চুপ থাকা মানে দুনিয়াবি কথা থেকে চুপ থাকা। জবান সবসময় জিকির-ফিকিরে রাখা। রাসুল (সা.) অনেক বেশি চুপ থাকতেন। মুখ দিয়ে বের হওয়া কথাটা হয় সওয়াব হবে না হয় গুনাহ হবে। ‘মানুষ যে কথাই উচ্চারণ করে তা লিপিবদ্ধ করার কাজে সচেতন পাহারাদার তার কাছে রয়েছে।’ (সুরা : কাহফ, আয়াত : ১৮)
রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে আল্লাহ এবং আখিরাতের ওপর ঈমান রাখে তার উচিত ভালো কথা বলা অথবা চুপ থাকা।’ (সহিহ বুখারি)
রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে চুপ থেকেছে সে নাজাত পেয়েছে।’ (তিরমিজি)
রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে মানুষ তার জবান ও যৌন জীবনের জামিন হতে পারে, আমি তার জান্নাতের জামিন হবো। (বুখারি)
রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে নিরাপদ থাকতে চায় তার চুপ থাকা অতি জরুরি।’ (মুসনাদ আবি ইয়ালা)
রাসুল (সা.) বলেন, ‘জিহ্বা মানুষের অধিকাংশ পাপের মূল।’
‘চুপ থাকা একটা ইবাদত। চুপ থাকা আলেমের সৌন্দর্য আর জাহেলের পর্দা।’ (জামেউস সগির)। চুপ থাকা আখলুকসমূহের সরদার। (মুসনাদুল ফিরদাউস)
‘তোমার ওপর নেকির কথা বলা ছাড়া (বাকি সময়ে) বেশি চুপ থাকা জরুরি করে নাও। কারণ, এটি শয়তানকে তোমার নিকট থেকে দূর করে দেবে আর ইসলামের কাজে তোমার সহায়তাকারী হবে।’ (ইবনে হিব্বান)
‘হিকমতের ১০টি অংশ আছে ৯টি অংশ একাকীতে আর ১টি অংশ চুপ থাকাতে আছে।’ (মুসনাদুল ফিরদাউস)
‘হক কথা বলা ছাড়া চুপ থাক। তাহলে এর কারণে তুমি শয়তানের ওপর জয়ী হবে।’ রাসুল (সা.) বলেন, ‘৪টি বিষয় যা একজন মানুষের নিকট কমই থাকতে পারে। (ক) চুপ থাকা যা ইবাদতের খুঁটি। (খ) আল্লাহর নিকট মিনতি। (গ) দুনিয়ার প্রতি অনাসক্তি এবং (ঘ) অল্পে তুষ্টি।’
আল্লাহর নবী সুলায়মান (আ.) বলেন, ‘যদি কথা বলা রুপার মতো হয় তাহলে চুপ থাকা হচ্ছে সোনা।’
দাউদ (আ.) বলেন, ‘আমি কথা বলে অনেকবার লজ্জিত হয়েছি কিন্তু চুপ থেকে কখনো লজ্জিত হইনি।’
আবদুল্লাহ ইবনে মুবারক বলেন, ‘যদি আল্লাহর কাজ করার কথা বলা রুপা হয় তাহলে তার নাফরমানিমূলক কথাবার্তা থেকে চুপ থাকা সোনা।’
সুফিয়ান সাওরি (রহ.) বলেন, ‘দীর্ঘ চুপ থাকা ইবাদতের ভান্ডার।’
সুফিয়ান সাওরি (রহ.) বলেন, ‘ইবাদতের শুরু চুপ থাকা। অতপর ইলম হাসিল করা এরপর তা মনে রাখা তারপর তার ওপর আমল করা। সবশেষে তা ছড়িয়ে দেয়া।’
* পূর্বের জামানার নেক লোক কম কথা বলতেন।
* নারীর সৌন্দর্য লজ্জা আর বুদ্ধিমানের সৌন্দর্য হলো চুপ থাকা।
* চুপ থাকা নেক লোকদের দোয়া ও ভদ্রতার ভিত্তি।
* চুপ থাকার ছোট ফায়েদা হলো নিরাপদে থাকা, আর কথা বলা মানুষের ছোট লোকসান হলো লজ্জিত হওয়া।
আদবের ৪টি ভালো দিক : (১) তওবা, (২) নফসের বিপরীতে কাজ করা, (৩) চুপ থাকা এবং (৪) একাকী থাকা।
মুমিনের ৪টি ভালো দিক : (১) চুপ থাকা, (২) মিথ্যা বর্জন করা, (৩) পরহেজগারিতে ইখলাস এবং (৪) রিয়া থেকে বেঁচে থাকা।
* অসংযত জিহ্বা সকল ইবাদত বন্দেগি নষ্ট করে দেয়।
* চুপ থাকা উত্তম পরহেজগারি এর কারণে গুনাহ কম হয়।
* গীবত থেকে বেঁচে থাকার জন্য চুপ থাকা।
* আগে পরিমাপ করো তারপর কথা বলো এবং জবানের কৃপণতা করাই ভালো।
* সব কথার জবাব হয় না আর অপছন্দনীয় কথার জবাব তো চুপ থাকা।
* এক কবি বলেন, ‘মুত্তাকি ও পরহেজগার মানুষ নিজের জবানের হেফাজত করার কারণে কথা বলা থেকে বেঁচে থাকে যদিও সে সঠিক কথা বলতে পারে।’
নয়া শতাব্দী/আরআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ