জেনারেল মোহাম্মদ এরশাদের স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে গণতন্ত্রের মুক্তির আন্দোলনের জন্য ঢাকার রাজপথে জীবন দিয়েছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের কর্মী শহীদ মোঃ নূর হোসেন। ১৯৮৭ সালের ১০ নভেম্বর ঢাকার রাজপথে তৎকালীন স্বৈরাচারী জালিম সরকারের নির্দেশে বিজিবি-পুলিশ বাহিনীর গুলিতে প্রাণ হারান মোঃ নূর হোসেনসহ আরও অনেকে।
তার উন্মুক্ত বুকে ও পিঠে লেখা ছিলো জ্বালময়ী বিপ্লবী স্লোগান, “স্বৈরাচার নিপাত যাক, গণতন্ত্র মুক্তি পাক”। সেই অবস্থায় তিনি ঢাকার জিরো পয়েন্টে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। তার এই আত্মদানে চলমান স্বৈরাচারী বিরোধী আন্দোলনকে বেগবান করে যার ফলশ্রুতিতে ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর এরশাদ সরকারের পতন ঘটে।
এই ঘটনার সূত্রপাত ঘটে মূলত তখনকার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি প্রেসনোটে, বিরোধীদের দেখামাত্র গুলি করার কথা বলা হয়। ১০ই নভেম্বরের ঘটনা সম্পর্কে সরকারি ওই প্রেসনোটে বলা হয় যে, “আন্দোলনের নামে পরিচালিত ধ্বংসাত্মক তৎপরতায় বিপন্ন হয়ে পড়া জনসাধারণের জানমাল ও সরকারি সম্পত্তি রক্ষা করতে সরকার দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।”
“শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষা ও জনজীবনে স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা সরকারের পবিত্র দায়িত্ব। সরকার আশা করেন যে, সংশ্লিষ্ট সকল মহল ভবিষ্যতে এ ধরণের কর্মতৎপরতা হতে বিরত থাকবেন”, উল্লেখ করা হয় ওই প্রেসনোটে।
অবশ্য নূর হোসেনের মৃত্যুর পরবর্তী কয়েকদিন পর্যন্ত তার নাম পরিচিত হয়ে ওঠেনি। বুকে-পিঠে গণতন্ত্রের বাক্য লেখা থাকলেও অনেকেই তার নাম জানতেন না। সেইদিন নূর হোসেনের পাশাপাশি বিডিয়ার-পুলিশের গুলিতে আরো দুইজন বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের কর্মীও নিহত হয়েছিলেন।
তবে বুকে পিঠে গণতন্ত্রের বাক্য লেখা, নূর হোসেনের কয়েকটি ছবি সংবাদ পত্রে ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে নূর হোসেন সামরিক শাসন বিরোধী বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের গণ-আন্দোলনের প্রতীক হয়ে ওঠেন।
লেখক: সভাপতি, বরগুনা জেলা ছাত্রলীগ।
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ