ঘরোয়া ফুটবলে রেফারিং সংকট যেন কাটছেই না। জামাল ভূঁইয়া ইস্যুর পর এবার নতুন দাবি-দাওয়া নিয়ে একাট্টা হয়েছেন রেফারিরা। সেই দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত মাঠে বাঁশি বাজাবেন না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কয়েকজন রেফারি। ফলে পরশু দিন শনিবার বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের সপ্তম রাউন্ড অনেকটাই হুমকির মুখে পড়ে গেলো!
বৃহস্পতিবার (৩ মার্চ) সন্ধ্যায় এক জরুরি সভায় বসেন প্রিমিয়ার লিগ ও চ্যাম্পিয়নশিপ লিগ পরিচালনা করা রেফারি-সহকারি রেফারিরা। ২০ জনের মতো উপস্থিতিতে সর্বসম্মতিক্রমে তারা কয়েকটি দাবি উথাপন করেন। প্রথম দাবি, বাফুফের হেড অফ রেফারিজ আজাদ রহমানের পদত্যাগ। সাবেক এই ফিফা রেফারির পদত্যাগ দাবি চাওয়ার পেছনে রেফারিদের যুক্তি, ‘সম্প্রতি তিনি গণমাধ্যমে রেফারিদের নিয়ে যে মন্তব্য করেছেন তা আমাদের জন্য মানহানিকর এবং রেফারিদের শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়েও তিনি মন্তব্য করেছেন।’ একটি মন্তব্যের জন্যেই পদত্যাগ দাবি চাওয়া কতটুকু যৌক্তিক সেই প্রশ্ন থেকেই যায়।
আজকের জরুরি সভাটি ছিল মূলত আজাদ রহমানকে ঘিরেই। তবে বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন রেফারিং নিয়ে এক সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। তাই আজাদ রহমানের সঙ্গে সালাউদ্দিনের মন্তব্য নিয়েও রেফারিরা আলোচনা করেছেন।
কাজী সালাউদ্দিন কিছু দিন আগে রেফারির সিদ্ধান্ত এক দলের বিপক্ষে ও আরেক দলের পক্ষে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছিলেন। এ নিয়ে রেফারিদের চাপা ক্ষোভ ছিল। সেই ক্ষোভ বাড়তি মাত্রা যোগ হয়েছে আজ সভাপতির করা আরেক মন্তব্যে। সেখানে সভাপতি বলেছেন, তার আমলে রেফারিদের সম্মানী ৩০০ গুণ বাড়ানো হয়েছে এবং কোনো বকেয়া নেই। জামাল ভূঁইয়ার মন্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ দাবি করেছিলেন রেফারিরা। আজ সভায় থাকা এক রেফারির মাধ্যমে জানা গেছে, বাফুফে সভাপতি যেহেতু রেফারিদেরও অভিভাবক তাই তাকে ক্ষমা বা দুঃখ প্রকাশের পরিবর্তে তার মন্তব্যকে বাস্তবায়নের দাবি তোলা হয়েছে, তার মন্তব্য অনুযায়ী সম্মানী ৩০০ গুণ বাড়ানো এবং সকল বকেয়া পরিশোধ হোক।
এই দু’টি মূল দাবির পাশাপাশি আরেকটি দাবি করেছেন রেফারিরা। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ ও চ্যাম্পিয়নশিপ লিগে চারজন ব্যক্তির নাম উল্লেখ করেছেন। তাদেরকে ম্যাচ কমিশনারের দায়িত্ব পালন থেকে বিরত রাখার অনুরোধ জানিয়েছেন। এই দাবিটি অবশ্য খুব বেশি জোরালো নয়।
রেফারিরা এই দাবিগুলো ও তাদের অবস্থান বাফুফের রেফারিজ কমিটির ডেপুটি চেয়ারম্যান ইব্রাহিম নেছারকে জানিয়েছেন বলে জানা গেছে। ইব্রাহিম নেছার রেফারিদের এই দাবির বিষয়টি বাফুফের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করবেন। এরপর বাফুফে কোন পথে এগোয় সেটি দেখার বিষয়। সাইফের ম্যাচকে ঘিরে বিদ্রোহ করা ম্যাচে বিকল্প রেফারি দিয়েছিল রেফারিজ বিভাগ। এখন এই নতুন বিদ্রোহে বাফুফে অন্য রেফারি খুঁজবে নাকি এই বিদ্রোহের মধ্যে ভাঙন ধরাতে পারবে বাফুফে সেটাই দেখার বিষয়। এদিকে জামাল ভূঁইয়া দুঃখ প্রকাশ করায় রেফারিরা এই বিষয় সমাপ্তি টেনেছেন।
নয়া শতাব্দী/জিএস
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ