ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১, ১৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব জনগণের আমানত

প্রকাশনার সময়: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:৩৪

রবিউল আউয়াল মাস চলছে। আমরা এ মাসে বেশি বেশি সিরাত পড়ব এবং রাসুল (সা.)কে জানব আর তাঁর সুন্নাহর আলোকে জীবন গড়ার চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ।

অযোগ্যদের পদায়ন মানে ধ্বংস

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসুল (সা.) একদিন লোকদের মাঝে কথা বলছিলেন। হঠাৎ একজন বেদুঈন (গ্রাম্য আরব) এসে রাসুল (সা.)কে জিজ্ঞেস করলেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ (সা.) কেয়ামত কবে হবে? রাসুল (সা.) উত্তরে বললেন, যখন আমানতের খেয়ানত হবে তখন কেয়ামতের অপেক্ষা করো। লোকটি আবার প্রশ্ন করল, ইয়া রাসুলুল্লাহ (সা.) আমানতের খেয়ানত বলতে আপনি কী বোঝাতে চাইছেন? রাসুল (সা.) বললেন, ‘যখন নেতৃত্ব ও দায়িত্ব অর্পণ করা হবে অযোগ্য ব্যক্তির হাতে, তখন কেয়ামতের অপেক্ষায় থাকো।’ (বুখারি ও মুসলিম)

অর্থাৎ যখন আমানতের খেয়ানত হবে, তখন আর কোনো কিছু সংঘটিত হওয়া বাকি থাকবে না কেয়ামত ছাড়া। আর আমানতের খেয়ানত হবে তখন, যখন কোনো অযোগ্য লোকের কাছে নেতৃত্ব, কর্তৃত্ব ও দায়িত্ব দেয়া হবে। অযোগ্য লোক তার দায়িত্ব পেয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করবে, মানুষের ভালোর পরিবর্তে ক্ষতি করবে, সফল নয় ব্যর্থ হবে, জাতির জন্য কল্যাণের পরিবর্তে বোঝা হয়ে দাঁড়াবে।

আমাদের দেশের বর্তমান সময়ের সঙ্গে হাদিসটি খুব প্রাসঙ্গিক। খেয়াল করলে দেখবেন, রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে নিম্নস্তর পর্যন্ত অধিকাংশ পদে বসেছিল অযোগ্য লোকরা। কারণ তাদের যোগ্যতার ভিত্তিতে নিয়োগ দেয়া হয়নি। বেশিরভাগ নিয়োগ হয়েছিল অসৎ পন্থায়। চাটুকারির যোগ্যতায়। বিগত সরকার দলপ্রীতি আর চাটুকারিতার ভিত্তিতেই তাদেরকে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ দিয়েছে। ফলে দেশের মেরুদণ্ড ভেঙে গেছে। কথায় আছে— Excess of everything is bad. (অতিরিক্ত সব কিছুই খারাপ)। বিগত সরকার যে চাটুকারিতাকে প্রাধান্য দিয়েছিল যোগ্যতার চেয়ে, সেই চাটুকারদের কারণেই তার পতন হয়েছে।

আমানতের নানা প্রকার

বিভিন্ন ধরনের আমানত রয়েছে। যেমন— আর্থিক আমানত, কথার আমানত, পরামর্শের আমানত, নসিহার আমানত, গোপনীয়তা রক্ষার আমানত, সম্মানের আমানত, দায়িত্বের আমানত, দ্বীন প্রতিষ্ঠার আমানত, রাষ্ট্রীয় সম্পদের আমানত, ন্যায় বিচারের আমানত, চাকরির আমানত, নেতৃত্বের আমানত, জনগণের আমানত, স্বামী-স্ত্রীর আমানত, পরিবার পালনের আমানত ইত্যাদি। প্রত্যেকটা আমানতের ব্যাপারে কথা ওইটাই— অযোগ্য ব্যক্তির কাছে গেলে তার খেয়ানত হবে আর খেয়ানত হলে সেখানে কোনো কল্যাণ অবশিষ্ট থাকে না।

আমরা জানি বাংলাদেশ পুনর্গঠন হচ্ছে। গত ৫ সেপ্টেম্বর বিপ্লবোত্তর সরকারের এক মাস পূর্ণ হলো। বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন জনকে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। পূর্বের নিয়োগ বাতিল করা হচ্ছে। নতুন নিয়োগের জন্য নানা রকম সুপারিশ ও তদবির চলছে। তাই এ মুহূর্তে আমাদের জ্ঞান রাখতে হবে, অনুধাবন করতে হবে এবং স্মরণ রাখতে হবে— দায়িত্ব হলো জনগণের আমানত। আর আমাদেরকে কেয়ামতের দিন আমানত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হবে। আর আমানত লঙ্ঘিত হলে কোনো সমাজ বা রাষ্ট্রে কল্যাণ থাকে না।

জনগণের আমানত

আল্লাহ এবং আল্লাহর রাসুল (সা.) কোরআন ও হাদিসে বারবার আমাদেরকে আমানতের ব্যাপারে সতর্ক করেছেন। বিভিন্ন রকম আমানতের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আমানত হলো রাষ্ট্রীয় আমানত যা মূলত জনগণের আমানত।

ধরুন আপনাকে আমি একটা কাজের দায়িত্ব দিলাম, আপনি দায়িত্বে অবহেলা করলেন, তাতে শুধুমাত্র আমার ব্যক্তিগত ক্ষতি হলো।

অন্যদিকে কোনো রাষ্ট্রের দায়িত্ব পাওয়ার পর সেই দায়িত্বের ব্যত্যয় ঘটলে, অবহেলা করলে পুরো জাতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাতে রাষ্ট্রের অবকাঠামো ভেঙে যায়, রাষ্ট্র ধ্বংসের দাঁড় প্রান্তে চলে যায়। যা আমরা বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় দেখছি বিগত দিনগুলোতে রাষ্ট্রের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে কী পরিমাণ দুর্নীতি হয়েছে। তা হয়েছে শুধুমাত্র আমানতের খেয়ানতের কারণে। অযোগ্যদের পদায়ন এবং যোগ্যতা নয়, চাটুকারিতার গুণে নিয়োগ দেয়ার কারণে।

রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব বিশাল আমানত

আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি তোমার কাছে আমানত রেখেছে, তার আমানত তাকে ফেরত দাও। আর যে ব্যক্তি তোমার আমানত আত্মসাৎ করেছে, তুমি তার আমানতও আত্মসাৎ করো না।’ (আবু দাউদ, তিরমিজি)

উল্লিখিত হাদিসের ব্যাখ্যায় এসেছে, উদাহরণস্বরূপ— কোনো লোক আপনার কাছ থেকে টাকা নিয়ে আর ফেরত দেয়নি, ঘটনাক্রমে একসময় ওই লোকের টাকা আপনার কাছে এসেছে। এখন আপনি তার টাকাটা দেবেন? প্রতিশোধ হিসেবে তো আপনি দেবেন না। এ হাদিসে বলা হচ্ছে, আপনি এমনটি করতে পারবেন না। যে আপনার সঙ্গে খেয়ানত করেছে তার সঙ্গেই খেয়ানত জায়েজ নেই, তাহলে সাধারণ মানুষের সঙ্গে আপনার খেয়ানত কত বড় অপরাধ চিন্তা করুন। আল্লাহ তায়ালা বলেন, আমি আসমান, জমিন ও পর্বতমালার প্রতি এ আমানত অর্পণ করেছিলাম, তারা এটা বহন করতে অস্বীকার করল এবং ওতে শঙ্কিত হলো, কিন্তু মানুষ ওটা বহন করল; সে তো অতিশয় জালিম, অতিশয় অজ্ঞ।’ (সুরা আহযাব: ৭২)

তাফসিরে কুরতুবিতে এ আয়াতের ব্যাখ্যায় ইবনে আব্বাস (রা.) বলেছেন, আল্লাহ তায়ালা জান্নাতে, আদম (আ.)কে বললেন, আমানত তো অনেককেই দিতে চাইলাম, কেউ নিল না, তুমি নেবে? যদি আমানত রক্ষা করতে পারো তাহলে জান্নাত আর খেয়ানত করলে শাস্তি। তো আদম (আ.) বললেন, দিন। আদম তো মানুষ। তাই মানবসুলভ আচরণ থেকেই তিনি আমানত চেয়ে নিলেন। তারপর আদম (আ.) জোহরের সময় থেকে আসরের সময় না আসতেই ভুলে গেলেন। তার ওপর অর্পিত আমানতের খেয়ানত করে ফেললেন। নিষিদ্ধ গাছের ফল খেয়ে ফেললেন।

দায়িত্ব পালনের যোগ্য কে?

আমানত বড় কঠিন জিনিস। যে তা নিজের কাঁধে তুলে নেবে সে ভুলের মধ্যে পড়বে। তা থেকে বাঁচার উপায় কী? আমানত তথা দায়িত্ব গ্রহণ থেকে দূরে থাকতে হবে। তাহলে যোগ্য লোককে কিভাবে পাওয়া যাবে? যে দায়িত্ব নিতে চায় না তাকে দায়িত্ব দিতে হবে। তার মধ্যে তিনটি গুণ থাকতে হবে— ১) যোগ্যতা, ২) সততা, ৩) সৎ সাহস।

এ তিনটি গুণ যার মধ্যে পাওয়া যাবে, তাকে খুঁজে এনে দায়িত্ব দিতে হবে। এর একটি অনুপস্থিত থাকলে তাকে দায়িত্ব দেয়া যাবে না। এখানে কোনো প্রকার স্বজনপ্রীতি করা যাবে না। দুর্নীতি বা দুই নম্বরি করা যাবে না।

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘ভালো মন্দ মানুষের মধ্যে থাকতেই পারে। কিন্তু দুইটা জিনিস তার মধ্যে থাকতেই পারে না। যদি থাকে তাহলে সে মুমিনই না। সেই দুইটা জিনিস হলো— ১) আমানতের খেয়ানত করা এবং ২) মিথ্যা কথা বলা।’ (মুসনাদে বুজ্জার, মুসনাদে আবি ইয়ালা)

অপর হাদিসে, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘তোমার মাঝে কোনো ভালো গুণ থাক আর না থাক, কিছু আসে যায় না। তবে এ চারটা জিনিস তোমাকে শ্রেষ্ঠ মুমিন বানাবে এবং জান্নাত পর্যন্ত পৌঁছে দেবে। গুণ চারটি হলো— ১) আমানত রক্ষা করা, ২) সত্য কথা বলা, ৩) উত্তম আখলাক (চরিত্র) ও ৪) হালাল খাবার খাওয়া। (মুসনাদে আহমাদ)

হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোতে দেখুন, সেখানে কমিশন আর গিফট বাণিজ্যের রমরমা। ব্যবসার আড়ালে মানব সেবার করুণ দশা। বিএসটিআই তাদের দুর্নীতির কারণে আসল আর ভেজাল চেনা বড় দায়। তাদের কারণে অসাধু ব্যাবসায়ীরা ভেজালকে বৈধ বানিয়ে বাজারজাত করছে দেদারসে, এটা খেয়ানত। আবার দুদক, কী বলব? সরিষার মধ্যেই ভূত। এই হলো বাংলাদেশের অবস্থা!

উপরোক্ত চারটি বৈশিষ্ট্য আমাদের সমাজ ও রাষ্ট্রে বিদ্যমান না থাকায় সমাজ ও দেশের প্রতিটা জায়গায় অরাজকতা ও দুর্নীতির করাল গ্রাস। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যদি কেউ শহীদ হয় তাহলে তার সব গুনাহ স্বয়ংক্রিয়ভাবে ক্ষমা হয়ে যায়। কিন্ত তার আমানতের খেয়ানতের গুনাহ মাফ হবে না।’ অন্য বর্ণনায়, ‘অন্যের হক নষ্ট করলেও তার গুনাহ মাফ হবে না।’ (আল-হাদিস)

আমানতের ভয়াবহতা

আনাস (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) এমন খুতবা খুব কম দিয়েছেন, যাতে এ কথা বলেননি— ‘যার আমানতদারী নেই তার ইমান নেই এবং যার ওয়াদা-অঙ্গীকারের মূল্য নেই তার দ্বীন-ধর্ম নেই।’ (মুসনাদ আহমাদ)

আর রাষ্ট্রীয় আমানতের প্রসঙ্গে কী বলব। এটা তো আরো ভয়ঙ্কর। নতুন বাংলাদেশে আমাদের কথা— প্রশাসনে আগে যা হয়েছে তার পুনরাবৃত্তি যেন না ঘটে। বর্তমানে যারা দায়িত্ব পাচ্ছেন এবং যারা নিয়োগ দিচ্ছেন, সবাইকে মনে রাখতে হবে— এটা বড় একটা আমানত। এ নিয়োগ প্রক্রিয়ার পুরো প্রসেসই জনগণের আমানত। নিয়োগপ্রাপ্ত কোনো লোক যদি তার কাজে ব্যর্থ হয়, তার দ্বারা দেশের ক্ষতি হয়, মানুষের জানমাল হুমকির মুখে পড়ে, তাহলে ওই নিয়োগের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের কেয়ামতের দিন জবাবদিহির কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। কেয়ামতের দিন তাদের কাঁধে একটা পতাকা টানিয়ে দেয়া হবে, যাতে লেখা থাকবে ‘আমানতের খেয়ানতকারী’ গাদ্দার। ভাই, রাষ্ট্রীয় আমানত বড় কঠিন আমানত।

রাসুলুল্লাহ (সা.) আমানতের ভয়াবহতা বোঝাতে গিয়ে সুচও এদিক-সেদিক না করার জন্য তাগিদ করেছেন। আদি বিন আমিরাহ কিন্দি (রা.) বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)কে বলতে শুনেছি, তোমাদের মধ্যে যাকে আমরা কোনো চাকরি দান করলাম, অতঃপর সে একটি সুচ বা তার থেকে বড় কিছু গোপন (করে আত্মসাৎ) করল, সে আসলে খেয়ানত করল এবং কেয়ামতের দিন সে তা নিয়ে উপস্থিত হবে।’ (মুসলিম, আবু দাউদ)

দায়িত্ব বড় ভয়ঙ্কর বিষয়

একদিন আবু যর গিফারি (রা.) রাসুল (সা.)-এর কাছে গিয়ে বললেন, হে আল্লাহর রাসুল (সা.), আপনি অনেককেই দায়িত্ব দিচ্ছেন। আমাকেও যদি কোনো দায়িত্ব দিতেন। রাসুল (সা.) বললেন, ‘হে আবু যর, তুমি ব্যক্তিত্বের দিক থেকে অনেক উঁচু মানের, তবে তুমি নরম স্বভাবের মানুষ। আর আমানত বড় কঠিন জিনিস। যার কারণে কেয়ামতের দিন মানুষ লাঞ্ছনা ও ভর্ৎসনার শিকার হবে। এ দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে কখনো কখনো কঠোরতা অবলম্বন করতে হয়। তুমি সেটা হয়তো পারবে না, আর না পারলে কেয়ামতের দিন তোমাকে লাঞ্ছনার শিকার হতে হবে, অপমানিত হতে হবে। রাসুল (সা.) বললেন, তুমি সেফ জোনে আছো, সেখানেই থাকো। আবু যর (রা.) জীবদ্দশায় আর কখনো কোনো দায়িত্বশীল পদে আসেন নাই। (আল-হাদিস)

বলবেন তাহলে ভালো বা যোগ্য লোকরা কি অসৎ ব্যক্তিদের জন্য সব কিছু ছেড়ে দেবে? না, যোগ্য লোকরা যোগ্য লোকদের খুঁজে বের করে সুপারিশের মাধ্যমে নিয়োগ করাবে, নিয়োগ করবে।

দায়িত্ব জিনিসটা এমনই ভয়াবহ। যা থেকে দূরে থাকা প্রয়োজন। অথচ আমাদের কাছে পুরোটাই বিপরীত, পদ একবার পেলে আর ছাড়ে কে? দেশের একদম সর্বোচ্চ ও শীর্ষ স্থানীয় থেকে সামাজিক প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে কেউ দায়িত্ব একবার পেলে আর ছাড়তে চায় না। যেভাবেই হোক আমাকে থাকতেই হবে আমার পদে। এটা ঠিক নয়, এটা আমানতের খেয়ানত।

দায়িত্বশীলতা এমন বস্তু, এ দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আমানতদারীতে শ্রেষ্ঠতম ব্যক্তি স্বয়ং আল্লাহর রাসুল (সা.) নিজেও সমালোচনার স্বীকার হয়েছেন। হাফস ইবনে উমর (রহ.) আব্দুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, একদা নবী (সা.) গনিমতের মাল বণ্টন করে দিলেন। তখন এক ব্যক্তি মন্তব্য করল, এটা এমন বাটোয়ারা হলো, যার মধ্যে আল্লাহর সন্তুষ্টির খেয়াল রাখা হয়নি। আমি তা নবী (সা.)কে জানালে তিনি রাগান্বিত হলেন। এমনকি আমি তাঁর চেহারার মধ্যে রাগের আলামত দেখতে পেলাম। তিনি বললেন, ‘মুসা (আ.) এর প্রতি আল্লাহ রহম করুন, তাকে এর চাইতে অধিকতর কষ্ট দেয়া হয়েছে, কিন্তু তিনি ধৈর্যধারণ করেছেন।’ (বুখারি)

এ ঘটনাগুলো এই ইঙ্গিত বহন করে, দায়িত্ব বড় ভয়ঙ্কর বিষয়। আপনি কাউকে খুশি করতে পারবেন না। দায়িত্ব নিলে আপনাকে নিয়ে মানুষ খারাপ মন্তব্য করবে, লাঞ্ছনা, বঞ্চনা, সমালোচনার শিকার হতে হবে আপনাকে। আরো একটি হাদিসে রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘একজন মানুষকে এক/দুই জন লোকেরও যদি দায়িত্ব দেয়া হয় আর সেই লোক তার দায়িত্বের ব্যাপারে অবহেলা করে, তাদের প্রতি জুলুম করে, আমানতের খেয়ানত করে। আর এমতাবস্থায় সে মারা যায়- তাহলে তার জন্য আল্লাহ তায়ালা জান্নাত হারাম করে দেবেন। (আল-হাদিস)

দায়িত্ব দিন যোগ্য ব্যক্তিকে

সুতরাং দায়িত্ব নেয়া থেকে বিরত থাকতে হবে, আগ বাড়িয়ে দায়িত্ব নেয়া যাবে না। আর যার মধ্যে যোগ্যতা, সততা, সাহস ও নেতৃত্বের গুণাবলি আছে এমন লোককে খুঁজে বের করে, তাদের রিকোয়েস্ট করে দায়িত্বে বসাতে হবে। অভিজ্ঞতার আলোকে নিজ নিজ স্থানে নিয়োগ করলে তবেই তাদের দ্বারা ভালো কিছু আশা করা যাবে। তাহলে ইনসাফও কায়েম হবে, দেশেও প্রতিষ্ঠিত হবে প্রকৃত কল্যাণ।

০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ টঙ্গীর আন-নূর জামে

মসজিদে কৃত জুমাপূর্ব আলোচনা থেকে

অনুলিখন— মুহা. আব্দুল খালেক আশিক

নয়াশতাব্দী/জিএস

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ