গভীর রাতে তাহাজ্জুদের জায়নামাজে আজই এ দোয়াটি করে দেখুন তো আপনার চোখে পানি ঝরে কিনা, আপনার হূদয় আল্লাহর ভয় ও ভালোবাসায় আপ্লুত হয় কিনা?
হে আল্লাহ! আমার এমন কোনো গুনাহ বাদ রাখবেন না যা আপনি ক্ষমা করবেন না। এমন কোনো দুশ্চিন্তা ও বিপদ রাখবেন না যা আপনি দূর করবেন না। এমন কোনো ঋণ রাখবেন না যা আপনি পরিশোধ করবেন না। দুনিয়া ও আখিরাতের এমন কোনো প্রয়োজন বাদ রাখবেন না যা আপনি পূর্ণ করবেন না।
হে আল্লাহ! আপনি প্রত্যেক অপারগ ও অক্ষমের দোয়া শোনেন, প্রত্যেক রুগ্ন ব্যক্তিকে সুস্বাস্থ্য দান করে থাকেন। সাগর ফেনার সমান হলেও প্রত্যেক গুনাহগার ব্যক্তির গুনাহ মাফ করেন এবং প্রত্যেক ব্যক্তির তওবা কবুল করে থাকেন। আপনার এইসব নিয়ামতের কেউ প্রতিদান দিতে পারে না। কোনো প্রশংসাকারীর প্রশংসা আপনার প্রশংসার হক আদায় করতে পারে না।
হে আল্লাহ! আপনি আমার সব আকাঙ্ক্ষার শেষ প্রান্ত! আপনি আমার সব অভিযোগের সর্বশেষ শ্রবণকারী! এখন ঘটুক বা পরে, আমার সঙ্গে যাই ঘটুক, সব কিছুর জন্য আপনার কাছে কল্যাণ ও মঙ্গল কামনা করছি। আমি যা জানি এবং যা জানি না, সব অনিষ্ট থেকে আমি আপনার কাছে আশ্রয় চাইছি। আপনি ব্যতীত আমার জন্য আর কোনো ভরসার স্থল নেই।
হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে ওইসব কল্যাণ ও সৌন্দর্য কামনা করছি, যা আপনার কাছে আপনার প্রিয় বান্দাগণ ও আপনার প্রেরিত নবী (সা.) কামনা করেছেন। আর কামনা করেছেন নবীগণ, সিদ্দিকগণ, শহিদগণ ও সালেহীনগণ।
হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে জান্নাত চাইছি। প্রত্যেক ওইসব কাজ ও কথার ওপর আমলের তৌফিক চাইছি, যা আমাকে জান্নাতে নিয়ে যাবে। এমন জান্নাত যার বর্ণনা আপনি কালামে দিয়েছেন। সে এক চির শান্তির জায়গা যেথা মানুষরা শুধু আপনার দিকে তাকিয়ে থাকবে, কারও পলক পড়বে না।
আমি আপনার কাছে জাহান্নাম থেকে পানাহ চাইছি। দূরে থাকতে চাইছি সেসব কথা, কাজ ও আমল থেকে, যা আমাকে জাহান্নামের দিকে নিয়ে যেতে পারে। হে আল্লাহ, আমি আপনার কাছে প্রার্থনা করছি, যেন আমার শরীরকে জাহান্নামের আগুন দ্বারা দগ্ধ না হয়। হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের থেকে জাহান্নামের শাস্তি নিবৃত্ত করুন, জাহান্নামের শাস্তি তো নিশ্চিতভাবে ধ্বংসাত্মক, নিশ্চয় তা আশ্রয়স্থল ও বসতি হিসাবে অতীব নিকৃষ্ট! (সুরা ফুরকান: ৬৫-৬৬)
ইয়া আল্লাহ! আমার সম্পর্কে আপনার সব মীমাংসাকে আপনি কল্যাণকর বানিয়ে দিন। আপনি যা কিছু মীমাংসা করবেন তার সব পরিণাম আমার জন্য মঙ্গলজনক করে দেবেন। আমার অন্তরকে আপনার দিকে এমনভাবে রুজু করে দিন যেন আমার বিপরীতে গেলেও আপনার গায়েবি সব সিদ্ধান্তে আমি সন্তোষ প্রকাশ করে বলি, আলহামদুলিল্লাহ।
ইয়া আল্লাহ! আপনি আমার সব গুনাহ এবং ইচ্ছা-অনিচ্ছাকৃত ভুলগুলোকে ক্ষমা করে দিন। আমি অনুতপ্ত ও অপরাধ স্বীকার করে অন্তর থেকে বলছি-আমি আর অপরাধে জড়াব না, আপনার হুকুম আর লঙ্ঘন করব না, আর বিদ্রোহী ও অভিশপ্তদের কাতারে দাঁড়াব না। তওবা ইয়া রাব্বি, তওবা ইয়া গাফফার। আমাকে গুনাহের সময় আপনার ভয় ও ক্রোধের কথা স্মরণ করিয়ে দিন। ইয়া আল্লাহ! আমি আপনার কাছে সঠিক জ্ঞান ও প্রজ্ঞা কামনা করছি। এমন প্রজ্ঞা দিন যেন হক ও বাতিল পরখ করতে পারি। এমন ইলম দিন যেন হেদায়েতের রাস্তা চিনতে পারি, এমন আকল দিন যেন কোনটি আমার ইহকালীন ও পরকালীন কল্যাণ সেটা চিনে নিতে পারি। আমাকে আপনার মহব্বতের প্রতি আকৃষ্ট করে দিন। আমার হূদয়কে প্রাচুর্যমণ্ডিত করে দিন এবং যা কিছু আমাকে দান করেছেন তাতে বরকত ও সাফল্য দান করুন।
ইয়া আল্লাহ! আমার জন্য, মা-বাবা ও পরিবারের জন্য, আপনজন ও বন্ধুবান্ধবদের জন্য অনুগ্রহ ও ক্ষমা, সঠিক জীবন ও দৃঢ় ঈমান, অফুরন্ত নিয়ামত ও বরকত চাইছি। হে আল্লাহ! আমার স্ত্রী ও সন্তানদের ক্ষমা করে দিন, পিতামাতাকে ক্ষমা করে দিন। আমার দেশের জন্য আপনার কাছে বরকত, সজীবতা ও শ্যামলতা, শান্তি ও নিরাপত্তা কামনা করছি। ইসলাম ও সারা বিশ্বের মুসলমানদের ঈমান ও জীবনের নিরাপত্তা চাইছি।
ইয়া আল্লাহ! আমি আপনার কাছে সুদৃঢ় ঈমান, উত্তম স্বাস্থ্য, কল্যাণকারী সম্পদ, দুর্জয় সাফল্য ও অপরিমেয় সন্তুষ্টি চাইছি। পবিত্র জীবন ও সম্মানজনক মৃত্যু চাইছি। হে আসমানসমূহ ও জমিনের স্রষ্টা, দুনিয়া ও আখিরাতে আপনিই আমার অভিভাবক, আমাকে মুসলিম অবস্থায় মৃত্যু দিন এবং নেককারদের সঙ্গে আমাকে যুক্ত করুন।’ আমীন! ইয়া রব্ব।
নয়াশতাব্দী/ডিএ
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ