড়া গোলে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে আছে ব্রাজিল।
প্রথমার্ধে ভক্তদের হতাশই করেছে নেইমাররা। কয়েকটি গোলের সুযোগ পেলেও তা কাজে লাগাতে পারেনি সেলেকাও শিবির। প্রথমার্ধ শেষে স্কোর লাইন তাই গোলশূন্য ড্র।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই আক্রমণে যাওয়া ব্রাজিল সুযোগ নষ্ট করে কয়েকটি গোলের। ৬২ মিনিটে সফল দলটি। সার্বিয়ার জাল কাপিয়ে সেলেকাওদের উল্লাসে মাতান তরুণ রিচার্লিশন। ৭৩ মিনিটে অ্যাক্রোবেটিক শটে আবারও রিচার্লিশনের গোল। ২-০তে লিড নিয়েছে ব্রাজিল।
ব্যর্থ আক্রমণ
বারে লেগে ফিরে এলো ব্রাজিলের সান্দ্রোর শট।
গোল শূন্য প্রথমার্ধ, সার্বিয়ান ডিফেন্সে আটকা ব্রাজিল। নেইমার কিংবা ভিনিসিয়াস ডি বক্সে এসে আটকে যাচ্ছেন। যাচ্ছেন বললে ভুল হবে সার্বিয়ান ডিফেন্ডারদের নিখুঁত ট্যাকেলে ব্রাজিলের আক্রমণ নষ্ট করে দিচ্ছে। প্রথমার্ধ খুব একটা ভালোও খেলেনি ব্রাজিল। বারবার বলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে। প্রথমার্ধে ৪টি আক্রমণ করেছে ব্রাজিল, ভিনিসিয়াস সুযোগ নষ্ট করেছেন। অন্যদিকে সার্বিয়া বারবার উঠে আসলেও আক্রমণ করে মাত্র ১টি। প্রথমার্ধে ৬০ শতাংশ বল ব্রাজিলের পায়ে ছিল।
এবার ভিনিসিয়াস
৪০ মিনিটে আবার ভিনিসিয়াসকে নিখুঁত ট্যাকেলে আটকে দেন সার্বিয়ান ডিফেন্ডার।
সার্বিয়ার ডিফেন্সে আটকে যাচ্ছে ব্রাজিল
৩৩ মিনিটে নেইমারকে রুখে দিলেন সার্বিয়ান ডিফেন্ডার। অল্পের জন্য সুযোগ হারালেন। ২ মিনিট পরেই রাফিনহাও ভুল করেন।
মিস করেন ভিনিসিয়াস
২৮ মিনিটে থিয়াগো সিলভা দারুক একটি পাস দেন ভিনিসিয়াস জুনিয়রকে। বাঁ দিক দিয়ে দ্রুতগতিতে ডুকছিলেন ভিনিসিয়াস। কিন্তু গোলরক্ষক দারুণ ডাইভে রুখে দেন।
নেইমারের দারুণ কর্ণার
ভিনিসিয়াস ডি বক্সে বল কাটাতে গেলে ক্লিয়ার করা সার্বিয়া। কর্নার পায় ব্রাজিল। বাম দিকে কর্নারে নেইমারের দারুণ শট নেব। কোনাকুনি হয়ে জালে ডুকতেছিল কিন্তু সার্বিয়ার গোলরক্ষক লাফিয়ে উঠে বল বাইরে পাঠিয়ে দেন। পরের কর্নারে শট নিলে সহজেই ধরে ফেলেন সার্বিয়ান গোলরক্ষক।
৭ মিনিটেই হলুদ কার্ড
৭ মিনিটে নেইমারকে ফাউল করে কার্ড দেখেন সার্বিয়ার পাভলোভিক।
ব্রাজিল একাদশ
অ্যালিসন; দানিলো, মারকুইনহোস, থিয়াগো সিলভা, অ্যালেক্স সান্দ্রো; কাসেমিরো, লুকাস পাকেটা; রাফিনহা, নেইমার, ভিনিসিয়াস জুনিয়র; রিচার্লিসন।
সার্বিয়া একাদশ
ভি মিলিঙ্কোভিক-সাভিক; ভেলজকোভিচ, মিলেনকোভিক, পাভলোভিক; জিভকোভিচ, লুকিক, গুডেলজ, ম্লাদেনোভিক; ট্যাডিক, এস মিলিঙ্কোভিক-সাভিক; এ মিত্রোভিক।
ব্রাজিলের মিশন হেক্সা
অপেক্ষার প্রহর সব সময়ই ক্লান্তিকর। সবশেষ ২০০২ সালে বিশ্বকাপের শিরোপা জিতেছিল ব্রাজিল। এরপর কেটে গেছে ২০ বছর। সেই শিরোপা আর শোকেসে তুলতে পারেনি তারা। এই সময়ের মধ্যে ব্রাজিল মাত্র একবার সেমিফাইনাল খেলেছিল। তিনবার কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায় নিয়েছিল। সবশেষ আসরে বেলজিয়ামের কাছে হেরে শেষ আট থেকেই বিদায় নিয়েছিল তারা।
প্রতি আসরেই হেক্সা মিশন নিয়ে আসে তারা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত যেতে পারে না। তবে এবার নেইমারের শেষ বিশ্বকাপে তারা শেষ পর্যন্ত যেতে বদ্ধ পরিকর। নেইমার-ভিনিসিউস-রদ্রিগো, রিচার্লিসন, রাফিনহাদের নিয়ে শিরোপা জেতার মতো শক্তিশালী দল নিয়েই কাতারে এসেছেন তিতে। যারা আগের চেয়ে আরও অভিজ্ঞ আরও ধারালো। যা তারা বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব ও অন্যান্য ম্যাচে প্রমাণ করেছে।
২১ থেকে অপরাজিত ব্রাজিল
বিশ্বকাপের ২২ আসরেই খেলছে তারা। তার ওপর লাতিন আমেরিকা অঞ্চলের বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে দোর্দণ্ড প্রতাপ দেখিয়েছে তারা। ১৭ ম্যাচ খেলে একটিতেও হারেনি তারা। ১৪টি জয়, ৩টি ড্র। সর্বোচ্চ ৪৫ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থেকে কাতার বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত করে।
সবশেষ তারা হেরেছিল ২০২১ সালে কোপা আমেরিকার ফাইনালে আর্জেন্টিনার কাছে। এরপর থেকে অপরাজিত আছে সেলেসাওরা। সে কারণে সার্বিয়ার বিপক্ষে নিঃসন্দেহে ফেভারিট ব্রাজিল।
তবে সার্বিয়ার সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স বেশ ভালো। সম্প্রতি তারা নেশন্স লিগে উন্নতি করে ‘লিগ এ’ তে উঠেছে। তাছাড়া বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে তাদের পারফরম্যান্স ছিল ঈর্শনীয়। আট ম্যাচের ছয়টিতে জিতে ও দুটিতে ড্র করে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থেকে কাতার বিশ্বকাপের টিকিট পেয়েছিল তারা। এ যাত্রায় তারা ২-১ গোলে হারিয়েছিল পর্তুগালের মতো দলকেও।
নয়াশতাব্দী/এমএস
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ