টানা দ্বিতীয়বারের কোপা আমেরিকা শিরোপা জয়ের লক্ষ্যে কলম্বিয়ার বিপক্ষে মাঠে নামে আর্জেন্টিনা। তবে কলম্বিয়ার সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে ৯০ মিনিটে কেউই গোল করতে পারেনি। এতে অতিরিক্ত সময়ে গড়ায় ম্যাচ। পরে অতিরিক্ত সময়ের দ্বিতীয়ার্ধের লাউতারো মার্টিনেজের গোলে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে আর্জেন্টিনা।
দর্শকদের বিশৃঙ্খলার কারণে ১ ঘন্টা ২০ মিনিট পর মাঠে গড়ায় কোপা আমেরিকার ফাইনাল ম্যাচ। ম্যাচের শুরুতেই গোলের সুযোগ তৈরি করে আর্জেন্টিনা। আলভারেজের শট অল্পের জন্য চলে যায় পোস্টের বাইরে দিয়ে। খেলার ৬ মিনিটে বেঁচে যায় আলবিসেলেস্তেরা। কলম্বিয়ার কর্ডোবার শট পোস্টে লেগে বেরিয়ে যায়। অল্পের জন্য গোল খাওয়া থেকে বেঁচে যায় তারা। তার ঠিক চার মিনিট পরে পর পর আক্রমণ চালায় কলম্বিয়া। তবে সে যাত্রায় গোল আদায় করতে ব্যর্থ হয় তারা।
ম্যাচের ২০ মিনিটে সতীর্থের পাস থেকে সরাসরি গোল পোস্টে শট নিয়েছিলেন মেসি। তবে এ যাত্রায় কলম্বিয়াকে বাঁচিয়ে দেন তাদের গোলরক্ষক। তার ৫ মিনিট পরে লিসান্দ্রোকে আঘাত করে হলুদ কার্ড দেখেন কর্ডোবা। ৪৩ মিনিটে বল নিয়ে এগোচ্ছিলেন তাগলিয়াফিকো। বক্সের কাছাকাছি জায়গায় তাকে বাজেভাবে ট্যাকল করায় ফ্রি কিক পায় আর্জেন্টিনা। ফ্রি কিক থেকে বক্সের মধ্যে উড়িয়ে বল মারেন মেসি, সতীর্থের হেড চলে যায় ক্রসবারের উপর দিয়ে। আক্রমণ এবং প্রতি আক্রমণে গোলশূন্য সমতায় শেষ হয় প্রথমার্ধ।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই দাপট ধরে রাখে কলম্বিয়া। আক্রমণেও উঠেছিলো কয়েকবার। ৫৮ মিনিটে কোনো রকমে বেঁচে যায় কলম্বিয়া। বাঁ দিক থেকে বল নিয়ে একেবারে প্রতিপক্ষের ডেরায় ঢুকে পড়েন ডি মারিয়া। তার নেওয়া শট কোনো রকমে ঢেকিয়ে দেন কলম্বিয়ার গোলরক্ষক কামিলো ভারগাস। খেলার ৬১ মিনিটে হলুদ কার্ড দেখেন অ্যালেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্টার।
কোপা আমেরিকার টুর্নামেন্টে আর মাঠে নামা হবে না মেসির, এটা এক প্রকার নিশ্চিত। ম্যাচের ৬৬ মিনিটে কান্নাভেজা চোখে মাঠ থেকে উঠে গেলেন মেসি। প্রথমার্ধের ৩৫তম মিনিটে চোট পেয়েছিলেন আর্জেন্টাইন অধিনায়ক। মেসি উঠে যাওয়ার পর কিছুটা ছন্নছাড়া ফুটবল খেলতে থাকে আর্জেন্টিনা। আক্রমণে উঠেও তার কোনো ফল পাচ্ছিলো না দলটি। ৮৭ মিনিটে এগিয়ে যেতে পারতো আর্জেন্টিনা। গঞ্জালেসের হেড অল্পের জন্য বাইরে দিয়ে চলে যায়।
নির্ধারিত ৯০ মিনিটও শেষ হয় গোলশূন্য সমতায়। ফলে ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। টুর্নামেন্টের নকআউট ম্যাচগুলোতে এই নিয়ম ছিল না। খেলার ৯০ মিনিট যদি সমতায় শেষ হতো তাহলে সরাসরি টাইব্রেকার দেওয়া হতো। তবে ফাইনাল ম্যাচে সেই নিয়ম নেই। খেলার ৯০ মিনিট শেষে সমতা থাকলে আরও ৩০ মিনিট খেলা হবে। যার জন্য এই ম্যাচও গড়ায় অতিরিক্ত ৩০ মিনিটে।
অতিরিক্ত সময়েও একের পর এক আক্রমণ করে গেছে দুই দল। তবে কাঙ্খিত গোলের দেখা পাচ্ছিলেন না কোনও দল। অবশেষে সোনার হরিণ নামক সেই গোলটি পেয়ে যায় আর্জেন্টিনা। ১১২ মিনিটে এলো কাঙ্খিত সেই গোল। মাঝমাঠ থেকে লাউতারো মার্টিনেজকে বল বাড়িয়ে দিলেন লো সেলসো। বক্সের ভেতরে ঢুকে নিখুঁত শটে বল জালে জড়ান লাউতারো। আর সেই গোলেই টানা দ্বিতীয়বারের মতো কোপা আমেরিকার শিরোপা ঘরে তুলে আর্জেন্টিনা। সেইসঙ্গে কোপা আমেরিকার ইতিহাসে এককভাবে সর্বোচ্চ ১৬ বার চ্যাম্পিয়ন এখন আর্জেন্টিনা।
নয়া শতাব্দী/এসআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ