মাসকটে শুরুটা বাজে হলেও শেষটা সুন্দর ছিল। যার বদৌলতে আরব আমিরাতের বিমানে চড়তে পেরেছে বাংলাদেশ। তবে দুটি ম্যাচ হয়ে গেলেও পায়নি জয়ের দেখা। ক্যাচ মিসে ম্যাচ ফসকানো, বাজে ব্যাটিং-বোলিং, সঙ্গে মাঠের বাইরে নানা রকম আলোচনা-সমালোচনা। হারের বেদনায় ভোগা মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল সব কিছুতে তালগোল পাকিয়ে এখন যেন হতাশার স্তুপে। না যায় থাকা, না যায় সওয়া। অথচ দেশ ছাড়ার আগে ছিল কতশত স্বপ্ন।
তবে নিভু নিভু প্রদীপ পুরোপুরি না নেভার আগে শেষ দেখছে না বাংলাদেশ। আজ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে বিকাল ৪টায় মাঠে নামবে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল। যেই লড়াইয়ে জিতে বাংলাদেশের চাওয়া, ‘সেমিফাইনাল আশা’র সলতে জ্বালিয়ে রাখা।
দুই হারের পর সেমিফাইনাল স্বপ্ন আকাশ-কুসুম সম্ভাবনায় পরিণত হলেও, গতকাল বাংলাদেশের প্রতিনিধি হয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসে আবার আশারবাণী শুনিয়ে গেছেন কিপার-ব্যাটার নুরুল হাসান সোহান। দল এখনো সেমির স্বপ্ন দেখছে কি-না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘অবশ্যই। আমাদের টিকে থাকতে হলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচ খুব গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশে থাকতে আমরা অনেকেই বলেছি, আমাদের আশা সেমিফাইনাল খেলা। কাল (আজ) জিতলে সেমিফাইনালে খেলার আশা টিকে থাকবে।’
খালি চোখে যে কেউ বলে দিতে পারবে, ওয়েস্ট ইন্ডিজ বাংলাদেশের চেয়ে অনেক শক্তিশালী দল। অন্তত এই টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে। দুইবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন তারা। অথচ বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মূল পর্বে ম্যাচই জিতেছে মোটে একটি। কাকতালীয়ভাবে, সে জয়টা এই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষেই এসেছিল ২০০৭ বিশ্বকাপে।
সেই জয় নিশ্চিতভাবে আজ অনুপ্রেরণা যোগাবে বাংলাদেশ দলকে। টাইগারদের নাকি অনুপ্রেরণা দিবে ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের ভালো খেলা। সোহান বলেছেন সে কথাই, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে আমরা শেষ যে কয়টা টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলেছি, সেখানে আমরা ভালো খেলেছি। আমার কাছে মনে হয় এটা আমাদের আরও বেশি অনুপ্রেরণা দিবে।’
তবে অনুপ্রেরণাতে তো আর জয় আসে না। জয় তুলে নিতে হলে করতে হবে পারফর্ম। বাংলাদেশ আজ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সেটাই করে দেখাতে মরিয়া। সোহান বলেন, ‘আমরা একটা ম্যাচ জেতার জন্য অপেক্ষা করছি। সবাই নিজের শতভাগ দিতে মুখিয়ে আছে।’
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচের আগে চারদিকে হওয়া সমালোচনা নিয়েও মুখ খুলেছেন সোহান। রানের মধ্যে না থাকায় তাকে নিয়েও চারদিকে হচ্ছে বিস্তর কথা-বার্তা। তবে সোহানের মতে, যৌক্তিক সমালোচনা মেনে নিতে কোনো আপত্তি নেই তার। এই কিপার বলেন, ‘আমরা যখন খারাপ করি তখন আমাদের সমালোচনা সবসময় হয়। সমালোচনা কাম্য, তবে আমার মনে হয় গঠনমূলক সমালোচনা হওয়া জরুরি।’
এদিকে, বাংলাদেশের জন্য আজকের ম্যাচটি যত গুরুত্বপূর্ণ, ওয়েস্ট ইন্ডিজের জন্যও তাই। আসরে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা শিরোপা ধরে রাখার মিশনে সংযুক্ত আরব আমিরাতে এলেও, এখন সুপার টুয়েলভ থেকেই বাদ পড়ার শঙ্কায় আছে। আজ বাংলাদেশের কাছে হেরে গেলে বিদায় নিশ্চিত হয়ে যাবে দলটির। জয়ের বিকল্প নেই তাই গেইল-পোলার্ডের সামনেও।
সেই জয় তুলে নিতে শারজাহর ছোট বাউন্ডারির সুযোগ নিতে চাচ্ছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। গতকাল দলটির ব্যাটার নিকোলাস পুরান সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘দুই ম্যাচ হারার পর বাংলাদেশও আমাদের পরিস্থিতিতে আছে। আমাদের জন্য এটা তাই ভালো সুযোগ। আমাদের একটি জয় প্রয়োজন। শারজায় খেলতে গেলে মাথায় রাখতে হবে বাংলাদেশের অনেক স্পিনার আছে, এটা আমাদের জন্য ভালো সুযোগ (ছোট বাউন্ডারি হওয়ায়)। আমরা এটাই চাচ্ছিলাম।’
নয়া শতাব্দী/এসএম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ