পবিত্র ঈদুল আজহা সমাগত। সৃষ্টিকর্তার সন্তুষ্টি বিধানে কেউ একা কোরবানি দিবেন, কেউ আবার অন্যের সঙ্গে ভাগে কোরবানি করবেন। ভাগে কোরবানি করার ব্যাপারে ইসলামে সুনির্দিষ্ট বিধান রয়েছে।
প্রথম কথা হচ্ছে গরু, মহিষ ও উট এই জাতীয় যে পশুগুলো কোরবানির জন্য বৈধ, সেগুলোর মধ্যে ভাগে কোরবানি দেওয়া জায়েজ। রাসুল (সা.) সাত ভাগ পর্যন্ত কোরবানি দেওয়া অনুমোদন করেছেন।সাতের অধিক শরীক হলে কারো কোরবানি সহীহ হবে না। (বাদায়েউস সানায়ে ৫/৭০,কাযীখান ৩/৩৪৯)
সহিহ মুসলিমের একটি হাদিস দ্বারা বোঝা যায়, রাসুল (সা.) উটের মধ্যে ১০ ভাগ পর্যন্ত কোরবানি দেওয়ার অনুমোদন দিয়েছেন। সুতরাং এ ক্ষেত্রে ভাগে কোরবানি করা জায়েজ, নাজায়েজ নয়।
হযরত ইবনে আব্বাস (রাযি:) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন: আমরা সফরে ছিলাম। এমতাবস্থায় কুরবানীর সময় উপস্থিত হল। তাই আমরা একটি গাভীতে সাত জন শরীক হলাম এবং উটে দশ জন। [সূত্রঃ তিরমিযী, হাদীস ১৫৩৭; নাসাঈ, হাদীস ৪৪০৪; ইবনু মাজাহ, হাদীস ৩১৩১/ মুসনাদ আহমদ ৩/৩০৩]।
এটি প্রায় সব ওলামায়ে কেরামের বক্তব্য। কিছু বিক্ষিপ্ত বা বিচ্ছিন্ন বক্তব্য রয়েছে, যা মোটেও গ্রহণযোগ্য নয় অথবা যার পক্ষে সামান্যতম কোনও বর্ণনা নেই।
কেউ কেউ বলেছেন যে, ভাগে কোরবানি দেওয়া জায়েজ নয়। জাবের ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) হতে বর্ণিত, সহিহ মুসলিমের রেওয়াতের মধ্যে স্পষ্ট করে উল্লেখ রয়েছে রাসুল (সা.) ভাগে কোরবানি দেওয়ার ব্যাপারে রুখসাত (অনুমোদন) দিয়েছেন।
শরিকে কোরবানি করলে কারো অংশ এক-সপ্তমাংশের কম হতে পারবে না, এমন হলে কোনও শরিকেরই কোরবানি সহীহ হবে না। (বাদায়েউস সানায়ে ৫/৭১)
যদি কেউ গরু, মহিষ বা উট একা কোরবানি দেওয়ার নিয়্যাতে কিনে আনে আর সে ধনী হয় তাহলে তার জন্য এ পশুতে অন্যকে শরিক করা জায়েজ হলেও শরিক না করে একা কোরবানি করাই শ্রেয়। শরিক করলে ওই অংশের টাকা সদকা করে দেওয়া উত্তম।
আর যদি ওই ব্যক্তি গরিব হয়, যার ওপর কোরবানি করা ওয়াজিব নয়, তাহলে যেহেতু কোরবানির নিয়্যাতে পশুটি ক্রয় করার মাধ্যমে লোকটি তার পুরোটাই আল্লাহর জন্য নির্ধারণ করে নিয়েছে, তাই তার জন্য এ পশুতে অন্যকে শরীক করা জায়েজ নয়। যদি শরিক করে তবে ওই টাকা সদকা করে দেওয়া জরুরি। গরিব ব্যক্তি কোরবানির পশুতে কাউকে শরিক করতে চাইলে পশু ক্রয়ের সময়ই নিয়্যাত করে নিতে হবে। (হেদায়া ৪/৪৪৩, কাযীখান ৩/৩৫০-৩৫১)
নয়া শতাব্দী/এসইউ
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ