ঘরের মাঠে গোল হজমের ধাক্কা সামলে আক্রমণের ঝড় তুলেছিল ম্যানচেস্টার সিটি। দ্বিতীয়ার্ধে কিছু সময় পর কাঙ্ক্ষিত গোলের দেখায় পায় স্বাগতিকরা। এতে ম্যাচ গড়াই অতিরিক্ত সময়ে। সেখানে কেউ পেল না জলের দেখা। তবে প্রতিপক্ষের মাঠে কোণঠাসা হয়ে থাকা রিয়াল মাদ্রিদ বাজিমাত করলো টাইব্রেকারে। বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের বিদায় করে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমি-ফাইনালে উঠলো কার্লো আনচেলত্তির শিষ্যরা।
বুধবার (১৭ এপ্রিল) দিবাগত রাতে ম্যানসিটির ঘরের মাঠ ইতিহাদ স্টেডিয়ামে নির্ধারিত সময়ে ১-১ গোলে ড্র করার পর টাইব্রেকারে ৪-৩ ব্যবধানে জয়লাভ করে রিয়াল মাদ্রিদ। প্রথম লেগে ৩-৩ ড্রয়ের ফলে ৪-৪ ব্যবধানের কারণে ম্যাচ টাইব্রেকারে গড়ায়। এদিন ম্যাচের শুরুটা দারুণ হয়েছে রিয়াল মাদ্রিদের। ম্যাচের দ্বাদশ মিনিটেই রদ্রিগোর গোলে এগিয়ে যায় স্প্যানিশ জায়ান্টরা। ডান দিক থেকে আক্রমণে গিয়ে ভালভার্দেকে খুঁজে নেন বেলিংহ্যাম। উরুগুয়ে মিডফিল্ডার থেকে বল নিয়ে রদ্রিগোকে বাড়ান ভিনিসিয়ুস। ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ডের প্রথম শট এদারসন ঠেকিয়ে দিলেও ফিরতি শটে জাল খুঁজে নেন।
গোল হজম করে সমতায় ফিরতে মরিয়া হয়ে ওঠে সিটি। ১৯তম মিনিটে দারুণ এক সুযোগ পায় তারা। ডি ব্রুইনার জোরালো শট ঠেকিয়ে দেন লুনিন। ফিরতি বল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে হেড নেন হালান্ড, যেটি গোলবারে লেগে ফিরে আসে। ফিরতি শটে বল বাইরে পাঠিয়ে দেন বের্নান্দো সিলভা। ২৪তম মিনিটে ব্যবধান বাড়াতে পারত রিয়াল। তবে ভিনিসিয়ুসের দেওয়া দারুণ পাস ঠিকঠাক শট নিতে পারেননি ভালভার্দে।
২৮তম মিনিটে ডি ব্রুইনা নৈপুণ্যে আরও এক দারুণ সুযোগ পায় সিটি। তবে তার দেওয়া ক্রস ঠিকঠাক হেড নিতে পারেননি হালান্ড। ফলে সহজেই বল নিয়ন্ত্রণে নেন লুনিন। ৩২তম মিনিটে আরও একটি সুযোগ পায় স্বাগতিকরা। তবে গ্রিলিসের নেওয়া শট ঠেকিয়ে দেন দানি কারভাহাল। এতে ১-০ তে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় সফরকারীরা।
দ্বিতীয়ার্ধে মাঠে নেমে আক্রমণ বাড়ায় ম্যানসিটি। তার সুফলও পায় তারা। তবে অপেক্ষা করতে হয় লম্বা সময়। ৭৬তম মিনিটে কেভিন ডি ব্রুইনার গোলে সমতায় ফিরে ইংলিশ ক্লাবটি। বদলি হয়ে নামা দোকু বল টেনে নিয়ে শট নিলে সেটি ঠেকিয়ে দেন রুডিগার। কিন্তু বক্সে থাকা ডি ব্রুইনা ফিরতি বল লুনিনের মাথার ওপর দিয়ে জালে পাঠান। পরবর্তীতে আরও কয়েকটি আক্রমণ করে তারা। তবে নির্ধারিত সময়ে গোল না হলে খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে।
৯৯তম মিনিটে এগিয়ে যেতে পারত ম্যান সিটি। তবে সিলভার দেওয়া ক্রস ফোডেনের পায়ে লেগে লুনিনের কাছে চলে যায়। অতিরিক্ত সময়ের যোগ করা সময়ে রুডিগারের বুলেট গতির ভলি উপর দিয়ে উড়ে যায়। অতিরিক্ত সময়ের শেষ মিনিটে দারুণ এক সুযোগ তৈরি করে সিটি। ডান দিক থেকে আক্রমণে গিয়ে বল টেনে নিয়ে বক্স থেকে শট নেন আলভারেস। যদিও লুনিন সেটি সহজেই ঠেকিয়ে দেন। পরে আর কোনো গোল না হলে খেলা গড়ায় টাইব্রেকারে।
উত্তেজনার টাইব্রেকারে আলভারেস শুরুতেই স্পট কিকে সফল হন। কিন্তু রিয়ালের প্রথম পেনাল্টি মিস করেন মদ্রিচ। সিটির পরের পেনাল্টি নিতে গিয়ে লুনিনের হাতে বল তুলে দেন সিলভা। তবে রিয়ালের হয়ে এবার সফল কিক নেন বেলিংহ্যাম। তৃতীয় পেনাল্টিতে সিটির কোভাচিচের স্পট কিক ঠেকিয়ে দেন লুনিন। আর রিয়ালের হয়ে গোল করেন লুকাস ভাসকেস। পরবর্তীতে সিটির ফিল ফোডেন ও এদেরসন গোল পায়। আর রিয়ালের নাচো ও রুডিগারের পেনাল্টি মিস না হলে আনন্দে ভাসে ক্লাবটি।
গত আসরে এই মাঠেই সেমি ফাইনালের ফিরতি লেগে রিয়ালকে ৪-০ গোলে উড়িয়ে ফাইনালে ওঠার পর প্রথমবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ের স্বাদ পেয়েছিল সিটি। পেপ গার্দিওলার দলের শিরোপা ধরে রাখার অভিযান থমকে গেল শেষ আটেই। শেষ হয়ে গেল তাদের ট্রেবল জয়ের আশাও।
নয়া শতাব্দী/আরজে
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ