মঙ্গলবার, ০২ জুলাই ২০২৪, ১৮ আষাঢ় ১৪৩১

কী পেলাম হজের সফর থেকে

প্রকাশনার সময়: ২১ জুন ২০২৪, ২০:৪৬

হজ ইসলামের পঞ্চম স্তম্ভ। সদ্যই শেষ হলো ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ এ ইবাদত। হজ থেকে আমরা আনেক কিছু শিখতে পারি।

গুনাহ থেকে বিরত থাকা: হজ আমাদের গুনাহমুক্ত জীবন যাপন শিক্ষা দেয়। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘ব্যক্তি যেসব মাসে নিজের ওপর হজ অবধারিত করে নেয় সে হজের সময় কোনো যৌনাচার করবে না, কোনো গুনাহ করবে না এবং ঝগড়া করবে না।’ (সুরা বাকারা (২): ১৯৭)

আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি এ ঘরের (বাইতুল্লাহর) হজ আদায় করল, অশ্লীলতায় জড়িত হলো না এবং আল্লাহর অবাধ্যতা করল না, সে মায়ের পেট থেকে সদ্য প্রসূত শিশুর ন্যায় (হজ থেকে) প্রত্যাবর্তন করল।’ (বুখারি: ১৮২০)

সাম্যতার ও ভ্রাতৃত্ব শিক্ষা: হজের সময় বাইতুল্লাহ, আরাফা মিনা, মুজদালিফাসহ সব স্থানে ধনী-গরীব, রাজা-প্রজা, চাকর-মালিক, যুবক-বৃদ্ধ, আরব-অনারব, সাদা-কালো সবাই সাদা কাপড় পরিধান করে সবাই একই জায়গায় অবস্থান করে। এ থেকে হাজিরা সাম্যতার শিক্ষা অর্জন করে। সব বৈসাম্যতার ভিত্তি মানুষের চিন্তা থেকে উদ্ভাবিত হয়েছে। আর ইসলাম আমাদের সাম্যতার শিক্ষা দেয়।

মুসলিম ঐক্য: হজে পৃথিবীর সব প্রান্ত থেকে মুসলিমরা ইবাদতের কেন্দ্র বাইতুল্লাহতে একত্রিত হয়। সেখানে বিভিন্ন দেশের মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ, দেখা সাক্ষাৎ, মুসলিম ঐক্যের বন্ধন তৈরী হয়। সেখানে বিভিন্ন সমাবেশে একত্রিত হওয়ায় মুসলিমদের মাঝে ঐক্যের বন্ধনকে মজবুত করে। এটা একমাত্র মুসলিম উম্মাহর বৈশিষ্ট্য। মুসলিমরা বিশ্বের যে কোনো দেশের যে কোনো প্রান্তেই থাকুক তারা ভাই ভাই। মুসলিমদের একে অপরের সুখে সুখী ও দুঃখে দুঃখী হওয়ার সুযোগ তৈরী হয়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সামগ্রিক সমস্যাগুলো জানা ও তার সমাধানের ব্যবস্থা করার সুযোগ তৈরী হয়। হজের সফরের দ্বারা ভ্রাতৃত্বের এক নতুন বন্ধন তৈরী হয়।

পবিত্র স্থান অবলোকন: মুসলিম উম্মাহর জাতির পিতা ইব্রাহিম (আ.) ও আমাদের নবী মুহাম্মাদ (সা.) এর বিভিন্ন স্মৃতি বিজড়িত স্থানসমূহ দর্শনের দ্বারা ঈমানের দৃঢ়তা ও পরিপক্বতা তৈরী হয় যেমন: বাইতুল্লাহ, মাকামে ইব্রাহিম, হাজরে আসওয়াদ, সাফা-মারওয়া, মিনা, মুজদালিফা, আরাফার ময়দান, হেরা গুহা, গারে ছওর, মসজিদে নববী, মসজিদে কুবা, জান্নাতুল বাকি, জান্নাতুল মুআল্লা, বদর প্রান্তর, উহুদের ময়দান ইত্যাদি।

আন্তর্জাতিক যোগাযোগ: হজে পৃথিবীর প্রায় সব দেশ থেকে মুসলিমরা হজকে কেন্দ্র করে একত্রিত হয়। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সর্ম্পক মজবুত ও দৃঢ় হয়। এ ছাড়াও আন্তর্জাতিক সমস্যাগুলো জানা ও তাদের নিয়ে বিশ্বের চিন্তাশীল ব্যক্তিদের সঙ্গে পরামর্শ করা ও এর সমাধান করার সুযোগ তৈরী হয়।

হজ থেকে ফিরে আসার পর করণীয়: হজ করার থেকে লক্ষণীয় বিষয় হলো হজকে আমি আমার জীবনে কতটুকু ধারণ করলাম। হজ শুধু আদায় করে ক্ষান্ত করলে হজ পূর্ণ হয় না বরং হজের শিক্ষাকে নিজের ভিতরে বাস্তবায়ন করার দ্বারাই পূর্ণ হয়।

নয়া শতাব্দী/এসআর

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ