ঢাকা, রোববার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১, ৪ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

মহররম, হিজরত ও হিজরী সনের তাৎপর্য

প্রকাশনার সময়: ১২ জুলাই ২০২৪, ০৯:২৮

খলিফা ওমর (রা.)-এর খেলাফতকালে যখন দুনিয়াব্যাপী রাজ্য প্রসারিত হচ্ছে, তখন কোনো রাজ্যের গভর্নর আবু মূসা আশআরি (রা.) খলিফা ওমর (রা.)কে লেখেন— ‘আপনি আমাদের নিকটে যেসব চিঠি পাঠান তাতে কোনো তারিখ থাকে না। যাতে সমস্যা সৃষ্টি হয়। আপনি যদি আমাদের নিজস্ব কোনো বর্ষ গণনা শুরু করেন তাহলে সুবিধা হয়।

এরই প্রেক্ষিতে ওমর (রা.) পরামর্শ সভা ডাকেন। সেখানে কেউ রাসুল (সা.)-এর জন্মদিন থেকে বর্ষ গণনার পরামর্শ দিলেন। ওমর (রা.) সেই পরামর্শ গ্রহণ না করে বলেন, খ্রিস্টানরা যিশু খ্রিস্টের জন্মের দিনকে কেন্দ্র করে তাদের Calendar চালু করেছে। আমরা তো ওদের অনুসরণ করব না। আরেকজন রাসুল (সা.)-এর ওফাত দিবসকে কেন্দ্র করে করার প্রস্তাব দেন। এমতটিও ওমর (রা.) অগ্রাহ্য করলেন। কেননা এটাও অন্য জাতির সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ। তারা প্রতি বছর মৃত্যুদিবস পালন করে, যা করতে রাসুল (সা.) আমাদের নিষেধ করেছেন।

কারণ মুসলমানদের শোক সর্বোচ্চ তিন দিন। উম্মে আতিয়্যা (রা.) বলেন, ‘কোনো মৃত ব্যক্তির জন্য আমাদের তিন দিনের বেশী শোক পালন করা থেকে নিষেধ করা হতো। কিন্তু (স্ত্রীদের) স্বামীর মৃত্যুর ক্ষেত্রে চার মাস ১০ দিন (শোক পালনের অনুমতি ছিল)। (বুখারী: ৩১৩)

অপর এক জন বললেন, রাসুল (সা.)-এর ওপর প্রথম ওহি নাজিলের সময় থেকে করা হোক। ওমর (রা.) চুপ থাকলেন। এরপর আলী (রা.) রাসুল (সা.)-এর হিজরতকে কেন্দ্র করে বর্ষগণনা শুরু করার প্রস্তাব উত্থাপন করলেন। ওমর (রা.) বললেন, আপনি সঠিক বলেছেন। কারণ হিজরতের মাধ্যমেই ইসলামের উত্থানের সূত্রপাত হয়েছে। সত্য-মিথ্যা প্রকাশ্যরূপ লাভ করেছে।

মক্কায় ইসলাম পালন ও দাওয়াতি কার্যক্রম ছিল গোপনে আর মদিনায় হিজরতের পর ইসলাম ও তার দাওয়াতি কার্যক্রম প্রকাশ্যে নিজ গতিতে বিকশিত হতে শুরু করে। মক্কায় অন্যায়ের বিরুদ্ধে গর্জে ওঠার পরিস্থিতি ছিল না, কিন্তু মদিনায় এসে অন্যায়ের বিরুদ্ধে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর স্তম্ভ রচিত হয়। মদিনায় ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হলো। ইসলামের সব বিধি-বিধান প্রয়োগের মধ্য দিয়ে ইসলাম পূর্ণতা লাভ করল। মদিনায় বিজয়ের সূচনা হয়ে ইসলাম ছড়িয়ে পড়ল পৃথিবীব্যাপী। এসবই হয়েছে হিজরতের মতো যুগান্তকারী ঘটনার মধ্য দিয়ে। সত্যের জয়ের শুরু এখান থেকেই।

সেজন্যই ওমর (রা.) হিজরতকে হক ও বাতিলের পার্থক্যকারী বলে আখ্যায়িত করেন এবং সেটাকে কেন্দ্র করে বর্ষপঞ্জি চালু করেন। অনেকে এটাকে আরবী বর্ষ বলে। এটা ঠিক নয়, এটা ইসলামী বর্ষ।

হিজরী সন চান্দ্রবর্ষ

মুয়াজ বিন জাবাল, সালাবা ইবন গানম প্রমুখ নতুন চাঁদ প্রসঙ্গে মহানবী (সা.)কে প্রশ্ন করলে আল্লাহ তায়ালা আয়াত নাজিল করেন, ‘তারা আপনাকে নতুন চন্দ্র সম্পর্কে জিজ্ঞেস করছে। আপনি তাদের বলে দিন যে এটি মানুষের জন্য সময় নির্ধারণ (ক্যালেন্ডার) এবং হজের সময় ঠিক করার মাধ্যম।’ (সুরা বাকারা: ১৮৯)

হিজরী বর্ষের সম্পর্ক চাঁদের সঙ্গে। এজন্য হিজরী সন অনুযায়ী বার শুরু হয় চাঁদ ওঠার পর থেকে। আমাদের দেশের বঙ্গাব্দ সূর্যকেন্দ্রিক। তাই বার গণনা শুরু হয় সূর্যোদয়ের পর থেকে। আর খ্রিস্টাব্দের দিন শুরু হয় রাত ১২টার পর থেকে। এজন্য থার্টিফার্স্ব নাইট পালন করে ওরা রাত ১২টা ০১ মিনিটের পর থেকে।

মহররম মাস কেন বছরের প্রথম মাস

তারপর ওমর (রা.) বললেন, হিজরতকে কেন্দ্র করে বর্ষগণনা শুরু করলাম। এবার বছরের প্রথম মাস কোনটা হবে? পরামর্শ এলো, যেহেতু রাসুল (সা.) রবিউল আউয়াল মাসে হিজরত করে মদিনায় আসেন, তাই রবিউল আওয়াল থেকে আরম্ভ হোক। ওমর (রা.) চুপ থাকলেন। এরপর সবার পরামর্শ হলো মহররমকে প্রথম মাস ধরে গণনা শুরু হোক।

কারণ— (ক.) যদিও হিজরত আনুষ্ঠানিকভাবে রবিউল আউয়াল মাসে হয়েছে কিন্তু তার মূল পরিকল্পনা শুরু হয় মহররম মাসে। কেননা ইসলামের শুরুর দিকে গোপনে দাওয়াতের সময় মদিনা থেকে কিছু লোক হজ করতে এসে রাসুল (সা.)-এর হাতে বাইয়াত নেন। তারপর তাদেরই আমন্ত্রণে মদিনায় হিজরতের প্রসঙ্গ আসে। ফলে দ্বিতীয় বাইয়াতের পরই রাসুল (সা.) হজ শেষ হলে হিজরত করার সংকল্প করেন। আর জিলহজ মাসের পরই আসে মহররম মাস। এভাবে হিজরতের মূল পরিকল্পনা হয় মহররম মাসে। যদিও তা বাস্তবায়ন হয় আরো দু’মাস পর রবিউল আউয়ালে। তাই মহররম মাসকেই হিজরী সনের প্রথম মাস নির্ধারণ করা হয়। (ইমাম ইবনুল কায়্যিমের ব্যাখ্যা)

(খ.) ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভ। ঈমান, নামাজ, রোজা, জাকাত ও রমজান মাস পর্যন্ত চারটা আর জিলহজ মাসে হজকে দিয়ে ইসলামের পূর্ণতা পায়। পূর্ণতা পাওয়ার পরই নতুন জীবনের সূচনা হয় মহররম মাসে। তাই মহররমই প্রথম মাস নির্ধারিত হয়।

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর উদ্দেশ্যে হজ করল এবং অশালীন কথাবার্তা ও গুনাহ থেকে বিরত থাকল, সে ওই দিনের মতো নিষ্পাপ হয়ে হজ থেকে ফিরল, যেদিন তার মা তাকে প্রসব করেছিল।’ (বুখারী, মুসলিম)

তাহলে ইসলামের পূর্ণতার সঙ্গে সঙ্গে হজ থেকে নিষ্পাপ হয়ে ফিরে এসে নতুন জীবনের সূচনা হয় মহররম মাস থেকে। তাই মহররম মাসকেই প্রথম মাস ধরে হিজরী সন গণনা শুরু হয়।

হিজরী সনের হিসাব রাখা জরুরী

মুসলিম হিসেবে আমাদের হিজরী সনের হিসেব রাখাটা খুবই জরুরী। জনৈক ফারসি কবি বলেন, (ফারসি বয়েত-এর অর্থ) আমি জানি না এটা জানুয়ারি না ফেব্রুয়ারি। বরং আমি জানি এটা আমার নবীর সন-তারিখ।

মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় হিজরী সনের হিসেব রাখা ফরজে কেফায়া। অন্তত কিছু মানুষকে তার হিসেব রাখতেই হবে। সবাই ভুলে গেলে সবার গুনাহ হবে। কারণ ইসলামের ইবাদত-বন্দেগী হিজরী সনের সঙ্গে সম্পৃক্ত। তবে কোনো চেতনাবান মুমিনের জন্য শোভনীয় নয়, সে হিজরী দিন-তারিখের খবরই রাখবে না।

কিন্তু আফসোস ইসলামী খেলাফত ধ্বংসের সঙ্গে সঙ্গে হিজরী সনের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক হারিয়ে যাচ্ছে। আমাদের অফিস-আদালত, স্কুল-কলেজ কোথাও তো নাই, এমনকি আলিয়া মাদ্রাসাতেও নাই। শুধু এটা ধরে রেখেছে কওমী মাদ্রাসা। কওমী মাদ্রাসার সব কার্যক্রম এখনো হিজরী সন অনুযায়ী সম্পাদিত হয়।

আমরা ছেড়েছি নিজেদেরটা আর ধরেছি কোনটা দেখেন, আমরা যেটাকে বলি ইংরেজি Calendar আসলে তা নয়, এটা গ্রেগরিয়ান Calendar। অষ্টম রোমান পোপ গ্রেগরি ঈসা (আ.)-এর জন্মের ১৬০০ বছর পর ভাবলেন বিভিন্ন জাতির নিজস্ব বর্ষপঞ্জি আছে তাহলে আমাদেরও দরকার। তাই তিনি তাদের বিশ্বাস অনুযায়ী যীশুখ্রিস্টের জন্মের দিনকে কেন্দ্র করে খ্রিস্টীয় বর্ষপঞ্জি প্রবর্তন করেন। সুতরাং এটা খ্রিস্টীয় ক্যালেন্ডার। তবে এর চেয়েও ভয়ঙ্কর এ বর্ষের স্ল্লোগান। তারা বলে anno Domini (AD)। অ্যানো ডোমিনি শব্দটি মধ্যযুগীয় ল্যাটিন এবং এর অর্থ ‘প্রভুর বছরে’ তবে প্রায়শই ‘প্রভু’ এর পরিবর্তে ‘আমাদের প্রভু’ ব্যবহার করে উপস্থাপন করা হয়, সম্পূর্ণ মূল বাক্যাংশ থেকে নেয়া (Domini nostri Jesu Christi) যা ‘আমাদের প্রভু যীশুখ্রিস্টের বছরে, আপনাকে স্বাগতম।’ (উইকিপিডিয়া)

নাউজুবিল্লাহ এগুলো সবই তো শিরকী আকিদা। সুতরাং উপরোল্লিখিত হাদিসের বক্তব্য অনুযায়ী এখনই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আপনি নিজেকে আল্লাহর কাছে সোপর্দ করবেন না শয়তানের কাছে। আল্লাহর কাছে করলে মুক্তি আর শয়তানের কাছে করলে নিশ্চিত ধ্বংস।

মহররম মাসের গুরুত্ব ও আমল

প্রথমত, এটি হিজরী বর্ষের প্রথম মাস। দ্বিতীয়ত, এটি চারটি সম্মানিত মাসের একটি। আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, ‘প্রকৃতপক্ষে আল্লাহর কাছে মাসের সংখ্যা ১২টি, যা আল্লাহর কিতাব অনুযায়ী সেই দিন থেকে চালু আছে, যেদিন আল্লাহ তায়ালা আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছিলেন। এর মধ্যে চারটি মাস মর্যাদাপূর্ণ। এটিই সুপ্রতিষ্ঠিত বিধান’। (সুরা তওবা: ৩৬)

সেই চারটি মাসের নাম এসেছে হাদিসে, আবু বকর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহ যেদিন আসমান ও জমিন সৃষ্টি করেছেন, সেদিন যেভাবে সময় নির্ধারিত ছিল তা ফিরে এসেছে। ১২ মাসে এক বছর। এর মধ্যে চার মাস নিষিদ্ধ ও সম্মানিত। তিন মাস পরপর জিলকদ, জিলহজ ও মহররম এবং মুজারের মাস রজব যা জমাদিউস সানি ও শাবানের মধ্যবর্তী মাস।’ (বুখারী, মুসলিম)

এ নিষিদ্ধ বা সম্মানিত মাসে গুনাহ করলে যেমন বাড়তি গুনাহ, তেমনি সওয়াব করলেও বাড়তি সওয়াব। তাই এ সম্মানিত মহররম মাসে বিশেষভাবে গুনাহ থেকে বিরত থাকব এবং বেশী বেশী সওয়াবের কাজে অংশ নেয়ার চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ।

তৃতীয়ত, এ মাসের ১০ তারিখ হলো আশুরা। যা তাওহীদ ও ইসলামের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ দিন। যেদিন রোজা রাখা সুন্নত। আশুরা ছাড়াও এ মাসে বেশী নফল রোজা রাখাই এর একমাত্র আমল। এ ছাড়া এ মাসে অন্য কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই, যেমনটি অনেকে বিশ্বাস করে থাকেন।

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘রমজানের পর সবচেয়ে উত্তম রোজা হলো আল্লাহর মাস মহররমের রোজা। আর ফরজ নামাজের পর সবচেয়ে উত্তম নামাজ হলো রাতের নামাজ (তাহাজ্জুদ)।’ (মুসলিম)

হিজরতের কেন এত গুরুত্ব?

প্রশ্ন হলো, হিজরত আসলে কী যে হিজরতের কথা আসতেই ওমর (রা.) সঙ্গে তা প্রফুল্লচিত্তে গ্রহণ করলেন। কারণ হিজরতের মাধ্যমে সত্য ও মিথ্যা সুস্পষ্ট পার্থক্য সূচিত হয়েছিল। হিজরতই সত্যের জয়ের সূচনা। যার মাধ্যমে ইসলামের বার্তা প্রকাশ্যে মানুষের কাছে পৌঁছার রাস্তা তৈরী হয়েছে।

স্বজাতির অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে মদিনায় চলে যেতে হলেও মাতৃভূমি মক্কার প্রতি ভালোবাসা তাঁর হূদয়ে এক বিন্দুও কমেনি। তাই তো দেখা যায়, বিদায়বেলায় তাঁর মন ব্যথায় ভরে উঠেছিল; বারবার তিনি মক্কার দিকে তাকিয়ে চোখের পানি বিসর্জন দিচ্ছিলেন আর বলছিলেন, ‘কতই-না চমৎকার শহর তুমি, হে মক্কা! তোমাকে আমি কতই-না ভালোবাসি! যদি আমার স্বজাতির লোকজন আমাকে তোমার কোল থেকে বের করে না দিত, তাহলে কখনোই আমি তোমাকে ছেড়ে যেতাম না।’ (তিরমিজি)

রাসুল (সা.) মদিনায় যাওয়ার পর সাহাবীরা (রা.) আর স্থির থাকতে না পেরে তারাও পর্যায়ক্রমে হিজরত করেন মদিনায়। তারা তাদের স্ত্রীদের বললেন, তৈরী হও, কেন? মদিনায় যাব। সঙ্গে কী নেব? কিচ্ছু না। শুধুমাত্র আল্লাহ ও আল্লাহর রাসুল (সা.)কে খুশী করতেই এ হিজরত।

এজন্য পুরস্কারও ঘোষিত হয়েছে। আমর ইবনুল আস (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেছেন, ‘হিজরত তার পূর্বের গুনাহসমূহ মুছে দেয়।’ (মুসলিম)

আমরা কোথায় হিজরত করব?

মক্কা বিজয়ের পর রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘মক্কা বিজয়ের পর কোনো হিজরত নেই।’ হাদিসটি ব্যাখ্যা সাপেক্ষ। অল্প কথায় মূল বিষয় হলো, রাসুল (সা.) বোঝাতে চাইলেন, ইসলামের একটা নির্দিষ্ট জায়গা হয়ে গেছে। এখন বাধাহীনভাবে ইসলাম সবাই পালন করতে পারবে। সেই পরিবেশ তৈরী হয়ে গেছে। তাই ঈমান রক্ষার জন্য আসহাবে কাহাফের মতো গুহায়, মক্কা থেকে মদিনায় হিজরত করার মতো অবস্থা হয়তো খুব কমই তৈরী হবে। কিন্তু তোমাদের প্রতি মুহূর্তে যে হিজরত করতে হবে তা তোমাদের নফসের সঙ্গে। শয়তানের ধোঁকা ও প্ররোচনাকে পেছনে ফেলে, শয়তানী সব কাজকে পদদলিত করে যেতে হবে আল্লাহর জান্নাতের দিকে। আসতে হবে আল্লাহর পছন্দ সিরাতে মুসতাকিমের পথে।

আব্দুল্লাহ ইবনু আমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘প্রকৃত মুহাজির (দ্বীনের খাতিরে স্বদেশ ত্যাগকারী) সেই, যে আল্লাহ যেসব কাজ করতে নিষেধ করেছেন, তা ত্যাগ করে।’ (বুখারী ও মুসলিম)

এখন হিজরত নিজেকে বদলানোর

প্রিয় ভাই, আপনাকে/আমাকে পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আপনি যে পরিবেশেই থাকুন না কেন। নিজেকে পরিবর্তন না করলে কেউ আপনাকে বাঁচাতে পারবে না। যেমন পরিবর্তন না করার কারণে নবীর ঘরে জন্ম নিয়ে নুহ (আ.)-এর পুত্র হয়েও বাঁচতে পারেনি প্লাবনের ধ্বংসলীলা থেকে। অপরদিকে বিবি আছিয়া, পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিয়ে আল্লাহদ্রোহী, জালেম, কাফের ফেরাউনের ঘরে থেকেও হয়েছেন আল্লাহর প্রিয়দের এক জন।

তাই বংশের পরিচয় আপনাকে/আমাকে বাঁচাতে পারবে না। পরিবর্তন আমাদের হতেই হবে। বাম পথ থেকে ডান পথে আসতেই হবে। ছুটতে হবে কোরআন-হাদীসের দিকে। প্রতিটি হিজরত বর্ষ ও মহররম আসছে এ কথা স্মরণ করাতেই। আল্লাহ তায়ালা কোরআনে বলেছেন, ‘অতএব তোমরা আল্লাহর দিকে দৌড়াও (ধাবিত হও)...।’ (সুরা জারিয়াত: ৫০)

অতএব, শয়তানের কাছ থেকে আল্লাহর দিকে আসলেই তবে কাঙ্ক্ষিত মুক্তি। তাই আসুন, আমরা নতুন বছর ১৪৪৬ হিজরীকে গ্রহণ করি তওবা ও আল্লাহর ক্ষমার মাধ্যমে। আর উদযাপন করি পরিবর্তনের সংকল্প নিয়ে এবং আনুগত্যের মধ্য দিয়ে।

নয়াশতাব্দী/জিএস

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ