হেনরি নিকোলসের হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হলেন সৌম্য সরকার। সাজঘরে ফেরার পুরো পথজুড়েই তার জন্য থাকলো কুর্ণিশ। করতালিতে ফেটে পড়লো নেলসনের সেক্সটন ওভাল। সমালোচনার তীব্রতাকে উপেক্ষা করেই তাকে রাখা হচ্ছিল স্কোয়াড ও একাদশে। সৌম্যও পারফর্ম করতে পারছিলেন না প্রায় কোথাও।
প্রথম ওয়ানডেতেও শূন্য রানে আউট হন, শেষ পাঁচ ইনিংসে সেটি তার তৃতীয় ডাক। সেখান থেকে দুর্দান্তভাবেই ঘুরে দাঁড়িয়েছেন সৌম্য। কোনো ব্যাটারই যখন উইকেটে থিতু হতে পারছিলেন না, নিউজিল্যান্ডের মাটিতে বাংলাদেশি ব্যাটার হিসেবে সবচেয়ে বড় ইনিংসটি খেলেছেন তিনি। নেলসনের স্যাক্সটন ওভালে নিউজিল্যান্ডের মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ। শুরুতে ব্যাট করতে নেমে ২৯১ রানে অলআউট হয়েছে বাংলাদেশ। সৌম্য ১৫১ বলে একাই করেছেন ১৬৯ রান।
বাংলাদেশের ব্যাটারদের আউট হওয়ার শুরুটা হয় এনামুল হক বিজয়কে দিয়ে। ইনিংসের পঞ্চম ওভারে দ্বিতীয় স্লিপে দাঁড়ানো টম লাথামকে ক্যাচ দেন তিনি। এডাম মিলনের বরে আউট হওয়ার আগে ১২ বলে করেন ২ রান। অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত এ ম্যাচেও রানটা বড় করতে পারেননি।
৯ বলে ৬ রান করে ফ্লিক করতে গিয়ে কাভারে দাঁড়নো হেনরি নিকোলসের হাতে ক্যাচ দেন শান্ত। লোপ্পা ক্যাচ দিয়ে এই ডাফির করা পরের ওভারে ফিরে যান লিটন দাসও। ১১ বলে ৬ রান করে উইল ইয়াংয়ের হাতে ক্যাচ দেন তিনি। ৪৪ রানে তিন উইকেট হারিয়ে ফেলা বিপদে পড়ে যায় বাংলাদেশ। তরুণ তাওহীদ হৃদয় সঙ্গী হন সৌম্য সরকারের।
তাদের দুজনের জুটিতে ধীরে ধীরে বড় হচ্ছিল রান। কিন্তু এবার দুর্ভাগ্যই সঙ্গী হয় বাংলাদেশের। ক্লার্কসনকে স্ট্রেইট ড্রাইভ করেন সৌম্য। সেটি বোলারের আঙুল ও ট্রাউজার ছুয়ে যায় নন স্ট্রাইক প্রান্তের স্টাম্পে। এগিয়ে থাকা হৃদয় আউট হয়ে যান ১৬ বলে ১২ রান করে।
তবে একপ্রান্তে ঠিকই হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন সৌম্য। শেষ অবধি এসে একজন ভালো সঙ্গীও পেয়ে যান সৌম্য। মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে মিলে দলের বিপর্যয় সামাল দেন সৌম্য। এ দুজনের জুটিতে ১০৮ বলে আসে ৯১ রান। ৫৭ বলে ৪৫ রান করে মুশফিক উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিলে এই জুটি ভাঙে। পরে সঙ্গী বদলালেও সৌম্যর রানের গতি থামেনি।২০১৮ সালের পর প্রথমবারের মতো ওয়ানডে সেঞ্চুরি তুলে নেন তিনি। সবমিলিয়ে ক্যারিয়ারে এটে তার চতুর্থ সেঞ্চুরি। ইনিংসের শেষ ওভারে গিয়ে যখন আউট হন, তখনও অনেক রেকর্ড তার নামের পাশে। ২০২০ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা লিটন দাসের ১৭৬ রানের ইনিংসের পর দেশের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ওয়ানডে ইনিংস এখন সৌম্যের।
নিউজিল্যান্ডের মাটিতে কোনো এশিয়ান ব্যাটারেরও সর্বোচ্চ রান তার ১৬৯। আগেরটি ছিল ২০০৯ সালে শচীনের করা ১৬৩ রান। নিজের ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ রানের ইনিংস খেলে ফেলার পর আউট হন সৌম্য। তার আগের সর্বোচ্চ ছিল ১৪৯। সৌম্য আউট হওয়ার পর দলের ইনিংসও আর বেশিদূর যায়নি। যোগ করতে পেরেছে কেবল এক রান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ: ৪৯.৫ ওভারে ২৯১/১০ (শরিফুল ১*, হাসান ০, রিশাদ ৬, সৌম্য ১৬৯, তানজিম ১২, মিরাজ ১৯, মুশফিক ৪৫, হৃদয় ১২, লিটন ৬, শান্ত ৬, বিজয় ২)
নয়াশতাব্দী/আরজে
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ