তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে আগে ব্যাট করে বাংলাদেশকে ২৩৬ রানের লক্ষ্য দিয়েছিল আফগানিস্তান। জবাবে মাত্র ১১ রানের ব্যবধানে নাটকীয়ভাবে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৪৩ রানে অলআউট হয়েছে বাংলাদেশ। এতে ৯৩ রানের বড় জয় পেয়েছে আফগানিস্তান। ৬ উইকেট শিকার করে বিশেষ ভূমিকা পালন করেছেন আল্লাহ গজানফর।
বুধবার (৬ নভেম্বর) চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি বাংলাদেশের। ইনিংসের তৃতীয় ওভারে ৫ বলে ৩ রান করে সাজঘরে ফেরেন ওপেনার তানজিদ তামিম। তবে নাজমুল হোসেন শান্তকে সঙ্গে নিয়ে রান তুলতে থাকেন আরেক ওপেনার সৌম্য সরকার।
তাদের ব্যাটে ভর করে ৯ ওভারেই দলীয় ফিফটি পূরণ করে টাইগাররা। পাওয়ার প্লেতে ৫৪ রান তোলেন শান্ত ও সৌম্য। তবে ফিফটি তুলতে পারেননি সৌম্য। ৪৫ বলে ৩৩ রান করে বাউন্ডারি লাইনে কাটা পড়েন এই বাঁহাতি ব্যাটার।
চারে ব্যাট করতে নেমে শান্তকে সঙ্গ দেন মেহেদী হাসান মিরাজ। দুজনের ব্যাটে ভর করে ১০০ রানের কোটা পার করে বাংলাদেশ। ফিফটি তুলতে পারেননি শান্তও। ৬৮ বলে ৪৭ রান করে সাজঘরে ফেরেন তিনি। এরপর পিচে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি মিরাজও। ৫১ বলে ২৮ রান করে আউট হন তিনি।
এদিন ব্যাট হাতে আলো ছড়াতে পারেননি মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও মুশফিকুর রহিম। মাহমুদউল্লাহ ২ রান এবং ১ রান করে আউট হন মুশফিক। এরপর রিশাদ (১), তাসকিন (০), হৃদয় (১১) এবং শরিফুল ১ রানে আউট হলে ১১ রানের ব্যবধানে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৪৩ রানে অলআউট হয়েছে বাংলাদেশ। এতে ৯৩ রানের বড় জয় পেয়েছে আফগানিস্তান।
আফগানিস্তানের হয়ে সর্বোচ্চ ৬ উইকেট শিকার করেন আল্লাহ গজানফর। এ ছাড়া রশিদ খান দুটি, মোহাম্মদ নবী এবং আজমতুল্লাহ ওমারজাই একটি করে উইকেট নেন।
এর আগে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে দ্বিতীয় ওভারে রহমানউল্লাহ গুরবাজের গুরুত্বপূর্ণ উইকেট হারায় আফগানিস্তান। তাসকিনের ফুল লেন্থের বলে ড্রাইভ খেলতে গিয়ে উইকেটরক্ষকের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন বিধ্বংসী এই আফগান ওপেনার। ৭ বলে ৫ রান করেন তিনি।
তিনে ব্যাট করতে নেমে রান তুলতে পারেননি রহমত শাহও। ১৩ বলে মাত্র ২ রান করেন তিনি। অষ্টম ওভারের দ্বিতীয় বলে মোস্তাফিজের শিকার হন এই ডানহাতি ব্যাটার। তবে এক প্রান্ত আগলে রেখে লড়াই করেন আরেক ওপেনার সাদিকুল্লাহ।
পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে মোস্তাফিজ জোড়া উইকেট শিকার করে আফগানিস্তানকে বিপাকে ফেলেন। ওভারের দ্বিতীয় বলে সাদিকুল্লাহ (২১) এবং পঞ্চম বলে আজমতুল্লাহ ওমরজাইকে ফেরান তিনি।
এতে পাওয়ার প্লে শেষে ৩৬ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়েছিল আফগানরা। গুলবাদিন নাইবকে সঙ্গে নিয়ে দলের হাল ধরার চেষ্টা করেন শাহিদি। তবে ইনিংস বড় করতে পারেননি গুলবাদিন। ৩২ বলে ২২ রান করে এই অলরাউন্ডার আউট হলেও দলীয় ৭১ রানে পাঁচ উইকেট হারিয়ে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে আফগানিস্তান।
সপ্তম উইকেটে আফগান অধিনায়ককে সঙ্গ দেন নবী। শুরুতে টি-টোয়েন্টি মেজারে রান তুলে ৫২ বলে ফিফটি তুলে নেন এই অলরাউন্ডার। অপর প্রান্ত থেকে ৮৭ বলে অর্ধশতক পূরণ করেন শাহিদি। তাদের ব্যাট থেকে আসে ১০৪ রান।
৪১তম ওভারে হাশমতুল্লাহকে ফিরিয়ে বাংলাদেশকে খেলার ফেরান মোস্তাফিজ। ৯২ বলে ৫২ রান করেন আফগান অধিনায়ক। এদিন ব্যাট হাতে আলো ছড়াতে পারেননি আরেক অলরাউন্ডার রশিদ খান। ১১ বলে ১০ রান করে ক্যাচ আউট হন তিনি। অপর প্রান্ত আগলে রেখে লড়াই করতে থাকেন নবী।
৪৮তম ওভারের তৃতীয় বলে তাসকিনকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে বাউন্ডারি লাইনে কাটা পড়েন এই ডানহাতি ব্যাটার। এতে সেঞ্চুরির আক্ষেপ নিয়ে (৭৯ বলে ৮৪ রান করে) সাজঘরে ফেরেন তিনি। পরের বলে বোল্ড আউট হন আল্লাহ গজানফর।
ইনিংসের শেষ ওভারের তৃতীয় বলে রান আউট হন ফারুকী। এতে নাঙ্গেলিয়া খারোতে ২৮ বলের অপরাজিত ২৭ রানে ভর করে ২৩৫ রানে অলআউট হয় আফগানিস্তান।
বাংলাদেশের হয়ে বল হাতে চারটি করে উইকেট শিকার করেন মোস্তাফিজুর ও তাসকিন। এ ছাড়া আরেক পেসার শরিফুল ইসলাম নেন এক উইকেট।
নয়া শতাব্দী/এসআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ