২০২২ সালের বিশ্বকাপ ফুটবল উন্মাদনা শুরু হচ্ছে আগামী ২০ নভেম্বর থেকে। তবে ফুটবলপ্রেমীদের মাঝে সরব প্রশ্ন কে জিতবে এবারের বিশ্বকাপ? কারো কাছে পছন্দের প্রিয় দল আর্জেন্টিনাই সামনে আসছে।
এর পেছনে কারণও অবশ্য রয়েছে বেশ কয়েকবছর ধরেই দারুণ ছন্দে আছে দলটি। মেসিদের সাফল্যের তালিকায় আছে গত বছর ব্রাজিলকে হারিয়ে কোপা আমেরিকার শিরোপা। এরপর তারা শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট পড়েছে ইউরো চ্যাম্পিয়ন হয়েও। তাই এখন একবাক্যে বলা যায় এবারের কাতার বিশ্বকাপে শেষ হাসি হাসবে ম্যারাডোনার উত্তরসুরীরা।
এর বাইরেও আরো যেসব কারণে এবারের কাতার বিশ্বকাপ জিততে পারে আর্জেন্টিনা সেসব একপলক মিলিয়ে নিন।
সবার আগে মেসি
যারা ফুটবলকে ভালোবাসেন তাদের কাছে যাদুকরী এক ফুটবল তারকার নাম লিউনেল মেসি। যারা পায়ের ছন্দের যাদুতে মুগ্ধ ফুটবলপ্রেমীরা। তাই ভক্তদের জন্য এবার বিশ্বকাপের শিরোপা দিতে প্রস্তুন আছেন মেসি। তবে দলে যে এখন আর মেসি নির্ভর নয় সেকথা এখন আর নতুন করে বলতে হবে না। মাঠের খেলায় মেসির সতীর্থরা এখন আরো ধারালো। একসময়ের মেসি নির্ভর দলটা এখন দারুণ পরিপূর্ণ। এ দলে এখন আছেন লাওতারো মার্তিনেজ, আনহেল দি মারিয়া, নিকোলাস গঞ্জালেস, আলেহান্দ্রো গোমেজ। তাই নিজেদের দিনে তারা ছন্দে এলে এবারের শিরোপার রূপকথা লেখা হবে আর্জেন্টিনার নামেই।
দলে আছে ভ্রাতৃত্ববোধের জয়গান
আর্জেন্টিনা দল এখন ভ্রাতৃত্ববোধের জোয়ারে ভাসছে। এ দৃশ্য ফুটে উঠেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও। দলের সদস্যরা অনুশীলনের ছবি এই মাধ্যমে। যেখানে সবাই এক। যেনো একতার বন্ধন আর ভ্রাতৃত্বের জয়গান। সেই জয়গান গেয়ে থাকেন রদ্রিগো দি পল, লিয়ান্দ্রো পারেদেস, পাওলো দিবালা, আনহেল দি মারিয়া, ক্রিস্টিয়ান রোমেরো, এমিলিয়ানো
রক্ষণভাগ
রক্ষণভাগে নেই কোনো সমস্যা। দলটির রক্ষণভাগে এখন আর কার্যকর খেলোয়াড়ের অভাব নেই। নিকোলাস ওতামেন্দির পাশে ক্রিস্টিয়ান রোমেরো। রাইটব্যাক হিসেবে হয় নাহুয়েল মলিনা, নয় গঞ্জালো মন্তিয়েল। ওদিকে লেফটব্যাকে মার্কোস আকুনিয়া ও নিকোলাস তাগলিয়াফিকোর মধ্যে যেকোনো একজন। লিসান্দ্রো মার্তিনেজ, হুয়ান ফয়থ, জার্মান পেৎসেয়ার মতো খেলোয়াড়েরা এখনও মূল একাদশের অংশ না হলেও যখনই সুযোগ পান, নিজেদের জাত চিনিয়ে দেন।
চারজনের রক্ষণ—ছকেই নিয়মিত খেলছে আর্জেন্টিনা। আর এ খেলোয়াড়দের কখন কীভাবে ব্যবহার করতে হবে, সেটা কোচ লিওনেল স্কালোনি বেশ ভালোভাবে জানেন। প্রতিপক্ষ প্রেস করলেও পারস্পরিক বোঝাপড়া ভালো থাকার কারণে আর্জেন্টিনা রক্ষণ থেকে দ্রুত ওয়ান-টু করে বল বের করে আক্রমণে জোগান দিতে পারছে।
কোচের ওপর আস্থা
দলটির কোচ লিওনেল স্কালোনির ওপর আস্থা রাখার ফল পেতে শুরু করেছে আর্জেন্টিনা। দায়িত্ব পাওয়ার পর প্রথম থেকে একাধিক খেলোয়াড় অদল-বদল করে নিজের পছন্দমতো স্কোয়াড গঠন করার সুযোগ পেয়েছেন তিনি। এই দলের প্রত্যেকের শক্তি-দুর্বলতা হাতের তালুর মতো চেনা তার। ৪-৩-৩ ছকের সর্বোচ্চ প্রয়োগ ঘটাচ্ছেন এই কোচ, খুব বেশি পরীক্ষা–নিরীক্ষা করছেন না, খেলছেন ফলাফলনির্ভর ফুটবল, যা দিন শেষে ইতিবাচক ভূমিকাই রাখছে।
এমিলিয়ানো মার্তিনেজ
কোচ স্কালোনির মূল পছন্দের গোলকিপার এখন এমিলিয়ানো মার্তিনেজ। আর একজন বিশ্বমানের গোলকিপার হওয়ার জন্য যা যা গুণাবলি থাকার দরকার, সবকিছুই এই মার্তিনেজের মধ্যে আছে যে সেটা গত কোপা আমেরিকার সেমিফাইনাল ও ফাইনালেই প্রমাণ করেছেন তিনি।
শঙ্কার নাম চোট
তবে এসবের বাইরেও আছে আছে আরেকটি কারণ। সেটা অবশ্য শঙ্কার। এই বিশ্বকাপের আগে একের পর এক চোটাক্রান্ত হচ্ছেন তারকা ফুটবলাররা। আর্জেন্টিনাতেও তা আঘাত হেনেছে একাধিক খেলোয়াড়ের মাঝে। জিওভানি লো সেলসো এবং পাওলো দিবালার চোটে ইতোমধ্যে অস্বস্তি বেড়েছে আর্জেন্টাইন দুর্গে। তবে সব শঙ্কা উড়িয়ে সেরা একাদশকে নিয়ে খেলতে নেমে আর্জেন্টিনা জিতবে বিশ্বকাপ, এমনটাই প্রত্যাশা দলটির সমর্থকদের।
নয়াশতাব্দী/জেডএম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ