সিলেটে স্বাগতিক দলের খেলা না থাকায় দর্শকের সংখ্যাও ছিল কম। তবে এরমধ্যেই হয়ে গেলো এবারের বিপিএলের সর্বোচ্চ রানের ম্যাচটি। যে ম্যাচে আভিস্কা ফার্নান্দো ও কার্টিস ক্যাম্পারের ঝোড়ো ব্যাটিংয়ের পর দারুণ শুরু করেন তামিমরা। তবে ম্যাচটা শেষ পর্যন্ত জিততে পারেনি ফরচুন বরিশাল। তীরে এসেই তরী ডুবেছে তাদের।
সিলেটে শনিবার (২৭ জানুয়ারি) ফরচুন বরিশালকে ১০ রানে হারিয়েছে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। শুরুতে ব্যাট করতে নেমে ৪ উইকেট হারিয়ে ১৯৩ রান করে চট্টগ্রাম। জবাব দিতে নেমে ১৮৩ রানেই থেমে যায় বরিশাল।
এর আগে টস জিতে শুরুতে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় বরিশাল। প্রথম ওভারেই তাইজুল ইসলামের হাতে বল তুলে দেন তামিম ইকবাল। প্রথম বল ডট দিলেও পরে বাউন্ডারির হ্যাটট্রিক হজম করেন স্পিনার। তবে এরপরই স্লগ সুইপ করে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে স্কয়ার লেগে দাঁড়ানো দুনিথ ওয়েল্লালাগের হাতে ক্যাচ দেন তানজিদ হাসান। ৫ বলে ওই ১২ রানই করেন তিনি।
তৃতীয় ওভারে এসে তাইজুল উইকেট নেন আরও একটি। এবার ৮ বলে ৪ রান করা ইমরানুজ্জামানকে ফেরান বাঁহাতি স্পিনার। আভিস্কা ফার্নান্দোর পরের জুটিতে সঙ্গী হন শাহাদাৎ হোসেন দীপু। ৫৫ বলে লঙ্কান ওপেনারের ব্যাট থেকে আসে ৭০ রান। অপরপ্রান্তে ২৯ বলে ৩১ রান করে ফেরেন শাহাদাৎ।
সঙ্গী বদলালেও আভিস্কা ফার্নান্দোর রূপ বদলায়ানি। শুরুতে কিছুটা দেখে খেললেও পরে সময়ের সঙ্গে রানের গতি বাড়ান তিনি। নাজিবউল্লাহর সঙ্গে ৩৭ বলে ৬৮ রানের জুটিতে ১৯ বলে ৪৭ রান আসে আভিস্কার ব্যাট থেকে। নজিবুল্লাহ ফেরার পর কার্টিস ক্যাম্পার এসে ঝড় তোলেন।
৯ বলে ২৯ রান আসে তার ব্যাট থেকে। সেঞ্চুরি থেকে ৯ রান দূরে থাকা আভিস্কা খেলেন ৫০ বল, ৫ চার ও ৭ ছক্কা আসে তার ব্যাট থেকে। ৪ ওভারে ২৬ রান নিয়ে দুই উইকেট নেন তাইজুল ইসলাম, একটি করে উইকেট পান কামরুল ইসলাম ও ইয়ানিক ক্যারিয়াহ।
ব্যাটের মতো বল হাতেও সফল হন ক্যাম্পার। রান তাড়ায় নেমে অবশ্য শুরুটা ভালোই হয়েছিল বরিশালের। পাওয়ার প্লের ছয় ওভারে তারা তোলে ৬০ রান। যদিও একপ্রান্তে ঝড় তোলা আহমেদ শেহজাদ আউট হয়ে যান ১৭ বলে ৩৯ রান করে।
আরেক ওপেনার তামিম শুরু থেকেই পারছিলেন না রানের গতির সঙ্গে পাল্লা দিতে। ক্যাম্পারের বল আভিস্কা ফার্নান্দোর হাতে ক্যাচ দেন ৩০ বলে ৩৩ রান করে।
তার ফেরার দুই বল পরই আউট হয়ে যান সৌম্য সরকারও, ১৬ বলে ১৭ রান করে। এরপর অনেকটা একাই লড়ছিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। কিন্তু ১৬ বলে ৩৫ রান করে আল আমিন হোসেনের বলে তার দুর্দান্ত ক্যাচ নেন ক্যাম্পার। এরপরই কার্যত শেষ হয়ে যায় দলটির আশা।
অনেক্ষণ ক্রিজে থাকলেও আহামরি কিছু করতে পারেননি মুশফিকুর রহিম। ২২ বলে ২৩ রান করেন তিনি। এরপরও ম্যাচটা শেষ ওভারে নিয়ে উত্তেজনার পারদ চড়িয়ে তোলেন আব্বাস আফ্রিদি ও দুনিথ ওয়েল্লালাগে। এমনকি শেষ তিন বলে ১৭ রান দরকার ছিল তাদের।
মাত্র তিনটি ছক্কা! চতুর্থ বলে চার মেরে জমিয়েও তোলেন আফ্রিদি। তবে এরপরের বলে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দিয়ে বেঁচে গেলেও ম্যাচ বাঁচাতে পারেননি এই ব্যাটার। ফলে ১০ রানে হারতে হয় বরিশালকে।
তিন ওভারে স্রেফ ২০ রান দিয়ে ৪ উইকেট নেন ম্যাচ সেরা ক্যাম্পার। এছাড়া দুই উইকেট পান বিলাল খান।
এদিকে, এ নিয়ে তৃতীয় ম্যাচ হারল চট্টগ্রামের সমান ৪টি ম্যাচ খেলা বরিশাল। অন্যদিকে তিন জয় নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে উঠে বসেছে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স।
নয়াশতাব্দী/এনএস
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ