ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিশ্বকাপের পর্দা নামছে আজ : পুনরাবৃত্তি না ইতিহাস

প্রকাশনার সময়: ১৩ নভেম্বর ২০২২, ০৯:১৪ | আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০২২, ১৩:০০

বিশ্বকাপে পাকিস্তানের এবারের যাত্রার সঙ্গে বেশ মিল রয়েছে ১৯৯২ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপের। দুই আসরেই শুরুতে বেশ ধুঁকেছে পাকিস্তান। ৩০ বছর আগের বিশ্বকাপে রাউন্ড রবিন লিগে পাঁচ ম্যাচে স্রেফ একটি জিতেছিল তারা। সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে শেষে শেষ চারে জায়গা করে নিয়েছিল দলটি। সেখানে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে ফাইনালে ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হয় ইমরান খানের দল।

এবার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের পর জিম্বাবুয়ের কাছেও হেরেছিল পাকিস্তান। সুপার টুয়েলভ থেকে তাদের বাদপড়া স্রেফ সময়ের ব্যাপার মনে হচ্ছিল। পরের তিন ম্যাচ জেতে তারা, অন্য ম্যাচের ফলও আসে তাদের পক্ষে। যার সৌজন্যে বাবর-রিজওয়ানরা উঠে যান সেমিফাইনালে। নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে এবারও ফাইনালে তাদের প্রতিপক্ষ ইংল্যান্ড। পাকিস্তান সেই ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটাতে চায়। আর ইংল্যান্ড চায় সেই ইতিহাস পাল্টে নতুন ইতিহাস গড়ার। ইংলিশরা চায় ফাইনালের হারের মধুর প্রতিশোধ নিতে। মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে আজ ফাইনালে খেলবে পাকিস্তান ও ইংল্যান্ড। বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টায় মাঠে গড়াবে দুই দলের শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচ। দ্বিতীয়বারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শিরোপা জয়ের লক্ষ্য নিয়ে ঐতিহাসিক এমসিজিতে মুখোমুখি হচ্ছে পাকিস্তান ও ইংল্যান্ড। খাদের কিনারা থেকে ওঠে এসে শিরোপা জয়ের স্বপ্নে বিভোর পাকিস্তান। অন্য দিকে টুর্নামেন্টে দারুণ খেলার ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখে ট্রফি ঘরে তুলতে প্রত্যয়ী ইংলিশরা।

অনেক কিছু অর্জনের লক্ষ্য নিয়ে বিশ্বকাপ ফাইনাল মঞ্চে পাকিস্তান ও ইংল্যান্ড। ২০১৯ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপ জয়ের পর নিজেদের শোকেসে সংক্ষিপ্ত ভার্সনের ট্রফিটি যোগ করতে মরিয়া ইংল্যান্ড। অন্য দিকে পাকিস্তান প্রমাণ করতে চায়-গর্ত থেকে উঠে শিরোপাও জয় করা যায়। ওয়েস্ট ইন্ডিজের পর প্রথম দল হিসেবে দুইবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ের জন্য মাঠে নামবে পাকিস্তান ও ইংল্যান্ড। এর আগে ২০০৯ সালে পাকিস্তান ও ২০১০ ট্রফি জিতেছিল ইংল্যান্ড।

মজার ব্যাপার হলো ২০১০ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর এবারই প্রথম দেখা হচ্ছে দল দুটির। ২০০৯ এবং ২০১০ আসরে দুইবার একে অপরের বিপক্ষে খেলেছিল তারা। দুই ম্যাচেই জিতেছিল ইংল্যান্ড। টি-টোয়েন্টিতে দুই দলের মধ্যকার লড়াইয়ে এগিয়ে ইংল্যান্ড। ২৮টি ম্যাচের মধ্যে ১৮ বার জিতেছে ইংল্যান্ড। ৯টি জিতেছে পাকিস্তান। অন্য ম্যাচটি হয়েছে পরিত্যক্ত।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে নিজ মাঠে ইংল্যান্ডের কাছে সাত ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে ৪-৩ ব্যবধানে হেরেছে পাকিস্তান। তবে পরিসংখ্যান, রেকর্ড এবং পারফরম্যান্স ইংল্যান্ডের পক্ষে থাকা মানে এই নয়, ফাইনালে পাকিস্তান কেবল চেয়ে চেয়ে দেখার জন্য মাঠে নামবে। ইংল্যান্ড দলের অধিনায়কত্ব পাওয়ার প্রথম বছরই একটি বড় ট্রফি জিতে ইতিহাসের পাতায় নাম লেখানোর দ্বারপ্রান্তে জস বাটলার।

মেলবোর্নের ফাইনালের সংবাদ সম্মেলনে বাটলার বলেন, ‘আমি আগের মতো আবারও বলছি, সত্যিই আমরা একটি কঠিন চ্যালেঞ্জ আশা করছি। অতি সম্প্রতি তাদের সঙ্গে আমরা বেশ কয়েকবার মুখোমুখি হয়েছি এবং তাদের বিপক্ষে আমরা দুর্দান্ত কিছু ম্যাচ খেলেছি এবং দুর্দান্ত স্পিরিট ছিল। আমি নিশ্চিত আজ এর ব্যতিক্রম হবে না।’

ইংল্যান্ডের নিজস্ব কিছু দুঃখও আছে। তবে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে সেমিফাইনালে ভারতের বিপক্ষে জয়সহ অন্যান্য বড় দলের বিপক্ষে ভালো খেলেছে ইংলিশরা। কিন্তু গ্রুপ পর্বে আয়ারল্যান্ডের কাছে পরাজিত হওয়াটা এই বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের একটি বড় দাগ। বাটলার বলেন, ‘টুর্নামেন্টজুড়ে দল হিসাবে অবশ্যই আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচটি আমাদের জন্য একটি বড় হতাশার। অবশ্য এটি অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে। আমি মনে করি, ম্যাচটি থেকে আমরা অনেক কিছুই শিখেছি এবং সব কিছু পেছনে ফেলেই বিশ্বকাপ ফাইনালে উঠেছি।’

পাকিস্তানের এবারের যাত্রা অনেকটাই ১৯৯২ ওয়ানডে বিশ্বকাপের মতো। টুর্নামেন্টের শুরুতে দুই ম্যাচ হেরে চাপে পড়েও অসাধারণ পারফরম্যান্সে দারুণভাবে লড়াইয়ে ফিরেছে তারা। যেমনটা ইমরান খানের নেতৃত্বে ৯২ বিশ্বকাপেও হয়েছিল। ৯২ বিশ্বকাপের মতো সেমিফাইনালে হট ফেভারিট নিউজিল্যান্ডকে হারিয়েছে এবং সেই বিশ্বকাপের মতো এবারের ফাইনালে ইংল্যান্ডকেই প্রতিপক্ষ হিসেবে পেয়েছে পাকিস্তান। এখন দেখার বিষয় ৯২ বিশ্বকাপের মতো এবারও শিরোপা জিততে পারে কি-না।

অনেকটা হোম কন্ডিশনের মতো মেলবোর্নে দর্শকদের বড় সাপোর্ট পাবে বাবর আজমের দল। বাবর বলেন, ‘টুর্নামেন্টে আমরা নিজেদের প্রথম দুটি ম্যাচ হেরেছি এবং এজন্য আমাদের মূল্য দিতে হয়েছিল। কিন্তু আমাদের দল শেষ চার ম্যাচে লড়াই করে ফিরে এসেছে এবং তারা খুব ভালো পারফর্ম করেছে। আমরা শেষ চার ম্যাচে সত্যিকার অর্থেই ভালো ক্রিকেট খেলছি। হ্যাঁ, ফাইনালেও ভালো খেলার ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখার চেষ্টা করব আমরা।’

নয়া শতাব্দী/আরআর

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ