বাংলাদেশ ৩.৩ ওভারে ১৯/২ (লিটন ২, সৌম্য ০)
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৩৬৭ ম্যাচে কখনো ওপেনিং করা হয়নি সাকিব আল হাসানের। সবধরনের ক্রিকেটে ৬৪ ইনিংসে তিনে ব্যাটিং করেছেন। চারে ব্যাটিং করেছেন ৭১ ইনিংসে। পাঁচে করেছেন ১৮৯ ইনিংসে। তবে আজ শুক্রবার টাইগার দূর্গ রক্ষায় ওপেনিংয়ে দেখা গেছে সাকিবকে। নাইম ইসলামের সঙ্গে ওপেনিংয়ে নেমে তেমন একটা সুবিধা করতে পারেননি টাইগার অলরাউন্ডার। ফিরেছেন ১২ বলে ৯ রান করে। ইনিংসে ১টি চারের দেখা পেয়েছেন তিনি। সাকিব ফেরার পর লম্বা হয়নি অন্য ওপেনার নাইমের স্কোরকার্ড। হোল্ডারের বলে বোল্ড হয়ে ১৭ রানে থামে তার ইনিংস।
ওপেনিংয়ে সাকিব-নাইম
সৌম্য-লিটন, লিটন-নাইম; ওপেনিংয়ে কত রংবদল। তবুও স্বস্তি ফিরেনি, আসেনি কাঙ্ক্ষিত পাটর্নারশীপ। তাই আজ সুপার টুয়েলভে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে বাঁচা-মরা লড়াইয়ে ওপেনিংয়ে নেতৃত্ব দিচ্ছেন সাকিব-নাইম।
আজ হারলে বিশ্বকাপ স্বপ্ন শেষ। এমন সমীকরণে আবু ধাবিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ১৪২ রান টপকানোর লক্ষ্যে ব্যাট করছে বাংলাদেশের দুই ওপেনার।
বাংলাদেশের সংক্ষিপ্ত স্কোর: ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২০ ওভারে ১৪২/৭ (চেজ ৩৯, পুরান ৪০)
ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্বস্তির স্কোর
শুরুটা মোটেও ভালো ছিল না ওয়েস্ট ইন্ডিজের। টপ অর্ডারে এক চেজ (৩৯) ছাড়া ব্যর্থ ছিলেন বেশিরভাগই। দুই ওপেনার গেইল (৪), লুইস (৬) করেন ১০ রান। এছাড়া মিডলে হাসেনি ক্যাপ্টেন পোলার্ড কিংবা আন্দ্রে রাসেলের ব্যাট। পোলার্ড রিটায়ার্ড হার্ড হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরলেও ২২ গজে পা দিয়ে তাকে অনুসরণ করেন রাসেল। রান কাটা পড়ে শূন্যরানে সাজঘরে ফিরেন তিনিও। একের পর এক উইকেট পতনে ভয় ধরে যায় ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নদের । না জানি ১০০ রানে থেমে যায় তাদের ইনিংস। তবে লোয়ার অর্ডারে সে ভয় কাটিয়ে দেন উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান নিকোলাস পুরান। ৪ ছয় এবং এক চারে ২২ বলে ৪০ রানের ঝড়ো ইনিংসে দলকে ১৪২ রান সংগ্রহ এনে দেন তিনি। অর্থাৎ জয় পেতে বাংলাদেশকে করতে হবে ১৪৩ রান।
২২ গজে পা দিয়েই মাঠ ছাড়েন রাসেল
১২, ১৮,৩২; টপাটপ তিন উইকেটের পতনে সম্মুখভাগ গুড়িয়ে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের। মূলত এরপরই সাবধানী ভূমিকায় যুদ্ধ নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন ক্যাপ্টেন কাইরন পোলার্ড। খুনে মেজাজের পোলার্ড সঙ্গী রোস্টন চেজকে নিয়ে এগুতে থাকেন বেশ সাবধানে। সঙ্গে বাড়াতে থাকেন দলীয় রান। কিন্তু, ইনিংসের ১২.৩ ওভারে রিটায়ার্ড হার্ড হয়ে হয়ে মাঠ ছাড়তে হয় ক্যাপ্টেনকে। এরপরের বলে রান আউটে কাটা পড়েন আন্দ্রে রাসেল। পোলার্ড নামের পাশে ৮ রান যোগ করলেও রাসেল শূন্য রানে ফিরেন।
৩ উইকেট পতন ওয়েস্ট ইন্ডিজের
চতুর্থ ওভারের পর খানিকটা খুঁড়িয়ে মাঠ ছাড়েন সাকিব আল হাসান। হ্যামস্ট্রিংয়ে হাত দিচ্ছিলেন তিনি বারবার, তাতে ধারণা করা যেতে পারে, টান হ্যামস্ট্রিংয়েই।
এদিকে প্রথম ২ ওভারে ৭ রান খরচায় ১ উইকেট নেয়া মেহেদী নিজের তৃতীয় ওভারে ফেরান শিমরন হেটমায়ারকে। সপ্তম ওভারের চতুর্থ বলে তাকে ৯ রানে লং অফে সৌম্য সরকারের ক্যাচ বানান এই স্পিনার। আগের বলে চেজের ফিরতি ক্যাচ ধরতে পারেননি মেহেদী। হাত ফসকে যায় বল।
ফিজের পর মেহেদীর সাফল্য
আগের ম্যাচে ফিফটি হাঁকানো লুইসকে ফিরিয়ে বাংলাদেশের প্রথম ব্রেক থ্রু এনে দেন মুস্তাফিজুর রহমান। প্রথম দুই ওভারে মেহেদি ও তাসকিনের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের পর তৃতীয় ওভারে সাফল্য পায় দল। মুস্তাফিজের প্রথম স্পেলের প্রথম ওভারের শেষ বল (লেংথ ডেলিভারি) গায়ের জোরে উড়িয়ে মারেন লুইস। কিন্তু বল পিচে পড়ে একটু থমকে আসে। ব্যাটের কানায় লেগে বল ওঠে কেবল ওপরে। ছুটে আসেন তিনজন ফিল্ডার, শেষ পর্যন্ত স্কয়ার লেগ থেকে এসে মুঠোবন্দি করেন মুশফিকুর রহিম। ৯ বলে ৬ রানে ফিরেন লুইস। তার ঠিক এক ওভার পরই, বিপজ্জনক গেইলকে শিকার বানান মেহেদী। মাত্র ৬ রানে ফিরেন তিনি।
টস
টস ভাগ্যে আবারো জয়ী হলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। টস জিতে বেছে নিলেন বোলিং। এ নিয়ে আসরের ৬ ম্যাচের ৫টিতেই টস জিতল বাংলাদেশ।
দুই অধিনায়কের বক্তব্য
টস জয়ের পর বাংলাদেশ অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ বলেছেন, ‘আমরা প্রথমে ফিল্ডিং করব। পরিসংখ্যানের দিকে আমাদের তাকাতে হবে। তাদের ব্যাটিং অর্ডারের গভীরতা অনেক, তাই আমরা চেষ্টা করব একটা মোটামুটি সংগ্রহের মধ্যে তাদের আটকে দিতে এবং সেটা সফলভাবে তাড়া করতে। নুরুল হাসান খেলছে না। সৌম্য সরকার এসেছে। নাসুম আহমেদও নেই এবং তাসকিন এসেছে।’
ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক কাইরন পোলার্ড বলেন, ‘এটা হচ্ছে (বাঁচা-মরার লড়াই)। এটাই বাস্তবতা। আমরা নিজেদের দোষারোপ করছি, আর কাউকে নয়। এই পরিস্থিতি থেকে বের হওয়ার দায়িত্ব তাই আমাদের। দুটি পরিবর্তন। লেন্ডল সিমন্স নেই, রোস্টন চেজের অভিষেক হচ্ছে। হেইডেন ওয়ালশ নেই এবং জেসন হোল্ডার এসেছে।’ ক্রিস গেইল ওপেনিং করবেন বলে জানান পোলার্ড।
আসরে দুই দলের পরিসংখ্যান
চলতি আসরে এক দল বর্তমান চ্যাম্পিয়ন, আসরের রেকর্ড দুই বারের চ্যাম্পিয়ন। আরেক দল গত ১৪ বছরে মূল পর্বে কোনো ম্যাচ জেতেনি। তবে এই ম্যাচে দুই দলই মাঠে নামছে এক বিন্দুতে থেকে। এবারের টুর্নামেন্টে সুপার টুয়েলভে প্রথম দুই ম্যাচই হেরেছে দুই দল। টিকে থাকতে হলে আজকের ম্যাচে জয়টা খুবই জরুরি।
দুই দলের একাদশ
বাংলাদেশ একাদশ: মোহাম্মদ নাঈম শেখ, লিটন দাস, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ (অধিনায়ক), আফিফ হোসেন, সৌম্য সরকার, শেখ মেহেদি হাসান, তাসকিন আহমেদ, শরিফুল ইসলাম ও মুস্তাফিজুর রহমান।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ একাদশ: ক্রিস গেইল, এভিন লুইস, রোস্টন চেইস, নিকোলাস পুরান, শিমরন হেটমায়ার, কাইরন পোলার্ড (অধিনায়ক), ডোয়াইন ব্রাভো, আন্দ্রে রাসেল, জেসন হোল্ডার, আকিল হোসেন ও রবি রামপল।
নয়া শতাব্দী/এআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ