ঢাকা, সোমবার, ৬ জানুয়ারি ২০২৫, ২২ পৌষ ১৪৩১, ৫ রজব ১৪৪৬

হজের গুরুত্ব ও তাৎপর্য

প্রকাশনার সময়: ৩০ মে ২০২৪, ০৭:৫০

আল্লাহ মানুষকে সৃষ্টি করেছেন তাঁরই ইবাদতের জন্য। তিনি তাদেরকে তাঁর আনুগত্যের আদেশ করেছেন, অবাধ্য হতে নিষেধ করেছেন এবং তাদের ওপর বিভিন্ন মর্যাদাপূর্ণ আমল ফরজ করেছেন, যার মধ্যে কিছু আমল অন্যগুলোর চেয়ে তাঁর কাছে বেশী প্রিয়।

একটি মহান ও শ্রেষ্ঠ ইবাদত হলো বায়তুল্লায় হজ পালন করা। যা ইসলামের একটি রুকন ও গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি। নবী (সা.)-কে জিজ্ঞেস করা হলো, ‘কোন আমলটি উত্তম? তিনি বললেন, আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি ঈমান আনা। বলা হলো, তারপর কোনটি? তিনি বললেন, আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করা। বলা হলো, তারপর কোনটি? তিনি বললেন, মাকবুল হজ।’ (বুখারি ও মুসলিম)

মহান আল্লাহ এই হজ মৌসুমের অন্তর্গত কিছু সময়ের শপথ করে বলেন, ‘শপথ দশ রাত্রির।’ (সুরা আল-ফজর: ২) তিনি হজ আদায়ের স্থানেরও শপথ করেছেন; এ মর্মে তিনি বলেন, ‘আমি শপথ করছি এ নগরীর।’ (সুরা আল-বালাদ: ১) তিনি তাঁর সর্বোত্তম ও প্রিয় ভূখণ্ডকে বেছে নিয়েছেন যাতে হজের কার্যাদি তার প্রান্তরে সম্পাদন করা হয় এবং পবিত্র কাবার চারপাশ ব্যতীত অন্য কোথাও তাওয়াফ করা না হয়।

হজ সম্পাদন ফরজ এবং নৈকট্য লাভের মাধ্যম। নবী (সা.) বলেছেন, ‘হে মানবসকল! তোমাদের ওপর আল্লাহ হজ ফরজ করেছেন। কাজেই তোমরা হজ সম্পাদন কর।’ (মুসলিম) এর ফজিলত হজযাত্রীর ওপর চলতে থাকে যখন থেকে তিনি হজের কার্যাদিতে প্রবেশ করেন। যদি তিনি তালবিয়া পাঠ করেন, তবে পৃথিবীর প্রতিটি ভেজা ও শুকনো জমিও যুগপৎভাবে তার সঙ্গে তালবিয়া পাঠ করে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তিই তালবিয়া পাঠ করে, সঙ্গে সঙ্গে তার ডান ও বাঁ দিকের পাথর, গাছপালা অথবা মাটি, এমনকি দুনিয়ার উভয় দিকের সর্বশেষ প্রান্তের সব কিছু তালবিয়া পাঠ করে।’ (ইবনে মাজাহ)

হজযাত্রীরা আল্লাহর প্রতিনিধি, যারা মর্যাদা অন্বেষণে তাঁর কাছে আসেন। নবী (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহর প্রতিনিধি তিন শ্রেণীর: গাজী, হাজী ও উমরা পালনকারী।’ (নাসায়ী) হজের মাধ্যমে পাপাচার ও ভুল-ত্রুটির পঙ্কিলতা মোচন করা হয়। নবী (সা.) বলেন, ‘হজ তার পূর্বের সব কিছুকে মিটিয়ে দেয়।’ (মুসলিম)

হাজীকে গুনাহ থেকে পবিত্রকারী হজ; যদি সে পাপাচার, স্ত্রী সহবাস এবং এ জাতীয় কাজ থেকে বিরত থাকে। নবী (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি হজ পালন করল এবং তাতে কোনো অশ্লীল কাজ করল না ও পাপাচারে লিপ্ত হলো না, সে ব্যক্তি সদ্য প্রসূত শিশুর ন্যায় প্রত্যাবর্তন করল।’ (বুখারি ও মুসলিম)

আল্লাহ তাঁর ফেরেশতাদের সঙ্গে হাজীদের নিয়ে গর্ব করেন। নবী (সা.) বলেছেন, ‘এমন কোনো দিন নেই যেদিন আরাফার দিন অপেক্ষা অধিক বান্দাকে আল্লাহ জাহান্নাম থেকে পরিত্রাণ দেন। আর তিনি সেদিন বান্দার নিকটবর্তী হন এবং তাদের নিয়ে ফেরেশতাদের কাছে গর্ব করে বলেন, এরা কী কামনা করে?’ (মুসলিম) ইবনে আব্দুল বার (রহ.) বলেন, ‘এটি ইঙ্গিত দেয়, তাদেরকে ক্ষমা করা হয়েছে; কেননা যারা পাপী ও গুনাহগার তাদেরকে নিয়ে আল্লাহ অহঙ্কার করবেন না, বরং তাদের তওবা কবুল ও ক্ষমা করে তিনি গর্ববোধ করবেন।’

যে ব্যক্তি হজের সমস্ত রুকন ও ওয়াজিব বিশুদ্ধ নিয়তে পালন করে এবং কোনো পাপের সঙ্গে জড়িত হয় না; তার পুরস্কার জান্নাত। নবী (সা.) বলেছেন, ‘মাকবুল হজের প্রতিদান জান্নাত ছাড়া আর কিছু নয়।’ (বুখারি ও মুসলিম)

হজ হলো এমন আনুগত্যমূলক আমল যার অনুষঙ্গ বহু ইবাদত। এটা অনেক কল্যাণ, উপদেশ ও নিদর্শনে পরিপূর্ণ। আল্লাহ বলেন, ‘যাতে তারা তাদের কল্যাণের স্থানগুলোতে উপস্থিত হতে পারে।’ (সুরা আল-হাজ্জ: ২৮) ইমাম কুরতুবী (রহ.) বলেন, ‘তাদের কল্যাণের স্থান বলতে হজের কার্যাদি, ব্যবসা-বাণিজ্য, ক্ষমা প্রার্থনা এবং ইহকাল ও পরকালীন কল্যাণ ইত্যাদি।’

হাজীগণ তাদের হজে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যা দ্বারা আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করতে পারেন তা হলো, হজের যাবতীয় কাজে তাওহীদের প্রতিফলন ঘটানো, সব আমলে ইখলাছ অবলম্বন এবং দাসত্বের বহিঃপ্রকাশ হিসেবে নিজেকে আল্লাহর কাছে সমর্পণ করা। আল্লাহ বলেন, ‘আর তোমরা হজ ও উমরা পূর্ণ কর আল্লাহর উদ্দেশ্যে।’ (সুরা আল-বাকারা: ১৯৬)

বস্তুত হজের সময় আল্লাহর একত্ব ঘোষণা করাই হলো হাজীদের স্লোগান এবং এতে তাদের সম্মান নিহিত— ‘আমি হাজির হে আল্লাহ্! আমি হাজির, আমি হাজির, কোন শরীক নেই তোমার, আমি হাজির, নিশ্চয়ই সকল প্রশংসা ও নিয়ামত তোমারই এবং সকল সাম্রাজ্যও তোমার, কোনো শরীক নেই তোমার।’ (বুখারি ও মুসলিম) শাইখুল ইসলাম (রহ.) বলেন, ‘হজের ভিত্তি হলো নম্রতা ও আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণ। আর এ কারণে এটিকে ‘নুসূক’ নামকরণ করা হয়েছে।’

হজের অন্যতম লক্ষ্য হচ্ছে, নবী (সা.)-এর আদর্শ অনুসরণ ও অনুকরণ করা। সুতরাং তাঁর সুন্নাতের অনুসরণ ছাড়া হজ বা কোনো ইবাদত গৃহীত হবে না। তাইতো নবী (সা.) বলেছেন, ‘আমার নিকট থেকে তোমরা হজের নিয়ম-কানুন শিখে নাও। কারণ আমি জানি না এই হজের পর আমি আর হজ করতে পারব কিনা।’ (মুসলিম)

সুন্নাতের অনুসরণ সততা, ঈমান ও মহব্বতের প্রমাণ বহন করে; মহান আল্লাহ বলেন, ‘বলুন, তোমরা যদি আল্লাহকে ভালোবাস তবে আমাকে অনুসরণ কর, ফলে আল্লাহ তোমাদেরকে ভালোবাসবেন এবং তোমাদের অপরাধ ক্ষমা করবেন। আল্লাহ অত্যন্ত ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’ (সুরা আলে ইমরান: ৩১) নবী (সা.)-এর সুন্নাতের বিপরীত কোনো আমলই আল্লাহ কবুল করবেন না; রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি এমন কোনো আমল করল যাতে আমাদের নির্দেশনা নেই, তা প্রত্যাখ্যাত হবে।’ (মুসলিম)

প্রকৃতপক্ষে একজন মুসলিম নিজের দ্বীনকে আঁকড়ে ধরে এবং মূর্খতাসুলভ কর্মকাণ্ড ও আচরণ থেকে নিজেকে দূরে রাখে। আর হজের সময় এ বিষয়টিকে আরো জোরদার করা হয়েছে। ইবনুল কায়্যিম (রহ.) বলেন, ‘শরীয়ত মুশরিকদের বিপরীতকরণে বদ্ধপরিকর, বিশেষ করে হজের সময়।’

হজের মাঝে রয়েছে আল্লাহ ও তাঁর সৃষ্টিজীবের প্রতি বিনয় প্রকাশ এবং এই স্বীকৃতি যে, অহঙ্কার একমাত্র আল্লাহর জন্য। আর এর ঘোষণা হলো জামারাতে পাথর নিক্ষেপ, তাওয়াফের সময়, কোরবানির দিন এবং তাশরিকের দিনগুলোতে তাকবির পাঠের মাধ্যমে; যেন অন্তর আল্লাহর সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকে সব কিছু থেকে মুক্ত হয়ে।

আবাস-প্রবাস বা আরোহন-অবতরণ সর্বাবস্থায় আল্লাহর জিকির হাজীদের সঙ্গী। এমনকি তা হজের কার্যাবলী শেষ করার পরেও তাদের সঙ্গে থাকে। মহান আল্লাহ বলেন, ‘অতঃপর যখন তোমরা হজের অনুষ্ঠানাদি সমাপ্ত করবে তখন আল্লাহকে এভাবে স্মরণ করবে যেভাবে তোমরা তোমাদের পিতৃ-পুরুষদের স্মরণ করে থাক, অথবা তার চেয়েও অধিক।’ (সুরা আল-বাকারা: ২০০) ইবনুল কায়্যিম (রহ.) বলেন, ‘প্রত্যেক আমলকারীদের মাঝে সর্বোত্তম সেই ব্যক্তি, যে স্বীয় আমলের মাঝে অধিক জিকিরকারী। সুতরাং সর্বশ্রেষ্ঠ হাজী হলো সে, যে অধিক জিকিরকারী।’

ইহরাম পরিধানের মাঝে নফসের প্রতি প্রবৃত্তির অবাধ্যচরণের দিকে আহ্বান রয়েছে; কেননা এতে সেলাইযুক্ত পোশাক পরিধান করা যায় না, সুগন্ধী ব্যবহার করা যায় না, নখ কাটা এবং বিবাহের প্রস্তাব দেয়া যায় না। এর মাধ্যমে পরস্পরের দুনিয়াবী আভিজাত্যের পার্থক্য দূরীভূত হয়। আর সকল মানুষ সমভাবে উপস্থিত হয়; যাদের বাহ্যিকরূপে কোনো পার্থক্য থাকে না। কেননা সবার পোশাকই কাফনের মতো।

হজের মাঝে সব জাতিগোষ্ঠীকে হকের ওপর একত্রিতকরণে এবং তাদেরকে ইসলামের ওপর ঐক্যবদ্ধকরণে ইসলামের মহত্ত্ব প্রকাশ পায়। কেননা তারা একটি নির্দিষ্ট স্থানকে লক্ষ্য বানায়, এক রবকেই আহ্বান করে, এক নবীকেই অনুসরণ করে এবং এক কিতাবই পাঠ করে।

হজে জাতি, ভাষা, স্থান ও বর্ণগত পার্থক্য দূরীভূত হয়ে যায় এবং এতে তাকওয়া ও ঈমানের মানদণ্ড প্রকাশ পায়। মহান আল্লাহ বলেন, ‘হে মানুষ! আমি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছি এক পুরুষ ও এক নারী হতে, আর তোমাদেরকে বিভক্ত করেছি বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে, যাতে তোমরা একে অন্যের সঙ্গে পরিচিত হতে পার। তোমাদের মধ্যে আল্লাহর কাছে সে ব্যক্তিই বেশী মর্যাদাসম্পন্ন যে তোমাদের মধ্যে বেশী তাকওয়া সম্পন্ন।’ (সুরা আল-হুজুরাত: ১৩)

হজের মাঝে মুসলমানরা পরস্পরের সঙ্গে মিলিত হয় এবং তাদের মাঝে ভালোবাসার বন্ধন শক্তিশালী হয়। ফলে মানুষের নিকট ইসলামের মহত্ত্ব ও ফজিলত এবং এই উম্মতের সম্মান ও উচ্চ মর্যাদা প্রকাশ পায়। আল্লাহ বলেন, ‘আর তিনি তাদের পরস্পরের হূদয়ের মধ্যে প্রীতি স্থাপন করেছেন জমিনের যাবতীয় সম্পদ ব্যয় করলেও আপনি তাদের হূদয়ে প্রীতি স্থাপন করতে পারতেন না; কিন্তু আল্লাহ তাদের মধ্যে প্রীতি স্থাপন করেছেন।’ (সুরা আল-আনফাল: ৬৩)

আর হাজীদের অলঙ্কার হলো, তাদের চারিত্রিক সৌন্দর্যের প্রকাশ ঘটানো। মহান আল্লাহ বলেন, ‘অতএব এই মাসসমূহে যে হজ করার সংকল্প করে, তার জন্য হজে অশ্লীল ও পাপ কাজ বৈধ নয়।’ (সুরা আল-বাকারা: ১৯৭)

হজের সময় সৎকাজের অন্তর্গত হলো, খাদ্য দান করা, সালাম বিনিময় করা, উত্তম কথা বলা এবং মানুষের প্রতি সহানুভূতির সঙ্গে আচরণ করা। হাজীদের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশের বহুমুখী উপকারিতা রয়েছে। মুজাহিদ (রহ.) বলেন, ‘আমি সফরে ইবনে উমর (রা.)-এর সঙ্গী হলাম তার খেদমতের অভিপ্রায়ে; অথচ তিনিই আমার খেদমত করতে লাগলেন।’ ইবনে রজব (রহ.) বলেন, ‘অনেক সালফে সালেহ সফরে তাদের সঙ্গীদের সঙ্গে শর্তারোপ করতেন যে, তিনি তাদের খেদমত করবেন; খেদমতের সওয়াব অর্জনের আশায়।’

জামারাগুলোতে পাথর নিক্ষেপের স্থানে একজন হাজী ইবলীসের অপদস্থ হওয়ার বিষয়টি অনুধাবন করবেন; যখন ইবরাহীম (আ.)-এর নিকট ইবলীস তিনবার আত্মপ্রকাশ করেছিল তার পুত্র ইসমাঈল (আ.)-কে কোরবানি দেয়া সংক্রান্ত তার রবের নির্দেশ পালন থেকে তাকে বিরত রাখার উদ্দেশ্যে। তখন ইবরাহীম খলীল (আ.) ইবলীসের ওপর পাথর নিক্ষেপ করেছিলেন তাকে অপদস্থ করতে এবং তার প্রতি ঘৃণা প্রকাশের নিমিত্তে। ইবরাহীম (আ.)-এর নিকট ইবলীসের পুনর্বার আগমন আমাদেরকে এ বিষয় স্মরণ করিয়ে দেয় যে, ইবলীস আদম সন্তানকে বারবার এবং নানা জায়গায় কুমন্ত্রণা দেয়।

হজের মাঝে নফসের জন্য পার্থিব লোভ-লালসা ত্যাগের প্রশিক্ষণ রয়েছে। একজন হাজী সেলাইযুক্ত পোশাক এবং সুগন্ধীর ন্যায় কিছু বৈধ বিষয় পরিহার করে থাকে। আর যে ব্যক্তি তার নফসকে হজের মাঝে ইহরাম অবস্থায় নিষিদ্ধ বস্তু থেকে বিরত রাখে সে অধিক উপযুক্ত যে, প্রত্যেক স্থান ও কালে সে তার নফসকে পাপাচার থেকে বিরত রাখতে পারবে।

হজের মাঝে সুনিপুণভাবে কাজ সম্পাদনের প্রতি উৎসাহ এবং সময়ের প্রতি গুরুত্বারোপের ইঙ্গিত রয়েছে। যেমন এতে রয়েছে সূর্যাস্তের সঙ্গে সঙ্গে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে স্থানান্তর হওয়া, হজের এক আমল থেকে অন্য আমলে আত্মনিয়োগ করা এবং এক আমলের পূর্বে অন্যটির সম্পাদন না করা। এটা জীবন নিয়ন্ত্রণ ও ইবাদতসমূহ পরিচালনার উন্নত ব্যবস্থাপনা এবং এ থেকে ইখলাস ও ইত্তেবার পথচলা শুরু হয়।

যে ব্যক্তি তার হজে তাওহীদের তালবিয়া ও ঈদে তাওহীদের তাকবীর পাঠ করে; তার জন্য আল্লাহর সঙ্গে কৃত প্রতিশ্রুতি পালন করা আবশ্যক হয়ে যায়। তা হলো সে একমাত্র আল্লাহকেই ডাকবে, কেবলমাত্র তাঁর নিকটই আশ্রয় প্রার্থনা করবে এবং শুধুমাত্র কাবাতেই তাওয়াফ করবে। মহান আল্লাহ বলেন, ‘আর আল্লাহকে ছাড়া যাদেরকে তোমরা ডাক তারা খেজুরের আঁটির আবরণেরও মালিক নয়।’ (সুরা ফাতির: ১৩) আর যে ব্যক্তি আল্লাহর অভিমুখী হয়, তিনি তাকে সাহায্য করেন। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘আর যারা আমার পথে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালায়, তাদেরকে আমি অবশ্যই আমার পথে পরিচালিত করব।’ (সুরা আল-আনকাবূত: ৬৯)

মুসলিম মাত্রই কাবার দর্শন ও তাতে তাওয়াফ করতে আগ্রহী থাকে। কেননা মানুষরা সব দিক ও এলাকা থেকে কাবার অভিমুখী হয়; সুতরাং এটি ইসলামী মহা মিলনকেন্দ্র। এখানে মানুষ তাদের আদি পিতা ইবরাহীম (আ.)-এর আহ্বানের ওপর একত্রিত হয়। মুসলিমদের অন্তর সর্বদা আল্লাহর গৃহের প্রতি আগ্রহী থাকে এবং তা দর্শন করতে, সেখানে তাওয়াফ করতে ও সেখানে অবস্থানে আকাঙ্ক্ষী থাকে।

হজের মুহূর্তগুলো সম্মানিত এবং এর সময়গুলো মূল্যবান। মহান আল্লাহ বলেন, ‘আর তোমরা নির্দিষ্ট দিনগুলোতে আল্লাহকে স্মরণ করবে।’ (সুরা আল-বাকারা: ২০৩) হজ পরপারে পাড়ি জমানোর কথা স্মরণ করিয়ে দেয়; কেননা হজযাত্রী তো তার সম্পদ ও পরিবার ত্যাগ করে হজের উদ্দেশে রওনা দেয়। হজ হলো ইসলামের শেষ রুকন, তা বছরের শেষ মাসেই আদায় করা হয়, আর নবী (সা.) তার শেষ জীবনেই তা আদায় করেছেন। ইহরাম পরিধান কাফনের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। হাজীদের হজের স্থানসমূহে সমবেত হওয়া, তাতে অবস্থান করা হাশরের ময়দানে তাদের একত্রিত হওয়া এবং আল্লাহর সামনে দণ্ডায়মান হওয়াকে স্মরণ করিয়ে দেয়।

নয়াশতাব্দী/জিএস

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ