আপনি কিছু যুবকের মাঝে আল্লাহর দীনের ব্যাপারে অনেক আগ্রহ দেখতে পাবেন, কিন্তু তার কাছে জ্ঞান নেই। আর সে না জেনেই তর্কে জড়ায়। এতে করে যা ঘটে তা হলো অপরপক্ষ তার মধ্যে সন্দেহ ঢুকিয়ে দেয়। আর সে এসবের জ্ঞানভিত্তিক কোনো উত্তর খুঁজে পায় না, যা দিয়ে সে এসব সংশয়ের জবাব দিতে পারে। আর এই সংশয়গুলো তা চিন্তার গভীরে প্রবেশ করে এবং দৃঢ় হয়।
আমি একটি ঘটনা বলব যা আমি ভুলবো না।
একবার আমরা বাহরাইনে ছিলাম কোরআনুল কারিমের প্রতিযোগিতায়। সেখানে সৌদি এবং অন্যান্য আরব দেশগুলোর প্রতিনিধিরা ছিল। প্রতিযোগিতার মাঝে একটা সময় আরব দেশগুলো থেকে এক ভাই দাঁড়ালো এবং ইমাম বুখারির (রহ.) বিরুদ্ধে কথা বলতে শুরু করল। সে ইমাম বুখারির নিন্দা করতে লাগলো খুবই বাজে ভাষায়। তাঁকে মিথ্যা এবং প্রতারণা ইত্যাদির অভিযোগ দিতে লাগলো।
আর মানুষের সামনে বললো, ‘আমি তোমাদের মধ্য থেকে যে কাউকে এবং যে কোনো প্রতিনিধি দলকে চ্যালেঞ্জ দিচ্ছি আমার কথার জবাব দেয়ার জন্য এবং আমার সঙ্গে বিতর্ক করার জন্য। আমি হোটেলের ‘অমুক’ জায়গায় থাকবো...’। অর্থাৎ লোকটি চ্যালেঞ্জ জানালো।
যখন আমরা হোটেলে গেলাম সেখানে দু’জন সৌদি ছিল। তারা বলল, ‘আমরা তার সঙ্গে বিতর্ক করতে চাই।’
একজন শায়খ তাদের বললেন, ‘আমি তোমাদেরকে না যাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছি। কেননা, তোমাদের কাছে জ্ঞান নেই। সে তাঁর (ইমাম বুখারির) ব্যাপারে যেসব অপবাদ ও সংশয় আরোপ করবে তোমাদের কাছে এসবের জ্ঞানভিত্তিক কোনো উত্তর নেই। এতে করে তোমরা শুধুমাত্র আবেগী জবাব দেবে।’
তারা শায়েখের এ নসিহত শুনলো না। অতঃপর তারা দুজন সেখানে গেল এবং ওই লোকের সঙ্গে তর্কে জড়ালো। তার সঙ্গে এক ঘণ্টার বেশি সময় থাকলো। এক ঘণ্টা পর আমাদের কাছে ফিরে আসলো।
আল্লাহর কসম, তারা যে দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে গিয়েছিল তা চেঞ্জ হয়ে গেল। তাদের চিন্তার মধ্যে সংশয় ঢুকে গেল। তারা বলল ‘আমরা ‘আকল’ নিয়ে গেলাম এবং ‘আকল’ নিয়ে ফিরে আসলাম। লোকটি এমন কথা বলল আমরা সেগুলোর কোনো উত্তর দিতে পারিনি।’
আমরা বললাম, ‘হ্যাঁ, তোমরা আবেগ নিয়ে গিয়েছিলে; জ্ঞান নিয়ে নয়।’
এখানেই দীনি জ্ঞানের গুরুত্ব। যদি আপনার কাছে কোনো বিষয়ে দৃঢ় জ্ঞান না থাকে তাহলে কারো সঙ্গে বাক-বিতণ্ডায় জড়াবেন না। যেন এটা আপনার জন্য কোনো মন্দের দরজা খুলে না দেয়।
মসজিদে হারামের ইমামের বক্তব্য থেকে অনুবাদ এম. রিদওয়ান হূদয়
নয়া শতাব্দী/জেআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ