অধিকাংশ উলামায়ে কেরামের মতে ইলেক্ট্রিক ব্যাট দিয়ে মশা মারা জায়েজ নেই। কারণ, ইলেক্ট্রিক ব্যাট দ্বারা মশা মারলে মশায় আগুন ধরে পুড়ে যায় এবং এতে মশাকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারা হয়। আর ছোট-বড় কোনো প্রাণিকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারা জায়েজ নেই। কেননা, আগুন দ্বারা শাস্তি দেওয়া কেবল আল্লাহ তাআলাই করবেন৷ এটা আল্লাহ তাআলার জন্য কেবল সুনির্ধারিত। সুতরাং যেহেতু ব্যাট দিয়ে মশা-মাছি পুড়ে যায়, তাই এই জাতীয় ব্যাট বা যন্ত্র ব্যবহার করে মশা-মাছি মারা জায়েজ হবে না। (বুখারি, হাদিস : ১০২৩)
আরেক হাদিসে আছে, আল্লাহর রাসুল (সা.) দেখলেন জনৈক সাহাবি পিঁপড়ার বাসা আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিয়েছেন। তখন রাসুল (সা.) বললেন, আগুনের প্রতিপালক ছাড়া আগুন দিয়ে অন্য কেউ শাস্তি দিতে পারে না৷’ (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস : ২৬৭৫)
কষ্টদায়ক প্রাণী হত্যা করা জায়েজ?
যে প্রাণী কষ্ট দেয় এবং ক্ষতিকর— সেটা হত্যা করা জায়জয। কোন প্রাণী যদি কষ্টদায়ক এবং ক্ষতিকর হয় তাহলে সেগুলো হত্যা করা যাবে। (বুখারি, হাদিস : ৩০১৬)
তবে এর জন্য বিকল্প রাস্তা গ্রহণ করা যেতে পারে। বিশেষ করে এমন পরিবেশ তৈরি করাই শ্রেয়, যা মশা জন্মের প্রতিবন্ধত হয়। এতে করে প্রাণী হত্যার বিধিনিষেধ হাদিসগুলোর সঙ্গে সঙ্গে পরিবেশ রক্ষার হাদিসগুলোর ওপরও আমল হয়ে যাবে।
হাদিস শরিফে এসেছে, ‘আবদুর রহমান ইবনে আবদুল্লাহ (রহ.) বলেন, একদা আমরা রাসুল (সা.)-এর সফর সঙ্গী ছিলাম। তিনি তার প্রয়োজনে অন্যত্র গেলেন। আমরা দুইটি বাচ্চাসহ একটি পাখি দেখতে পেয়ে বাচ্চা দুটোকে ধরে নিলাম। মা পাখিটা সাথে সাথে আসলো এবং পাখা ঝাঁপটিয়ে বাচ্চার জন্য অস্থিরতা প্রকাশ করতে লাগলো। রাসুল (সা.) ফিরে এসে বললেন, কে এর বাচ্চা নিয়ে এসে একে অস্থিরতায় ফেলেছে? বাচ্চাগুলো এদের মায়ের কাছে ফিরিয়ে দাও। তিনি আমাদের পুড়িয়ে দেওয়া একটা পিঁপড়ার ঢিবি দেখতে পেয়ে বললেন, কে এগুলো পুড়িয়েছে? আমরা বললাম, আমরা। তিনি বললেন, আগুনের রব ব্যতীত আগুন দিয়ে কিছুকে শাস্তি দেওয়ার কারো অধিকার নেই।’ (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস: ২৬৭৫)
ইলেক্ট্রিক ব্যাট ব্যাট দিয়ে মশা-মাছি মারা কিছু আলেমের মতে বৈধ। তাদের যুক্তি হলো, ইলেক্ট্রিক ব্যাট দিয়ে সরাসরি মশাকে পুড়িয়ে মারা হয় না। বরং প্রথমে কারেন্টের শক দিয়ে মারা হয়; তারপর আগুনে পুড়ে। আর কোনো প্রাণির মৃত্যুর পর তাকে আগুনের পোড়ানো বৈধ।
নয়া শতাব্দী/আরআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ