ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফাইনালেও নারাইনের রেকর্ড  

প্রকাশনার সময়: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০৬:২১

দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে সুনিল নারাইনের ব্যাটিং তাণ্ডবের রেশ মুছে যায়নি এখনো। একদিন পর আরও একবার উত্তাল হয়ে উঠল তার ব্যাট। বিধ্বংসী ফিফটিতে বিপিএল ফাইনালের শুরুটা মাতালেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটার।

বিপিএল ফাইনালে গতকাল ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে পাওয়ার প্লেতে ঝড় তুলে ২১ বলে ফিফটি করেন নারাইন। গত বুধবার চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে ১৩ বলে ফিফটি করে তিনি গড়েছিলেন বিপিএলে দ্রুততম ফিফটির রেকর্ড। এবার বিপিএলের ফাইনালে নারাইন গড়লেন দ্রুততম ফিফটির রেকর্ড। সেই ম্যাচে যেখানে শেষ করেছিলেন, ফাইনালে যেন সেখান থেকেই শুরু করেন নারাইন। মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামে কুমিল্লা। প্রথম ওভার থেকেই শুরু হয় নারাইনের ছুটে চলা। দুই ছক্কা ও এক চারে বরিশালের নতুন বলের ট্রাম্প কার্ড মুজিব উর রহমানের প্রথম ওভার থেকে নেন ১৮ রান। পরের ওভারে বরিশাল অধিনায়ক সাকিব আর হাসান আক্রমণে আনেন শফিকুল ইসলামের বাঁহাতি পেস। কিন্তু চিত্র সেই একই।

আবারও নারাইনের দুই ছক্কা, এক চারে ওভার থেকে ১৮ রান। এপর সাকিব ও ডোয়াইন ব্রাভোর ওভার থেকে রান একটু কম আসে। ব্রাভোর ফুল টসে অবশ্য একটি চার পেয়ে যান নারাইন। পরের ওভারে নারাইনের রুদ্ররূপের সামনে পার পাননি সাকিবও। টানা দুই বলে বাউন্ডারির পর আরেক ডেলিভারিতে তিন রান নিয়ে নারাইন পা রাখেন ফিফটিতে। পরের ওভারে মেহেদি হাসান রানার লেংথ বল উড়িয়ে মারেন তিনি লং অফের ওপর দিয়ে। এরপরই শেষ নারাইনের রোমাঞ্চকর যাত্রা।

রানার স্লোয়ার ডেলিভারি আকাশে উঠিয়ে ধরা পড়েন লং অন সীমানায় নাজমুল হোসেন শান্তর হাতে। ৫টি করে চার ও ছক্কার ইনিংস থামে ২৩ বলে ৫৭ রানে। এবার আসা যাক দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারের কথায়। ১৬ বলের ইনিংস, তাতে স্রেফ একটি রান এসেছে দৌড়ে। ওই বলটিতে বাউন্ডারি হলেই ছোঁয়া হয়ে যেত বিশ্বরেকর্ড। অল্পের জন্য তা পারলেন না সুনিল নারাইন।

তবে যা করলেন, রেকর্ড বইয়ে ঝড় উঠে গেল তাতেও। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটার বিপিএলকে উপহার দিলেন দ্রুততম ফিফটি। এবারের বিপিএলে নারাইন প্রথমবার ইনিংস উদ্বোধন করলেন ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে। মিরপুরে গতকাল বুধবার দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বোলিং গুঁড়িয়ে ফিফটি করলেন মাত্র ১৩ বলে। বিপিএলের সব আসর মিলিয়ে সবচেয়ে কম বলে ফিফটির কীর্তি এটিই। আগের রেকর্ড ছিল আহমেদ শেহজাদের। ২০১২ বিপিএলে বরিশাল বার্নার্সের হয়ে ১৬ বলে ফিফটি করেছিলেন পাকিস্তানি এই ওপেনার। দুরন্ত রাজশাহীর বিপক্ষে সেদিন ৪০ বলে সেঞ্চুরি করেছিলেন শেহজাদ, বিপিএলে যা দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড এখনও।

নারাইন একটুর জন্য ছুঁতে পারেননি ২০ ওভারের ক্রিকেটে দ্রুততম ফিফটির বিশ্বরেকর্ড। ১২ বলে পঞ্চাশ ছুঁয়ে বিশ্বরেকর্ডটি যৌথবাবে যুবরাজ সিং, ক্রিস গেইল ও হজরতউল্লাহ জাজাইয়ের। যুবরাজ করেছিলেন ২০০৭ বিশ্বকাপে, যেদিন স্টুয়ার্ট ব্রডের ওভারে মেরেছিলেন ছয় ছক্কা। গেইলের কীর্তি ২০১৬ বিগ ব্যাশে, জাজাইয়ের ইনিংসটি ২০১৮ সালে আফগানিস্তানের ঘরোয়া টি-টোয়েন্টিতে। নারাইনের মতো ১৩ বলে ফিফটি আছে মার্কাস ট্রেসকোথিকের। ২০১০ সালে ইংল্যান্ডের টি-টোয়েন্টি ব্লাস্টে ইনিংসটি খেলেছিলেন সাবেক ইংলিশ ওপেনার।

নারাইনের নিজের আগের দ্রুততম ফিফটি ছিল ১৫ বলে, কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে ২০১৭ আইপিএলে। চট্টগ্রামের বিপক্ষে এ দিন ১৪৯ রান তাড়ায় প্রথম বলে লিটন দাস আউট হলেও নারাইনের তা্লব শুরু ওই ওভার থেকেই। শরিফুল ইসলামের ওভারের শেষ তিন বলে মারেন এক ছক্কা, দুই চার। পরের ওভারে মেহেদী হাসান মিরাজকে মারেন তিন ছক্কা ও এক চার। এরপর আফিফ হোসেনকেও যখন মারলেন ছক্কা ও চার, তার রান তখন ১১ বলে ৪৬। দ্রুততম ফিফটির বিশ্বরেকর্ড ছোঁয়া তখন স্রেফ একটি বাউন্ডারির দূরত্ব। নারাইন চেষ্টাও করেন। তবে টাইমিং ঠিকমতো হয়নি। লং অফে পাঠিয়ে নিতে পারেন কেবল এক রান।

পরের ওভারেই মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরির বল ছক্কায় উড়িয়ে পা রাখেন পঞ্চাশে। ওই ওভারে আরেকটি চার মেরে শেষ পর্যন্ত আউট হয়ে যান ১৬ বলে ৫৭ রান করে। নারাইনের টর্নেডো ব্যাটিংয়ে ৬ ওভারে ৮৪ রান তোলে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স, বিপিএলে রেকর্ড এটিও। আগের রেকর্ড ছিল ২০১৯ সালে খুলনা টাইগার্সের ৮৩।

নয়া শতাব্দী/এসএম

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ