ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

উপার্জনের বরকত হালাল রুজিতে

প্রকাশনার সময়: ০৮ অক্টোবর ২০২২, ০৯:০৭

রিজিক দুই প্রকার— ১. হালাল রিজিক, ২. হারাম রিজিক। কোনো ব্যক্তি যখন শরিয়তসম্মত পন্থায় সম্পদ উপার্জন করে তা ভোগ, করে তখন তাকে হালাল রিজিক বলে। এর বিপরীতে যখন কোনো ব্যক্তি অবৈধ পন্থায় কোনো সম্পদ উপার্জন করে তা ভোগ করে, তখন তা তার জন্যে হারাম রিজিক হিসেবে সাব্যস্ত হয়।

রিজিক হাসিলের ক্ষেত্রে আল্লাহ তায়ালা বৈধ পন্থা অবলম্বনের নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি সমস্ত মানুষকে হালাল রুজি ভক্ষণের নির্দেশ দিয়ে কোরআনে ঘোষণা করেন— ‘হে লোকসকল! তোমরা পৃথিবীর হালাল ও পবিত্র খাদ্যদ্রব্য থেকে ভক্ষণ কর, আর শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করো না। নিশ্চয় সে (শয়তান) তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।’ (সুরা বাকারা: ১৬৮)

এই আয়াতের শেষাংশে আল্লাহ তায়ালা হারাম রিজিক ভক্ষণের মাধ্যমে শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করতে নিষেধ করেছেন। অর্থাৎ যারাই হারাম রিজিক উপার্জন কিংবা ভক্ষণ করবে তারাই আল্লাহ তায়ালার আদেশ অমান্য করে শয়তানের অনুসরণ করবে, আর শয়তান হলো মানুষের প্রকাশ্য শত্রু।

মুমিনদের উদ্দেশ্যে আল্লাহ তায়ালা বলেন— ‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা যারা ঈমান এনেছো, তোমরা আমার দেয়া রিজিক হতে পবিত্র খাদ্যদ্রব্য আহার কর, আর আল্লাহ তায়ালার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর, যদি তোমরা তারই ইবাদত কর।’ (সুরা বাকারা: ১৭২)

সমস্ত নবী-রাসুলগণকেও তিনি একই নির্দেশ দিয়েছেন। কোরআনে এরশাদ হয়েছে— ‘হে রাসুলগণ! আপনারা পবিত্র খাদ্যদ্রব্য আহার করুন, আর সৎ কাজ করুন। আপনারা যা কিছু করেন, সে ব্যাপারে আমি অবহিত।’ (সুরা মু’মিনুন: ৫১)

রাসুল (সা.) হালাল রুজি উপার্জনকে ফরজ ঘোষণা করেছেন। তিনি বলেন— ‘হালাল রিজিক অন্বেষণ করা ফরজ কার্যসমূহের মধ্যে একটি অন্যতম ফরজ।’ (তাবরানি কাবির: ৯৯৯৩)

হালাল রিজিকের দ্বারা ইবাদতের তাওফিক লাভ হয়, অন্তরে নূর পয়দা হয়। ইলমে বরকত হয়, মনে সৎ সাহস সৃষ্টি হয়। পক্ষান্তরে হারাম রিজিক উপার্জনের কারণে অন্তর কালো হয়, ইবাদতে অনীহা আসে ও কাপুরুষতা বৃদ্ধি পায়।

ভারতের দেওবন্দে এক সাধারণ দিনমজুর ছিল। নাম তার শাহজী আব্দুল্লাহ। কাঁচা ঘাস বিক্রি করে সংসার চালাতেন। প্রতিদিন এক বোঝা ঘাস নিয়ে বাজারে এসে একদাম ছয় পয়সায় বিক্রি করতেন। নীতিবান লোক ছিলেন তিনি। প্রতিদিনের এ-আয়কে তিনি তিন ভাগে ভাগ করে দুই পয়সা গরিব-মিসকিন, অসহায় বিধবাদের মধ্যে বন্টন করে দিতেন। দুই পয়সা দিয়ে সংসারের খরচ চালাতেন, আর দুই পয়সা জমা করতেন। এভাবে বছরে সাত টাকার চেয়ে কিছু বেশি পয়সা জমা হতো। এই জমানো টাকার দ্বারা তিনি বছরে একবার আলিম-উলামাদেরকে দাওয়াত করে খাওয়াতেন।

দারুল উলূম দেওবন্দের সদরুল-মুদাররিসীন হজরত মাওলানা ইয়াকুব নানুতুবী (রহ.) বলেন, ‘আমরা সারাবছর অপেক্ষায় থাকতাম দিনমজুর শাহজীর ঘরে দাওয়াত কবে হবে। কেননা, সেখানে একবেলা খানা খেলে ৪০ দিন পর্যন্ত অন্তরে নূর থাকতো, মন চাইতো বেশি বেশি নামাজ, কোরআন তেলাওয়াত আর জিকির করি।’

নয়া শতাব্দী/জেআই

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ