২০১০ সালে তৎকালীন ফিফা সভাপতি সেপ ব্লাটার ২০২২ বিশ্বকাপের আয়োজক হিসেবে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কাতারের নাম ঘোষণা করতে গিয়ে বেশ গর্ববোধ করেই বলেছিলেন, প্রথম কোনো আরব দেশ হিসেবে কাতারের বিশ্বকাপ ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।
দুর্নীতির দায়ে শেষ পর্যন্ত ফিফার সভাপতি পদে সবচেয়ে লম্বা সময় ধরে ক্ষমতা আকড়ে ধরে থাকা ব্লাটার তার পদ হারানোর পাশাপাশি ফুটবল থেকে আজীবন নিষিদ্ধ হয়েছিলেন। সেই দুর্নীতিগ্রস্ত ব্লাটারই কাতার বিশ্বকাপের প্রাক্কালে বলেছেন, ওই সময় আয়োজক হিসেবে কাতারকে বেছে নেওয়া সম্পূর্ণ ভুল সিদ্ধান্ত ছিল।
বিশ্বকাপ ফুটবল কেন বিশ্বের যেকোনো বড় ক্রীড়াযজ্ঞ আয়োজন করতে গেলে বিতর্ক থাকবেই। কাতারও তার ঊর্ধ্বে নয়। তবে বল মাঠে গড়ানোর আগেই কাতারকে ঘিড়ে মাঠের বাইরের সমালোচনার জল ঘোলা বেশ। বিশেষ করে বিশ্বকাপকে সামনে রেখে ভেন্যুগুলোর অবকাঠামোগত উন্নয়নে স্থানীয় আয়োজকদের প্রায় পুরোটাই অভিবাসী শ্রমিদের উপর নির্ভর করছে।
অভিবাসী শ্রমিকদের মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে দাবি করে পশ্চিমা দেশগুলো বলেছে, তাদেরকে নায্য পাওনা দেওয়া হয়নি। পরবর্তীতে অংশগ্রহণকারী ইউরোপীয়ান দেশগুলোও এর সাথে সুর মিলিয়ে কথা বলতে শুরু করে। সব সমালোচনার জবাব হয়তো কখনো কখনো প্রমাণ করা যায়, কিছু আবার যায় না। তবে কাতারের মতো তেল সমৃদ্ধ একটি ধনী দেশের জন্য বিশ্বকাপ আয়োজনে অর্থের কোনো অভাব হয়নি।
২০২২ ফিফা বিশ্বকাপ ইতিহাসে ২২তম বিশ্ব ফুটবলের আসর। ২০ নভেম্বর থেকে ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত কাতারে অনুষ্ঠিত হবে এ বিশ্ব ফুটবলের মহারণ। প্রথমবারের মতো মধ্যপ্রাচ্যের কোন দেশে ও এশিয়ায় দ্বিতীয়বারের মত বিশ্বকাপ আয়োজিত হতে যাচ্ছে। এর আগে ২০০২ সালে দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানে যৌথভাবে বিশ্বকাপ আয়োজিত হয়েছিল।
এবারই শেষবারের মতো ৩২টি দেশের অংশগ্রহণে বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হবে। ২০২৬ সালে যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো ও কানাডায় আয়োজিত টুর্নামেন্টে ৪৮টি দেশ অংশ নিবে।
বিশ্বকাপের স্বত্ব পাওয়ার পর থেকেই পুরো কাতার জুড়ে ৮টি নতুন স্টেডিয়াম নির্মাণ করা হয়। নির্মাণকৃত স্টেডিয়ামগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় লুসাইল আইকনিক স্টেডিয়াম। দোহার ১৫ কিলোমিটার উত্তরে দুই লাখ জনসংখ্যার পরিকল্পিত একটি শহর লুসাইল। সেখানেই গড়ে তোলা হয়েছে ৮০ হাজার ধারণক্ষমতা সম্পন্ন লুসাইল স্টেডিয়াম।
নয়াশতাব্দী/এমএস
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ