আমাদের কাছে অনেকে ইসলামের বিভিন্ন বিষয়ে জানতে চান। যেমন একজন জানতে চেয়েছেন, স্ত্রীকে চুমু খেলে অজু ভাঙবে কি না?
প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক মুসলমানের ওপর নামাজ আদায় করা ফরজ। নামাজ আদায়ের পূর্বশর্ত হলো অজু করা। অজু ছাড়া নামাজ আদায় বিশুদ্ধ হবে না। অজু করার পর যদি কোনো কারণবশত অজু ভেঙে যায়, তাহলে নামাজের জন্য আবার অজু করতে হবে।
মৌলিকগত সাতটি কারণে অজু ভেঙে যায়। এ ছাড়া ভিন্ন কোনো কারণে অজু ভাঙবে না। কেউ যদি অজু অবস্থায় স্ত্রীকে চুমু খায়, তাহলে স্বামী-স্ত্রী কারও অজু ভাঙবে না। নামাজের জন্যও নতুন অজু করতে হবে না।
হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, ‘রাসুল (সা.) তাঁর স্ত্রী আয়েশাকে (রা.) চুম্বন করার পরে অজু না করেই নামাজ পড়িয়েছেন।’ (সুনানে তিরমজি, হাদিস : ৮৬)
আরেক হাদিসে আছে, উরওয়া (রা.) বলেন, আয়েশা (রা.) আমাকে বর্ণনা করেছেন যে, রাসুল (সা.) তাঁর কোনো এক স্ত্রীকে চুম্বন করলেন। তারপর নামাজের জন্যে বের হয়ে গেলেন; কিন্তু অজু করলেন না। উরওয়া (রা.) বললেন, রাসুলের (সা.) সেই স্ত্রী আপনি ছাড়া আর কেউ হবেন না। আয়েশা (রা.) তখন মুচকি হেসে দিলেন।’
এই হাদিসদ্বয়ের আলোকে বোঝা যায়, স্ত্রীকে চুমু খেলে অজু নষ্ট হয় না। ইমাম আবু হানিফা (রহ.)-সহ অন্য ইমামদের মতও হলো যে, চুম্বনের কারণে অজু করা আবশ্যক নয়।
এখানে অজু ভাঙার মৌলিক কারণগুলো উল্লেখ করা হলো-
এক. পায়খানা ও প্রস্রাবের রাস্তা দিয়ে কোনো কিছু বের হওয়া। যেমন বায়ু, প্রস্রাব-পায়খানা, পোকা ইত্যাদি। (হেদায়া, হাদিস : ১/৭)
দুই. রক্ত, পুঁজ বা পানি বের হয়ে গড়িয়ে পড়া। (হেদায়া : ১/১০)
তিন. মুখ ভরে বমি করা । (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১২২১)
চার. থুথুর সঙ্গে রক্তের ভাগ সমান বা বেশি হওয়া। (মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবা, হাদিস : ১৩৩০)
পাঁচ. চিৎ বা কাত হয়ে হেলান দিয়ে ঘুম যাওয়া। (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ২৩১৫)
ছয়. পাগল, মাতাল বা অচেতন হলে। (মুসান্নাফ আব্দুর রাজ্জাক, হাদিস : ৪৯৩)
সাত. নামাজে উচ্চস্বরে হাসি দিলে। (সুনানে দারা কুতনি, হাদিস : ৬১২)
নয়া শতাব্দী/আরআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ