বৃষ্টিভেজা সকালে সিলেটে টস জিতে বোলিংয়ের সিদ্ধান্তটা দারুণভাবে কাজে লাগায় বাংলাদেশ। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই ব্রেক-থ্রু এনে দেন পেসার খালেদ আহমেদ। এরপর একে একে ফেরান প্রতিপক্ষের আরও দুই ব্যাটারকে। টাইগার বোলিং তোপে লাঞ্চের আগেই পাঁচ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে শ্রীলঙ্কা।
তবে অধিনায়ক ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা ও কামিন্দু মেন্ডিসের অনবদ্য জুটিতে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে সফরকারীরা। পাঁচ উইকেটে ৯৫ রান নিয়ে প্রথম সেশন শেষ করা লঙ্কানরা দ্বিতীয় সেশনে কোনো উইকেট না হারিয়েই তুলে ফেলেছে ১২৫ রান। পাঁচ উইকেটে তাদের রান এখন ২১৭। সেইসঙ্গে দ্বিতীয় সেশনটা নিজেদের করে নিলো প্রথম সেশনে নাস্তানুবুদ হওয়া দলটি।
এর আগে, শুক্রবার (২২ মার্চ) সকালে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে টাইগার বোলার-ফিল্ডারদের তোপের মুখে দলীয় ৫৭ রানেই পাঁচ উইকেট হারিয়ে ফেলে সফরকারীরা।
প্রথম দিনের লাঞ্চ বিরতি পর্যন্ত ২২ ওভার শেষে ৫ উইকেট হারিয়ে লঙ্কানরা সংগ্রহ করে ৯৫ রান।
সিলেটে অধিনায়ক নাজমুল হোসাইন শান্তর টস ভাগ্য সুপ্রসন্ন। এর আগে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের সবকটিতেই টস জেতেন তিনি। এবার টেস্টেও ভাগ্যের সাহায্য পেলেন নতুন অধিনায়ক।
বোলিংয়ে নেমে ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই নিশান মাদুশকাকে ফেরান খালেদ আহমেদ। তার ফুল লেংথ ডেলিভারি ড্রাইভ করার চেষ্টায় লঙ্কান ওপেনারের ব্যাটের বাইরের কাণায় লেগে চলে যায় উইকেটের পেছনে। তৃতীয় স্লিপে দুর্দান্ত ক্যাচ নেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ৯ বলে ২ রান করে ফেরেন মাদুশকা।
নিশান মাদুশকার উইকেট দ্রুত হারানোর পর দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে চাপ সামাল দিচ্ছিলেন দিমুথ কারুনারাত্নে ও কুশাল মেন্ডিস। ৫৭ বলে ৩৭ রানের জুটিতে ঘুরে দাঁড়ানোর আভাস দিচ্ছিলেন তারা। তাদের ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠার আগেই আবারও আঘাত হানেন খালেদ।
১২তম ওভারের দ্বিতীয় বলে দেয়া তার দারুণ এক বাউন্সার বুঝে উঠতেই পারলেন না কুশাল মেন্ডিস। গালি অঞ্চলে ক্যাচ লুফে নেন জাকির। ফেরার আগে ২ চারে ২৬ বলে ১৬ রান করেন মেন্ডিস। একই ওভারে দিমুথ করুনারত্নেকেও সাজঘরে পাঠান টাইগার এই পেসার। অফ স্টাম্পের বাইরের ডেলিভারিতে ঠিকঠাক খেলতে পারলেন না লঙ্কান এই ওপেনার। ব্যাটের ফাঁক গলে বল গিয়ে আঘাত হানে স্ট্যাম্পে।
টপঅর্ডারের তিন ব্যাটারকে হারিয়ে দল যখন ধুঁকছে, তখন চাপ আরও বাড়ে অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসের ‘দৃষ্টিকটু’ রানআউটে। খালেদ আহমেদের করা বল কাভারের দিকে ঠেলে সিঙ্গেলের জন্য দৌড় দেন দিনেশ চান্দিমাল। অন্যপ্রান্তে ম্যাথিউস যতক্ষণে এসে পৌঁছান, তার আগেই মিডঅফ সরাসরি থ্রোতে স্টাম্প ভেঙে দেন টাইগার অধিনায়ক নাজমুল হোসাইন শান্ত। ৭ বলে ৫ রান করেই বিদায় ঘণ্টা বাজে ম্যাথিউসের।
পরে ৯ রান করা দিনেশ চান্দিমালকে মিরাজের ক্যাচ বানিয়ে ফেরান বাঁহাতি পেসার শরিফুল ইসলাম। যাতে মাত্র ৫৭ রানেই পঞ্চম উইকেট হারায় লঙ্কানরা।
এ অবস্থায় কামিন্দু মেন্ডিসকে সঙ্গী করে দলকে খাঁদের কিণারা থেকে টেনে তোলার কাজ করে চলেছেন অধিনায়ক ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা। ষষ্ঠ উইকেটে এ দুজনে এখন পর্যন্ত ৩২.৪ ওভারে ১৬০ রান যোগ করে দলকে এগিয়ে নিচ্ছেন।
এখানেই শেষ নয়, এ সেশনে টাইগার বোলারদের হতাশ করে ফিফটি আদায়ের পাশাপাশি দুজনেই পৌঁছে গেছেন সেঞ্চুরির কাছাকাছি। ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা ৮৩ রানে এবং কামিন্দু মেন্ডিস ৭৫ রানে ক্রিজে আছেন। দুজনেই সমান ৯টি করে চার মারলেও, ছক্কায় এগিয়ে কামিন্দু। দুটি ছক্কা হাঁকান এই বাঁহাতি ব্যাটার।
নয়াশতাব্দী/এনএস
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ