ঢাকা, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

তার দেখানো পথ ধরে বাকিরা হাঁটতেই পারে

প্রকাশনার সময়: ০৩ এপ্রিল ২০২৩, ১২:৫৮

দৈনিক আমাদের সময়ের সম্পাদকের দায়িত্ব পালনের সময় কবি আবু হাসান শাহরিয়ার চেয়েছিলেন, কবি রফিক আজাদকে ওই পত্রিকার ‘ভাষা সম্পাদকের’ পদে দায়িত্ব দিতে। যেন পত্রিকা আরো সুসম্পাদিত হয়, আরো শুদ্ধ বানানের শব্দ ও বাক্যে পাঠকের কাছে পৌঁছায়। ‘ভাষা সম্পাদকের’ পদে কোনো প্রাজ্ঞ সাংবাদিককে দায়িত্ব দেয়ার প্রচলন এ দেশের সংবাদমাধ্যমে নেই।

কোনো পত্রিকা, টিভি চ্যানেল এ পদে আজকেও কাউকে নিয়োগ দিলে তা মোটেও দোষের কিছু হবে না। শুদ্ধতাসহ পত্রিকা প্রকাশ হওয়া, ছোট ছোট ও সহজ বাক্যে প্রতিবেদন লেখার দিকনির্দেশনা, পরামর্শ দেয়ার বেলায় রফিক আজাদ অনন্য ছিলেন।

রফিক আজাদের কাছে প্রথম জীবনে এসব শেখার কথা আজও অকপটে স্বীকার করেন কালের কণ্ঠের প্রধান সম্পাদক, ঔপন্যাসিক ইমদাদুল হক মিলন। বিডিনিউজের জ্যেষ্ঠ সম্পাদক ছিলেন প্রয়াত সাংবাদিক আমানুল্লাহ কবির। পত্রিকাগুলোতে এ পদ নেই।

কলামিস্ট আবুল মোমেন প্রথম আলোর আবাসিক সম্পাদক, এখন এ পদে তিনি আছেন কী না, জানা নেই। দেশের আর কোনো টিভি চ্যানেল, পত্রিকায় এমন পদ নেই। তাই বলে ওই পদবি নিয়ে কথিত ট্রোলের কোনো যৌক্তিকতা নেই। মৃত্যুর আগে রাহাত খান ছিলেন প্রতিদিনের সংবাদের সম্পাদক। তাকে একদিন বিনয়ের সঙ্গে বলেছিলাম, আপনার মতো প্রবীণ সাংবাদিকদের পদবি সম্পাদকের বদলে ইমিরিটাস এডিটর (সাম্মানিক সম্পাদক) হলে শুনতে সম্মানজনক মনে হয়। তিনি সমর্থন দেন আমার মতো ক্ষুদ্রপ্রাণির কথায়। বলেন, পেশায় অবদান, অর্জন বিবেচনায় দেশের বেশ কয়েকজন বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ পদে সম্মানিত হওয়ার যোগ্যতা রাখেন।

প্রখ্যাত সাংবাদিক নাঈমুল ইসলাম খানের দৈনিক আমাদের নতুন সময়ে ‘ইমেরিটাস এডিটর’ পদবি নিয়ে যারা হঠাৎ ট্রোল করছেন, তাদের এ আনাড়িপনা আসলে ট্রলের মতো বিষয়। ট্রলের সঙ্গে যুক্ত ত্রিশ বছর পার করা একাধিক সাংবাদিকও আছেন। তাদের মাধ্যমে সাংবাদিকতায় এখনো নতুনত্ব সৃষ্টি, মননশীল কোনো কাজ করা সম্ভব হয়নি। হয়তো তাদের অপরিমেয় মেধার বিস্ফারণ ভবিষ্যতে বিকট শব্দে ঘটবে। অথচ ত্রিশ বয়সেই নাঈমুল ইসলাম পাঠকনন্দিত দৈনিক পত্রিকার নেতৃত্ব দিয়ে, সম্পাদনার মাধ্যমে গণমাধ্যমের ইতিহাসে জায়গা দখল করে নেন। এ দেশের সাংবাদিকতায় অনেক নতুনধারার প্রবর্তন তার হাত দিয়ে হয়, এ সত্য অস্বীকারের যুক্তি, আধাযুক্তি- কোনোটাই নেই।

মাত্র ত্রিশ বছর বয়সে মুক্তচিন্তার সাংবাদিকতায় সম্পাদক হিসেবে নাঈমুল ইসলাম খান সংবাদমাধ্যমে যে নতুনত্ব যোগ করেন, এমন আরেকজনকে এ দেশের সাংবাদিকতায় পেতে আরো কতো বছর অপেক্ষা করতে হবে, তা অনেক সাংবাদিকেরও জানা নেই। ঢাকায় অনেক সাংবাদিক আছেন, যাদেরকে ইমেরিটাস এডিটর হিসেবে পত্রিকা, টিভি চ্যানেলগুলোতে দায়িত্ব দিলে প্রতিষ্ঠান হিসেবে সেগুলোর মর্যাদা বাড়বে। একই সঙ্গে বরেণ্য ওই সাংবাদিকদেরকে সম্মান জানানো হবে। একটা বিশেষ বয়স থেকে এ দেশের সাংবাদিকদের জন্য ইমেরিটাস এডিটরের পদ থাকতেই পারে। যারা বলছেন, নাঈমুল ইসলাম খানের এ পদবি দেশে প্রথম, তাদের কথার রেশ ধরে বলি, তার দেখানো পথ ধরে বাকিরা হাঁটতেই পারে।

নয়াশতাব্দী/জেডএম

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ