ঢাকা, রবিবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৪ পৌষ ১৪৩১, ২৬ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

মেসিকে বিশ্বকাপ নিয়ে ফিরতে বললেন ম্যারাডোনার মেয়ে

প্রকাশনার সময়: ১৮ নভেম্বর ২০২২, ১৬:৩৫

দিয়েগো ম্যারাডোনা। ফুটবলের সবুজ গালিচায় যিনি ছিলেন বাম পায়ের এক নিখুঁত চিত্রকর। আর্জেন্টিনার কাছে যিনি হয়ে উঠেছিলেন ‘ফুটবল ঈশ্বর’। ছিলেন ফুটবল আকাশের উজ্জ্বলতম নক্ষত্র। ১০ নম্বর জার্সি পরে খেলার মাঠে আকর্ষণীয় ফুটবল খেলে ম্যারাডোনা নিজেকে ভীষণ জনপ্রিয় এক ফুটবলার হিসেবে পরিচিত করে তুলেছিলেন। অনেক বিশেষজ্ঞ, ফুটবল সমালোচক, সমর্থক ও খেলোয়াড় তাকে সর্বকালের সেরা ফুটবলার হিসেবে মন্তব্য করেছেন। তিনি বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রণ সংস্থা ফিফার বিংশ শতাব্দীর সেরা খেলোয়াড়ের খেতাব পেয়েছিলেন পেলের সঙ্গে যৌথভাবে।

ম্যারাডোনা শুধু ‘আর্জেন্টিনা’ বা ‘বিশ্বকাপ জয়ী’ ফুটবলার নয়। ম্যারাডোনার আবির্ভাব কোনো দেশ বা সীমানায় আবদ্ধ ছিল না। তিনি ছিলেন মনোমুগ্ধকারী এক বিশ্ব ব্রহ্মচারী। যতদিন ফুটবল খেলা টিকে থাকবে, ততদিন ম্যারাডোনার ক্রীড়ানৈপুণ্য ভবিষ্যৎ ফুটবল খেলোয়াড়দের অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে।

আর্জেন্টিনার হয়ে চারটি বিশ্বকাপে প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন ম্যারাডোনা। ৯১টি আন্তর্জাতিক ম্যাচে গোল করেছেন ৩৪টি। ফুটবল জীবনে তিনি যেমন দাপিয়ে খেলেছেন, তেমনি খেলোয়াড়ি জীবনের ইতি টানার ১১ বছর পর (২০০৮ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত) আর্জেন্টিনার জাতীয় দলের কোচিংও করেছিলেন।

১৯৮৬ সালে আর্জেন্টিনাকে বিশ্বকাপ জেতান ম্যারাডোনা। সেবার তিনি গোল্ডেন বলও জিতেছিলেন। ১৯৮৬ বিশ্বকাপে পায়ে আঘাতের পর আঘাত করেও প্রতিপক্ষ আটকাতে পারেনি তাকে। অপ্রতিরোধ্য গতিতে ছুটে গিয়ে ছয়জন ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে গোল করার অসাধারণ ক্ষমতা দেখিয়েছিলেন এই ফুটবল জাদুকর। সেসময় ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তার প্রথম গোলটি ছিল বিতর্কিত। দেখা গিয়েছিল, তিনি হাত দিয়ে বলটি জালে জড়িয়েছিলেন। সেই গোলটি সম্পর্কে ম্যারাডোনা বলেছিলেন- ‘ওটা আমার নয়, ঈশ্বরের হাত ছিল।’

১৯৯০ বিশ্বকাপেও আর্জেন্টিনাকে ফাইনালে তুলেছিলেন তিনি। কিন্তু সেরা হতে পারেননি। ১৯৯৭ সালে ফুটবলকে বিদায় জানানোর পর তিনি কোচিং শুরু করেছিলেন। ম্যারাডোনা খেলেছেন সব নামি-দামি ক্লাবে। স্প্যানিস জায়ান্ট বার্সিলোনা, ন্যাপোলি ও সেভিয়া ছাড়াও তিনি বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ক্লাবের হয়ে খেলেছেন। ১৯৯৪ বিশ্বকাপে ফুটবল থেকে যখন ষড়যন্ত্র করে ম্যারাডোনাকে সরিয়ে দেয়া হয়েছিল, তখন ম্যারাডোনার সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশের মানুষও কেঁদেছিল। ক্ষোভে-দুঃখে রাস্তায় বেরিয়ে পড়েছিল ম্যারাডোনা সমর্থক অসংখ্য মানুষ।

পৃথিবীব্যাপি অসংখ্য ভক্ত-সমর্থককে কাঁদিয়ে ম্যারাডোনা পৃথিবী ছেড়ে চলে গিয়েছেন দেড় বছর হয়ে গেল। তাকে ছাড়া প্রথম বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে কাতারে। আর এই বিশ্বকাপে অংশ নিচ্ছেন ম্যারাডোনার পরে সবথেকে জনপ্রিয় আর্জেন্টাইন ফুটবলার লিওনেল মেসি। মেসির নেতৃত্বেই মরুর দেশ কাতারে বিশ্ব ফুটবলের মহারণে সামিল হচ্ছে আর্জেন্টিনা। আর তাই, লিওনেল মেসির কাছে বিশেষ আবেদন রাখলেন ম্যারাডোনা কন্যা দালমা।

একটি ভিডিও বার্তায় তিনি জানিয়েছেন, মেসিকে বলছি - আমার বাবা তোমারদের সঙ্গে রয়েছেন সর্বক্ষণ। তিনি আর্জেন্টিনার দ্বাদশ ব্যক্তি। আমার বাবার জন্যই চেষ্টা কর বিশ্বকাপ জিতে দেশে ফেরার। বাবার আশীর্বাদ তোমাদের সঙ্গে রয়েছে। এদিকে আর্জেন্টিনা দল আগেই জানিয়েছিল কিংবদন্তি ম্যারাডোনার কথা মাথায় রেখেই বিশ্বকাপে নামবে তারা।

নিজের ঘোষণা অনুযায়ী কাতারেই শেষবারের মতো ফুটবল বিশ্বকাপে নামছেন দলটির সেরা তারকা লিওনেল মেসি। বিশ্বকাপ জিতে তিনি তার বিদায় স্মরণীয় করে রাখতে চাইছেন। সেই সঙ্গে মেসির সামনে রয়েছে আর্জেন্টাইন ফুটবল ঈশ্বর দিয়াগো ম্যারাডোনাকে টপকে যাওয়ার সুযোগ।

নয়াশতাব্দী/এমএস

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ