ঢাকা, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জুমার দিনে অকল্পনীয় ফজিলতের যে আমল!

প্রকাশনার সময়: ০৭ অক্টোবর ২০২২, ০৯:১৭

আপনাকে যদি বলা হয় কোনো সাধারণ আমলের মাধ্যমে প্রতি কদমে এক বছর নফল রোজা, আর এক বছর নফল নামাজের সওয়াব আমাদের আমলনামায় লেখা হবে- আমরা কি কেউ তা মিস করব? নিশ্চয়ই না! জুমআর দিন ৫টি কাজের মাধ্যমে জুমার নামাজে অংশ নিলে আল্লাহ তায়ালা বান্দার প্রতি কদমে কদমে এক বছরের নফল রোজা ও এক বছরের নফল সালাতের সওয়াব দান করেন। সুবহানাল্লাহ!!!

অর্থাৎ কারো বাসা থেকে মসজিদের দূরত্ব যদি ১০০ কদম হয়, তাহলে এই পাঁচটা কাজ করলে সে ব্যক্তি ১০০ বছর নফল রোজা ও ১০০ বছর নফল সালাতের সওয়াব পেয়ে যাবে।

পাঁচটি কাজ হচ্ছে :

১। গোসল করা।

২। আগে আগে মসজিদে আসা।

৩। পায়ে হেঁটে মসজিদে আসা।

৪। ইমামের কাছাকাছি বসা।

৫। অনর্থক কথা না বলে মনোযোগ দিয়ে খুতবা শোনা।

আওস ইবনু আওস আস-সাক্বাফি (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন গোসল করবে এবং (স্ত্রীকেও) গোসল করাবে, প্রত্যুষে ঘুম থেকে জাগবে এবং জাগাবে (সকাল-সকাল ও আগে-আগে (মসজিদে যাওয়ার জন্য) প্রস্তুত হবে), জুমার জন্য বাহনে চড়ে নয় বরং পায়ে হেঁটে মসজিদে যাবে এবং কোনরূপ অনর্থক কথা না বলে ইমামের নিকটে বসে খুতবা শুনবে, তার (মসজিদে যাওয়ার) প্রতিটি পদক্ষেপ সুন্নত হিসেবে গণ্য হবে এবং প্রতিটি পদক্ষেপের বিনিময়ে সে এক বছর যাবত সিয়াম পালন ও রাতভর সালাত আদায়ের (সমান) সাওয়াব পাবে। (আবু দাউদ: ৩৪৫)

নারীরা যেভাবে এই সাওয়াব পাবেন

আমাদের পরিবারের নারী সদস্যগণ, যারা জুমআয় অংশ নিতে পারেন না। তাদের জন্য আলেমগণ পরামর্শ দেন তারা যেন বাসার পুরুষদেরকে এই আমলগুলো করতে উৎসাহ দেন ও উদ্বুদ্ধ করেন। পুরুষদেরকে এই ভালো কাজগুলোতে সহযোগিতা করার মাধ্যমে ইনশাআল্লাহ নারীরাও এই সওয়াবের অংশীদার হতে পারবেন।

জুমার দিনের আরো কিছু সুন্নত আমল

- গোসল করা।

- ফজরের ফরজ সালাতে সুরা সাজদা ও সুরা দাহর/ইনসান তিলাওয়াত করা।

- উত্তম পোশাক পরা।

- সুগন্ধি ব্যবহার করা।

- আগে আগে মসজিদে যাওয়া।

- সুরা কাহফ তিলাওয়াত করা (বৃহস্পতিবার সূর্যাস্তের পর থেকে শুক্রবার সূর্যাস্তের আগ পর্যন্ত যে কোনো সময়ে)।

- জুমার সালাতে মসজিদে গিয়ে কমপক্ষে দুই রাকাত সালাত আদায় করা।

- দুই খুতবার মাঝে দোয়া করা। এসময় দোয়া কবুল হয়। এছাড়াও সারাদিন সাধ্য মতো দোয়া করা।

- বেশি বেশি দরূদ পড়া।

- মনোযোগ দিয়ে খুতবা শোনা, খুতবার সময় কথা না বলা বা কোনো অনর্থক কাজ না করা। মোবাইল ফোনে ব্যস্ত থাকা এমন কি এ সময়ে মসজিদের দানবাক্স চালানোও অনর্থক কাজের অন্তর্ভুক্ত। খুতবার সময় কেউ কথা বলতে থাকলে তাকে নিষেধ করলেও তা অনর্থক কাজ হিসাবে গণ্য। আর খুতবার সময় অনর্থক কাজ করলে তা জুমাকে বরবাদ করে দেয়। তাই খুতবার খুতবা শোনা ব্যতীত সকল কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে। কোনো ক্রমেই এ সময় মসজিদের দানবাক্স চালানো যাবে না। খুতবার আগে বা সালাতের পরে দানবাক্স চালানো যেতে পারে।

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি উত্তমরূপে অজু করার পর জুমার সালাতে এলো, নীরবে মনোযোগ সহকারে খুতবা শুনল, তার পরবর্তী জুমা পর্যন্ত এবং আরো অতিরিক্ত তিন দিনের পাপ ক্ষমা করে দেয়া হয়। আর যে ব্যক্তি (অহেতুক) কঙ্কর স্পর্শ করল সে অনর্থক, বাতিল, ঘৃণিত ও প্রত্যাখ্যানযোগ্য কাজ করল।’ (মুসলিম: ১৮৭৩)

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেন, ‘জুমার দিন যখন তোমার পাশের মুসল্লিকে চুপ থাকতে বলবে, অথচ ইমাম খুতবা দিচ্ছেন, তা হলে তুমি একটি অনর্থক কথা বললে।’ (বুখারি: ৯৩৪)

নয়াশতাব্দী/জেডআই

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ