ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৯ জানুয়ারি ২০২৫, ২৫ পৌষ ১৪৩১, ৮ রজব ১৪৪৬

পাপমুক্ত জীবনের প্রশিক্ষণ

প্রকাশনার সময়: ১৪ মার্চ ২০২৪, ০০:০০ | আপডেট: ১৪ মার্চ ২০২৪, ১৪:০৯

রমজান পুণ্য অর্জনের মাস। আমরা প্রত্যেকেই রমজানে বছরের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি ইবাদতে মনোনিবেশ করি। সাধ্যমতো সবাই চেষ্টা করি এ মাসে রোজা, তারাবিহ, পবিত্র কুরআন তিলাওয়াত, জাকাত-ফেতরা ও দান-সদকার মাধ্যমে পুণ্য অর্জন করতে। আল্লাহর সন্তুষ্টি ও জান্নাত লাভের যোগ্য হতে।

তবে এসবের পাশাপাশি আরও জরুরি, রোজার আচরণবিধি মেনে চলা। রোজায় সব ধরনের পাপ ও পাপাচার থেকে বিরত থাকা। কারণ, রোজা ফরজ করা হয়েছে মানুষকে তাকওয়াসম্পন্ন বানানোর জন্য। যেমন- আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, ‘হে ঈমানদার লোকরা! তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেমনটি করা হয়েছিল পূর্ববর্তীদের ওপর, যাতে তোমরা তাকওয়াসম্পন্ন হও।’ (সূরা বাকারা: ১৫৩)

তাকওয়ার মূল কথাই হলো— সর্বদা আল্লাহর ভয় অন্তরে জাগ্রত রাখা এবং তার কাছে জবাবদিহির ভয়ে আল্লাহর সব ধরনের নাফরমানি-অবাধ্যতা থেকে নিবৃত থাকা।

রাসুল (সা.)-এর বাণীতেও রোজায় গোনাহ বর্জনে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। যেমন তিনি বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি রোজা রেখে অসত্য কথা ও অন্যায় কাজ বর্জন করল না, তার পানাহার বর্জনে আল্লাহর কোনো প্রয়োজন নেই।’ (বোখারি)

আরেক হাদিসে তিনি বলেছেন, ‘তোমাদের কেউ রোজার দিবসে থাকলে সে যেন অশ্লীল ভাষায় কথা না বলে এবং চিৎকার করে বাক্য বিনিময় না করে। তথাপি কেউ যদি তার সঙ্গে বিবাদ-ঝগড়ায় প্রবৃত্ত হয় কিংবা লড়াই করতে আসে, তাহলে (অনাগ্রহ দেখিয়ে) বলবে আমি রোজাদার। (তাই আমি কিছুতেই তোমার সঙ্গে বিবাদে জড়াব না)।’ (বোখারি)

কোনো সময় আমরা নিজের থেকে হয়তো মন্দ কথা বলি না, কিন্তু পরিস্থিতির শিকার হলে আর সংযত থাকা যায় না। হাদিসে এমন পরিস্থিতির করণীয়ই বলে দেয়া হয়েছে। ইবনুল কায়্যিম (রহ.) বলেন, ‘সিয়াম সাধনার মূল লক্ষ্য আত্মাকে প্রবৃত্তির দাসত্ব থেকে নিবৃত করা, প্রবৃত্তির অভ্যস্ত বিষয় থেকে ছাড়ানো এবং তার শক্তির অভিমুখ বদলে দেয়া। যাতে করে তার সর্বোচ্চ সুখ ও সৌভাগ্য যেখানে রয়েছে তা অনুসন্ধানে সে প্রস্তুত হয়।’

তাই রোজায় যেমন ব্যক্তিগত জীবনে প্রতিটি ফরজ কাজ ঠিকমতো আদায় করতে হবে। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের কোনোটাই যেন ছুটে না যায় তা নিশ্চিত করতে হবে। তেমনি সমাজ জীবনে কেউ যেন আমার কথা-কাজে কষ্ট না পায়, সে দিকটিও খেয়াল রাখতে হবে। হাদিসে বলা হয়েছে, ‘সেই প্রকৃত মুসলিম যার হাত ও মুখের অনিষ্ট থেকে অন্যরা নিরাপদ থাকে।’ (মুসলিম)

গিবত-পরনিন্দা, হিংসা-পরশ্রীকারতা, মিথ্যা, অহংকার, দুর্নীতি, সুদ, ঘুষ ও অন্যের সম্পদ বা সম্বল আত্মসাৎ— ইত্যাকার সব অন্যায়-অপকর্ম থেকে বিরত থাকতে হবে। রমজান আমাদের সারাটি বছরের জন্য এমন পাপাচার-অনাচারমুক্ত জীবনেরই প্রশিক্ষণ দেয়।

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ