মাশরাফী বিন মোর্ত্তজার পরপরই অধিনায়ক হয়েছিলেন সাকিব আল হাসান। উইন্ডিজ সফরে নিজের প্রথম অধিনায়কত্বটা মাশরাফী উপভোগ করতে পারেননি। সেবার প্রথম টেস্টেই ইনজুরিতে পড়েন এই পেসার। সাকিব হয়েছিলেন অধিনায়ক।
সাকিব ক্রিকেটের সেই ধারাবাহিকতা রক্ষা করলেন রাজনীতিতে এসেও। গতকাল রোববার অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মাগুরা-১ আসন থেকে বড় ব্যবধানের জয় পেয়ে প্রথমবারের মতো সংসদে বসতে যাচ্ছেন সাকিব আল হাসান। এটি তার প্রথম মেয়াদে সংসদ সদস্য হওয়া।
অন্যদিকে মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা একইদিনে দ্বিতীয়বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। বাংলাদেশে ক্রিকেট থেকে রাজনীতিতে আসার সংস্কৃতি অবশ্য খুব বেশিদিন আগের না। এর আগে ক্রিকেটার নাইমুর রহমান দুর্জয় এসেছিলেন ক্রিকেট থেকে সংসদ সদস্যের পদে। তবে উপমহাদেশের প্রেক্ষাপটে এমন ঘটনা বেশ কয়েকবারই দেখা গিয়েছে। ভারত আর পাকিস্তানে বহু ক্রিকেটারই বাইশ গজের ক্রিকেট থেকে সংসদে এসেছেন। তাদের কেউ কেউ আবার মন্ত্রিত্ব বা দেশের প্রধানমন্ত্রীও হয়েছেন। পাকিস্তানের ইমরান খান নিজের রাজনৈতিক দল খুলেছিলেন। রাজনীতির মারপ্যাচে জেলেও গিয়েছেন। পেয়েছিলেন রাষ্ট্রীয় ক্ষমতাও। যদিও বর্তমানে ক্ষমতার মঞ্চ থেকে অনেকটা দূরেই আছেন তিনি।
ক্রিকেট থেকে রাজনীতির এই তালিকায় অবশ্য সবচেয়ে বেশি আসবে ভারতীয় ক্রিকেটারদের নাম। মনোজ তিওয়ারি থেকে শুরু করে বিনোদ কাম্বলি কিংবা গৌতম গম্ভীররা বেশ আগ থেকেই রাজনীতিতে সক্রিয়। এদের মধ্যে মনোজ তিওয়ারি পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের ক্রীড়ামন্ত্রীর পদে রয়েছেন। গৌতম গম্ভীর ভারতের লোকসভার সদস্য হয়েছে ২০১৯ সালে।
আবার ২০১৯ সালে পাঞ্জাব প্রদেশে পর্যটন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হয়েছিলেন নভোজিৎ সিং সিধু। তিনিও ভারতে নির্বাচিত সংসদ সদস্য হয়েছিলেন। কীর্তি আজাদ, চেতন চৌহান, মোহাম্মদ আজহারউদ্দীনরা রাজনীতিতেও বেশ সফল ছিলেন। প্রত্যেকেই নিজের ক্রিকেট ইমেজের সুবাদে লোকসভার সদস্য হয়েছিলেন।
পাকিস্তানেও ক্রিকেট থেকে রাজনীতিতে আসার ঘটনা বেশ সমৃদ্ধ। ইমরান খান নিঃসন্দেহে পাকিস্তানের ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় তারকা। ১৯৯২ বিশ্বকাপে তার নেতৃত্বেই বিশ্বকাপের শিরোপা ঘরে তোলে পাকিস্তান। সেই ইমরান খান ক্রিকেট শেষে সক্রিয় হয়েছিলেন রাজনীতিতে। তাতে বেশ সফলও তিনি। প্রধানমন্ত্রিত্ব পেয়েছিলেন। শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটের দুই দিকপাল সনাৎ জয়সুরিয়া এবং অর্জুনা রানাতুঙ্গা দুজনেই ১৯৯৬ সালের বিশ্বকাপ জেতা দলের সদস্য ছিলেন। ইমরান খানের মতোই বিশ্বকাপ জেতা অধিনায়ক ছিলেন রানাতুঙ্গা। অবসরের পরপরই ২০০১ সালে রাজনীতিতে নাম লেখান তিনি। ২০১৯ সালে নিজ দেশের ট্রান্সপোর্ট অ্যান্ড সিভিল এভিয়েশন মিনিস্ট্রির দায়িত্ব পালন করেন। এর আগে শ্রীলঙ্কা সরকারের মিনিস্ট্রি অব পেট্রোলিয়াম রিসোর্সেস ডেভলেপমেন্ট, মিনিস্টার অব পোর্টস অ্যান্ড শিপিং এবং ডেপুটি মিনিস্টার অব ট্যুরিজমের দায়িত্ব সামলান তিনি।
শ্রীলঙ্কার সাবেক অধিনায়ক ও দেশটির সর্বকালের সেরা অলরাউন্ডারদের একজন সনাথ জয়সুরিয়া। ২০১০ সালে জাতীয় নির্বাচনে নিজ শহর মাতারা থেকে নির্বাচিত হন জয়সুরিয়া। পরে পোস্টাল সার্ভিসেস, লোকাল গভর্নমেন্ট অ্যান্ড রুর্যাল ডেভেলপমেন্ট, প্রভিন্সিয়াল কাউন্সিল অ্যান্ড রিজিওনাল ডেভেলপমেন্টের ডেপুটি মিনিস্টার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
নয়া শতাব্দী/এসএ
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ