শঙ্কা ছিল হোয়াইটওয়াশ হওয়ার। তাই তো ম্যাচের আগের দিন দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছিল টাইগার অধিনায়ক নাজমুল হাসান শান্ত। এ যেন তারই ফসল। সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে বাংলাদেশের বোলিং তোপে দলীয় শতকও পূরণ করতে পারলো না স্বাগতিক নিউজিল্যান্ড। এতে করে ২০১৬ সালের পরে নিজেদের মাটিতে বাংলাদেশের বিপক্ষে আবারও অলআউট হলো।
নতুন বলে শরিফুল ইস্লাম-তানজিম সাকিবরা রীতিমতো আগুন ঝড়ালেন! তাদের পেসে পুড়ে ছাই হয়েছে কিউই ব্যাটাররা! পুরো দুল মিলে স্কোরবোর্ডে একশ রানও তুলতে পারেনি—অলআউট হয়েছে ৯৮ রানে। যা বাংলাদেশের বিপক্ষে ওয়ানডেতে তাদের সর্বনিম্ন সংগ্রহ, ঘরের মাঠে চতুর্থ সর্বনিম্ন সংগ্রহ এবং ২০০৭ সালের পর দেশের মাটিতে তাদের সর্বনিম্ন সংগ্রহ। বোলারদের এমন বীরত্বের পর বাকি কাজটা সহজেই সেরেছেন ব্যাটাররা।
নিউজিল্যান্ডের মাটিতে তাদের বিপক্ষে ২০তম ম্যাচে এসে প্রথম জয়ের দেখা পেলো বাংলাদেশ। সেটাও ৯ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে। শনিবারের এই সকালটা বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য নিশ্চয়ই রূপকথার! নেপিয়ারে টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে ৩১ ওভার ৪ বলে সবকটি উইকেট হারিয়ে ৯৮ রানে থামে নিউজিল্যান্ড।
দলের হয়ে সর্বোচ্চ ২৬ রান এসেছে উইল ইয়াংয়ের ব্যাট থেকে। বাংলাদেশের হয়ে ৩টি করে উইকেট শিকার করেছেন তানজিম সাকিব, শরিফুল ইসলাম ও সৌম্য সরকার। জবাবে খেলতে নেমে এক উইকেট হারিয়ে ১৫ ওভার ১ বলে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ। ৫১ রান করে অপরাজিত থেকেছেন নাজমুল হোসেন শান্ত।
বাংলাদেশ জয় পায় ৯ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে। এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে সতর্কতার সঙ্গে স্কোরবোর্ডে রান তুলতে থাকেন কিউই ওপেনার উইল ইয়ং ও রাচিন রবীন্দ্র। দলীয় ১৬ রানে প্রথম আঘাত হানেন তানজিম হাসান সাকিব। রাচিন রবীন্দ্রকে উইকেটের পেছনে মুশফিকের ক্যাচ বানিয়ে ফেরান তিনি। দলীয় ২২ রানে আগের ম্যাচের শতক না পাওয়া হেনরি নিকোলসকে অধিনায়ক শান্তর ক্যাচ বানিয়ে ফেরান সাকিব।
দলীয় ৫৮ রানে অধিনায়ক ল্যাথামকে বোল্ড করেন শরিফুল ইসলাম। অন্যদিকে উইকেটে থিতু হওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন উইল ইয়ং। কিন্তু দলীয় ৬১ রানের তার সে চেষ্টায় বাধ সাধেন শরিফুল। এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে নিউজিল্যান্ড। শেষ পর্যন্ত তারা মাত্র ৯৮ রান করতে সক্ষম হয়। কিউইদের চারজন ব্যাটারই দুই অঙ্কের ঘরে যেতে পেরেছিলেন। দলীয় সর্বোচ্চ রান আসে ইয়ংয়ের ব্যাট থেকে।
বাংলাদেশের হয়ে শরিফুল ইসলাম, তানজিম সাকিব ও সৌম্য সরকার ৩টি করে উইকেট লাভ করেন। ২০১৬ সালের পরে নিজেদের মাটিতে বাংলাদেশের বিপক্ষে আবারও অলআউট হলো কিউইরা। আর নিজেদের ইতিহাসে ৮ম বারের মতো একশ’র আগে আউট হলো তারা। বাংলাদেশের বিপক্ষে এটি তাদের সর্বনিম্ন স্কোর, সব মিলিয়ে দেশের মাটিতে এটি তাদের চতুর্থ সর্বনিম্ন স্কোর। ২০০৭ সালের পর দেশের মাটিতে যেটি তাদের সর্বনিম্ন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
নিউজিল্যান্ড : ৩১.৪ ওভারে ৯৮
(ইয়াং ২৬, ল্যাথাম ২১, ক্লার্কসন ১৬, অশোক ১০; তানজিম ৩/১৪, সৌম্য ৩/১৮, শরীফুল ৩/২২, মোস্তাফিজ ১/৩৬)
বাংলাদেশ : ১৫.১ ওভারে ৯৯/১
(নাজমুল ৫১*, এনামুল ৩৭, সৌম্য ৪ আহত*, লিটন ১*; ও’রুরক ১/৩৩)
ফল : বাংলাদেশ ৯ উইকেটে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ : তানজিম হাসান।
সিরিজ : নিউজিল্যান্ড ২–১ ব্যবধানে জয়ী।
নয়াশতাব্দী/আরজে
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ