দুই ম্যাচে দুই হার। চলতি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আয়োজক ভারত দাঁড়িয়ে আছে খাঁদের কিনারায়। আরেকটা হারই যথেষ্ট সুপার টুয়েলভ থেকে তাদের বিদায়ের জন্য। ওদিকে, হাতে থাকা তিন ম্যাচ জিতলেও আবার হবে না। সেমিফাইনালে উঠতে গেলে, বিরাট কোহলির দলকে চেয়ে থাকতে হবে নিউজিল্যান্ড-আফগানিস্তানের দিকেও।
তবে আগে তো নিজেদের কাজ সেরে রাখা চাই। সেই লক্ষ্যে আজ আফগানিস্তানের বিপক্ষে মাঠে নামছে ভারত। রাত ৮টায় আবুধাবির শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামে বাঁচা-মরার ম্যাচে রশিদ-নবিদের বিপক্ষে লড়বেন কোহলি-রোহিতরা।
ভারত জয়হীন থাকলেও, আফগানিস্তান প্রথম তিন ম্যাচের মধ্যে জিতেছে দুটিতে। হার কেবল পাকিস্তানের সঙ্গে। সেও হাতের মুঠোয় থেকে ফসকে গেছে আর কী! ভারতকেও আজ তাই কঠিন চ্যালেঞ্জ জানাতে পারে আফগানরা। বিশেষ করে, দলটির স্পিন বিভাগের সামনে ভারতের ছন্দহীন ব্যাটিং লাইনআপ টিকতে পারে কি-না, সেটাই এখন বড় প্রশ্ন।
রশিদ খান-মুজিব উর রহমানরা হয়ে উঠেছেন প্রতিপক্ষের জন্য ত্রাস। পাকিস্তানের ব্যাটাররা পর্যন্ত এই দুই স্পিনারের সামনে রান তুলতে খাবি খেয়েছেন। কোহলিদেরও আজ তাই বড় পরীক্ষা দিতে হবে। তবে এই পরীক্ষায় যদি তারা ফেল করেন, তবে বিশ্বকাপ থেকে ভারতের ছিটকে যাওয়া অলৌকিকভাবেও ঠেকানো সম্ভব হবে না!
আফগানিস্তানের ব্যাটিং নিয়েও তো বাড়তি ভাবনায় থাকার কথা ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্টের। চলতি বিশ্বকাপে দুই ম্যাচে প্রতিপক্ষের মাত্র দুটি উইকেট তুলে নিতে পেরেছেন ভারতীয় বোলাররা। তাদের চিন্তার কারণ, জাজাই-শাহজাদ-গুরবাজরা। কেননা নিজেদের দিনে এই তিন ব্যাটাররের যেকোনো একজনই যথেষ্ট প্রতিপক্ষের বোলিং লাইনআপ উড়িয়ে দেয়ার জন্য।
তবে ব্যাটিং-বোলিং দূরে রেখে ভাগ্যকেও এবার পাশে পেতে হবে ভারতকে। দুবাইয়ে দুটি ম্যাচেই আগে ব্যাটিং করতে হয়েছে ভারতকে। পরে বল করায় ভারতীয় বোলাররা শিশির সমস্যায় বেশ ভুগেছেন। এবারের বিশ্বকাপে আবুধাবিতে হওয়া ৮ ম্যাচের মধ্যে ৬টিতেই পরে ব্যাটিং করা দল জিতেছে। এসব চিন্তা-ভাবনা মাথায় রেখে, আজ আফগানদের বিপক্ষে টস জিতে আগে বোলিংটাই সেরে নিতে চাইবেন কোহলি।
ব্যাটারদের রান না পাওয়া, বোলাররা ব্রেক-থ্রু দিতে ব্যর্থ হলেও, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে খেলা একাদশ নিয়েই আজ মাঠে নামার কথা আছে ভারতের। তবে রোহিত শর্মাকে নিয়ে আর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে না ভারত। তাকে দিয়েই ইনিংস উদ্বোধন করানো হবে। ইশান কিশান সম্ভবত তার ওপেনিং সঙ্গী হতে যাচ্ছেন। সেক্ষেত্রে কেএল রাহুল নেমে যাবেন চারে।
ওদিকে, বিশ্বকাপের তৃতীয় ম্যাচ শেষে অবসরের ডাক দেয়া আসগর আফগানের জায়গা নিতে পারেন হাসমতুল্লাহ শহিদি কিংবা উসমান গনির যেকোনো একজন। ইনজুরির কারণে নামিবিয়ার বিপক্ষে শেষ ম্যাচ খেলতে না পারা মুজিবের একাদশে ফেরার নিশ্চয়তাও দিতে পারেনি আফগান টিম ম্যানেজমেন্ট।
এই ফরম্যাটে আগে মাত্র দুবার দেখা হয়েছে ভারত-আফগানিস্তানের। প্রতিবারই জয়ের হাসি নিয়ে মাঠ ছেড়েছিল ভারত। তবে এবারের প্রেক্ষাপট সম্পূর্ণ ভিন্ন। ভারতের আত্মবিশ্বাস তলানিতে নেমে গেছে সবশেষ খেলা চার টি-টোয়েন্টিতে হেরে। আফগানরা ভারতের সেই আত্মবিশ্বাসের অভাবটাকেই কাজে লাগিয়ে চাইবে প্রথম জয় তুলে নিতে।
পিচ রিপোর্ট: আবুধাবির উইকেট নিখাদ ব্যাটিং বান্ধব নয়। বিশেষ করে, প্রথমে ব্যাট করা দল ভোগে রান তুলতে। লক্ষ্য তাড়ায় নামা দলের জন্য ব্যাটিং করা অবশ্য তুলনামূলক সহজ হয় এখানে। পরে ব্যাট করা দলের সফলতার হারও (৭৮ শতাংশ) বলছে সেই কথা।
নয়া শতাব্দী/এসএম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ