একবিংশ শতাব্দীর প্রথম বিশ্বকাপে রোনালদো-রিভালদোদের সেই বিশ্ব জয়ের পর পেরিয়ে গেছে ২০ বছর। কেটে গেছে চারটি আসর। কিন্তু ‘হেক্সা’ জয়ের মিশনে সাফল্য আর মেলেনি। প্রতিবারই তারা নতুন স্বপ্নে বুক বেঁধেছে, প্রতিশ্রুতি দিয়েছে দল; কিন্তু ব্যর্থতার বৃত্ত ভাঙা যায়নি। ২০১৪ সালে দেশের মাটিতে সেমিফাইনালে জার্মানির বিপক্ষে ৭-১ গোলে হারের সেই জ্বালা জুড়ানোর আশায় তারা পা রেখেছিল রাশিয়ায়। বেলজিয়ামের বিপক্ষে হেরে কোয়ার্টার-ফাইনালেই শেষ হয় তাদের পথচলা।
এরপর, গত চার বছরে তিতের হাত ধরে অনেক পরিবর্তন এসেছে স্কোয়াডে। দারুণ সব সম্ভাবনাময় তরুণ খেলোয়াড় দলে জায়গা শক্ত করেছে। আক্রমণভাগে ভিনিসিয়াস-রদ্রিগো-অ্যান্তোনির মতো তরুণদের পাশে জ্বলজ্বল করছে নেইমারের মতো বিশ্ব সেরা তারকা। নেইমারই এখন সেলেসাওদের বিশ্বকাপ জয়ের মিশনে মূল কাণ্ডারি! আরও আছেন দারুণ ছন্দে থাকা রিশার্লিসন ও গাব্রিয়েল জেসুস। রক্ষণে আন্তর্জাতিক ফুটবলের রেকর্ড শিরোপা জয়ী অভিজ্ঞ দানি আলভেসের সঙ্গে অভিজ্ঞ থিয়াগো সিলভা, মার্কুইনহস, এদের মিলিতাও। তাদের পেছনেই ‘চীনের প্রাচীর’ গোলরক্ষক আলিসন। দ্বিতীয় পছন্দের গোলরক্ষক ম্যানচেস্টার সিটির অন্যতম সেরা তারকা এদেরসন।
তারকায় ঠাসা দলটিতে সামান্য একটু ঘাটতি যদি থেকে থাকে, সেটা মাঝমাঠে। অবশ্য সেখানেও আছে কাসেমিরোর মতো একজন। রিয়াল মাদ্রিদের সাবেক এই মিডফিল্ডার যদি মিডফিল্ডের নেতা হয়ে উঠতে পারেন, তাহলে তাকে সঙ্গ দেয়ার সামর্থ্য ভালো করেই আছে ফ্রেদ ও লুকাস পাকেতাদের। আর ডাগআউটে তিতের উপস্থিতি দলটিকে করে তুলেছিল অপ্রতিরোধ্য। রাশিয়ায় ওই ব্যর্থতার পরের বছরই কোপা আমেরিকা জয়ের মধ্য দিয়ে এই দলের ছুটে চলার শুরু। গত বছরের কোপা আমেরিকাও জয়ের পথেই ছিল তারা; হেরে বসে ফাইনালে গিয়ে। ওই এক হারের পর আবার অজেয় হয়ে উঠেছে ব্রাজিল। লাতিন আমেরিকার বিশ্বকাপ বাছাইয়ে অপরাজেয় পথচলায় শীর্ষে থেকে মূল পর্বে জায়গা করে নেয় দলটি।
১৭ ম্যাচ খেলে জেতে ১৪টি, ড্র বাকি তিনটি। এই ম্যাচগুলোয় তারা গোল করে ৪০টি, বিপরীতে হজম করে মোটে ৫টি! এই পরিসংখ্যানেই স্পষ্ট হয়ে ওঠে আক্রমণে নেইমার-ভিনিসিয়াস-রিশার্লিসনদের বিধ্বংসী রূপ, সেই সঙ্গে রক্ষণে আলভেস, সিলভা এবং গোলপোস্টে অ্যালিসনের দেয়াল কতটা মজবুত। নির্ধিদ্বায় তাই বলে দেয়া যায়, শক্তি-সামর্থ্যে এই ব্রাজিলকে পেছনে ফেলার মতো দল এবারের বিশ্বকাপে নেই। এখন তাদের কেবল মাঠে নিজেদের জানান দেয়ার পালা। বিশ্বকাপে ‘জি’ গ্রুপে ব্রাজিলের তিন প্রতিপক্ষ সার্বিয়া, সুইজারল্যান্ড ও ক্যামেরুন। আগামী ২৪ নভেম্বর, বৃহস্পতিবার রাতে সার্বিয়ার বিপক্ষে গ্রুপ পর্বে নিজেদের প্রথম ম্যাচ খেলবে ব্রাজিল।
নয়াশতাব্দী/এমএস
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ