ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নতুন মুখ, খুশি পাপন

প্রকাশনার সময়: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৬:০১
ছবি: সংগৃহীত

ঘনিয়ে আসছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের নির্বাচন। বাড়ছে উত্তেজনা। খুব বেশি চমক না থাকলেও নির্বাচনে কয়েক নতুন মুখ নিয়ে আলোচনা চলছে। যা দেখে বেশ খুশি বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন।

গতকাল মনোনয়নপত্র কেনার সময় নতুনদের নিয়ে বেশ উচ্ছ্বসিত ছিলেন বিদায়ী এই বিসিবি বস। তিনি বলেন, নতুন নতুন মুখ দেখে আমি খুবই খুশি। আমি এমন নির্বাচনই চেয়েছিলাম।’ এবারের নির্বাচনে নতুন মুখ সাবেক ক্রিকেটার খালেদ মাসুদ পাইলট। তিনি সংগ্রহ করেছেন পরিচালক পদের মনোনয়ন ফর্ম। অন্যদিকে খালেদ মাহমুদ সুজনের প্রতিদ্বন্দ্বী করবেন ক্রিকেট পরামর্শক নাজমুল আবেদীন ফাহিম।

আগামী ৬ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হবে বিসিবির পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচন। এ জন্য গত দু’দিন ছিল পরিচালক পদের মনোনয়ন পত্র কেনার সময়। সর্বমোট ২৩টি পদের জন্য গত শুক্রবার মনোনয়নপত্র কিনেছেন ৮ প্রার্থী। গতকাল শনিবার ছিল মনোনয়নপত্র কেনার শেষ দিন। এদিন বিসিবি কার্যালয়ে সকাল থেকে প্রার্থীদের ভিড়।

দুপুর ২টার দিকে মিরপুরে হাজির হন নাজমুল হাসান পাপন। ক্যাটাগরি-২ থেকে পরিচালক হওয়ার মনোনয়ন ফর্ম সংগ্রহ করেন তিনি। এই ক্যাটাগরিতে ভোটার সংখ্যা ৫৬ জন। যেখানে ভোট দেবেন ঢাকার বিভিন্ন স্তরের ক্লাবের কাউন্সিলররা। এই ক্যাটাগরি থেকে পরিচালক নির্বাচিত হবেন মোট ১২ জন। ঢাকার ঐতিহ্যবাহী ক্লাব আবাহনী লিমিটেড থেকে কাউন্সিলরশিপ পেয়েছেন পাপন তিনি।

মনোনয়নপত্র কিনে বেরিয়ে যাওয়ার পথে নাজমুল হাসান গণমাধ্যমে বলেন, ‘আমি খুবই খুশি। কালকে টিভিতে দেখলাম অনেকগুলো নতুন মুখ আছে। এখানে এসে বেশ কিছু নতুন মুখ দেখেছি। এটা দেখে আমি অনেক খুশি। এটাই আমি চাচ্ছি যে নির্বাচন হোক। নতুন নতুন মানুষ আসুক।’

সরকারের মনোনয়নে ২০১২ সালের অক্টোবরে বিসিবি সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন নাজমুল হাসান। এক বছর পর আরেক অক্টোবরে নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন তিনি। ২০১৭ সালের নির্বাচনে আবার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বোর্ড সভাপতি হন। চলতি মাসে তার নেতৃত্বাধীন কমিটির মেয়াদ শেষ হচ্ছে। আরেকটি নির্বাচন যখন সামনে তখন ঘুরে ফিরে আবার আসছে একটিই নাম, নাজমুল হাসান। এর আগের নির্বাচনে সাবেক বোর্ডপ্রধান সাবের হোসেন চৌধুরী নির্বাচনের আগ্রহ দেখালেও শেষ পর্যন্ত নিজেকে সরিয়ে নেন। এবারের নির্বাচনে নাজমুল হাসান বাদে কারো নাম এখনো শোনা যায়নি। বরং স্রোত যেভাবে এগিয়েছে তাতে মনে হচ্ছে বিসিবির হট সিটে আরো দুই বছরের জন্য বসতে যাচ্ছেন নাজমুল হাসানই।

অন্যদিকে গতকাল আলোচনায় ছিলেন খালেদ মাহমুদ সুজন ও নাজমুল আবেদীন ফাহিম। শেষ দিনে মনোনয়নপত্র কিনেছেন সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিমসহ অনেক ক্রিকেটারের শৈশবের কোচ নাজমুল আবেদীন ফাহিম।

বিকেএসপিতে থেকে কাউন্সিলরশিপ পাওয়া নাজমুল আবেদীন ক্যাটাগরি-৩ থেকে নির্বাচন করবেন। যেখানে তার প্রতিদ্বন্দ্বী বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক ও বর্তমান বিসিবি পরিচালক খালেদ মাহমুদ সুজন।

বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা (বিকেএসপি) প্রতিষ্ঠান থেকে কোচিং ক্যারিয়ার শুরু নাজমুল আবেদীনের। ১৯৮৮ সাল থেকে প্রায় ১৭ বছর বিকেএসপিতে কাজ করেন তিনি। এরপর বিভিন্ন ভূমিকায় বিসিবিতে ১৪ বছর দায়িত্ব পালন করে আবার বিকেএসপিতে ফিরে যান প্রৌঢ় এই কোচ। সেখানে ক্রিকেট উপদেষ্টা হিসেবে কর্মরত আছেন নাজমুল আবেদীন। ক্রিকেটের উন্নয়নে এবার বিসিবি নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন তিনি।

নির্বাচন প্রসঙ্গে নাজমুল আবেদীন বলেন, ‘নিজেকে অনেক পরিণত এবং অভিজ্ঞ বলে মনে করি। ক্রিকেটের উন্নয়নে পরিচালনা পরিষদে আসা আমার জরুরি মনে হয়েছে। ক্রিকেটীয় কর্মকা- পরিচালনা এবং ক্রিকেটকে এগিয়ে নেয়ার কাজটা আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে ভালো পারব বলেই বিশ্বাস আমার। সেই বিশ্বাসই আমাকে বিসিবির পরিচালক পরিষদ নির্বাচন করতে উৎসাহিত করেছে। তাই দাঁড়িয়েছি। আমার বিশ্বাস আমি ক্রিকেটের উন্নয়নে বোর্ডে কাজ করতে পারব।’

ক’দিন আগে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন নতুন নেতৃত্বের আহ্বান জানান। সেই আহ্বানে সাড়া দেয়ার অঙ্গিকার নাজমুল আবেদীনের।

অভিজ্ঞ এই কোচ বলেন, ‘তিনিও বোর্ডে নতুন মুখ চান। যারা নতুন নতুন চিন্তা ভাবনা ও প্রতিশ্রুতি নিয়ে আসবে। আমি সেই নতুনের কেতন ওড়াতে চাই।’

ক্যাটাগরি-৩ থেকে ভোটার সংখ্যা ৪৩ জন। যেখানে সাবেক অধিনায়ক, সাবেক ক্রিকেটার, বিভিন্ন সংস্থার ভোটাররা ভোট দিয়ে একজন পরিচালক নির্বাচিত করবেন। নাজমুল আবেদীনের বিশ্বাস, কাউন্সিলররা তার প্রতি আস্থা রাখবেন। তিনি বলেন, ‘আমার বিশ্বাস ও আস্থা দীর্ঘদিন ক্রিকেট অঙ্গনে আছি, খেলেছি এবং কোচিং করিয়েছি, করাচ্ছি। এবার বোর্ড ব্যবস্থাপনায় আসতে চাই। ক্রিকেট উন্নয়নে সক্রিয় ভূমিকা রাখতে আগ্রহী।’

বিসিবির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তিন শ্রেণি থেকে কাউন্সিলর হওয়ার কথা মোট ১৭৪ জনের।

বোর্ড পরিচালক হবেন ২৫ জন। এর মধ্যে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ মনোনীত পরিচালক থাকবেন ২ জন। তবে খসড়া তালিকা অনুযায়ী দেখা গেছে, বিসিবি নির্বাচনে ভোটার ১৭১ জন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বরিশাল শিক্ষা বোর্ড ও অগ্রণী ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব থেকে কোনো কাউন্সিলরের নাম জমা পড়েনি।

নয়া শতাব্দী/এমআর

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ