ঢাকা, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

হজ প্যাকেজ পুনঃনির্ধারণ চেয়ে রিটের শুনানি আজ

প্রকাশনার সময়: ১৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৯:২২

চলতি বছরের হজ প্যাকেজের খরচ কমিয়ে বিশ্ববাজারের সঙ্গে মিল রাখার নির্দেশনা চেয়ে দায়ের করা রিট শুনানির জন্য আজকের কার্যতালিকায় রাখা হয়েছে।

রোববার (১৭ ডিসেম্বর) এ বিষয়ে শুনানি করে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলামের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চে এটি শুনানি করা হবে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রিটকারী আইনজীবী মোহাম্মদ পারভেজ হোসেন।

তিনি বলেন, আজ সকালে আমরা কোর্টে মেনশন করব। যাতে করে দুপুরের পর মামলাটি শুনানি করতে পারি।

এর আগে গত ২৮ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আশরাফ-উজ জামান ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর রেজিস্ট্রি ডাকযোগে নোটিশটি পাঠান।

পরে আইনজীবী আশরাফ-উজ জামান ঢাকা মেইলকে বলেন, হজের মোট খরচ ৪ লাখ টাকায় সীমাবদ্ধ রাখতে বলা হয়েছে। সেখানে সরকার সাধারণ হজ প্যাকেজ ৫ লাখ ৭৮ হাজার ৮৪০ টাকা নির্ধারণ করেছে। আর বিশেষ প্যাকেজ ৯ লাখ ৩ করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, হজের মতো একটি ফরজ ইবাদতের অতিরিক্ত মূল্য নির্ধারণ করা বাধা সৃষ্টির নামান্তর।

নোটিশ প্রাপ্তির পাঁচদিনের মধ্যে জবাব না দেওয়ায় হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়।

নোটিশে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের হজ প্যাকেজ (হিজরি-১৪৪৫) এর হজযাত্রীপ্রতি খরচ অত্যন্ত অযৌক্তিক এবং যা মানুষের নাগালের বাইরে।

এতে বলা হয়েছে, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের গেজেটে মক্কা ও মদিনায় বাড়ি ভাড়া বাংলাদেশি টাকায় ১ লাখ ৬৯ হাজার ৪১০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। যা অনেক বেশি। এতে বোঝা যায় যে, সরকার হজযাত্রীদের সঙ্গে প্রতারণা করে বাড়ির মালিকদের অনুকূলে বাড়ি ভাড়া নির্ধারণ করেছে।

গেজেটে বাসের ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৬ হাজার ৮৩৪ টাকা, যা অনেক বেশি। এটা হজযাত্রীদের সঙ্গে প্রতারণা। আর জমজমের পানির বিক্রয়মূল্য নির্ধারণ করা খুবই আপত্তিকর। এই বরকতময় পানি বিক্রি করে কোনো সরকার আর্থিক সুবিধা নিতে পারে না।

সৌদির মিনা-আরাফাহ-মুজদালিফা এবং আবার 'ডি' ক্যাটাগরির অধীনে মিনায় পাঁচদিন থাকার জন্য সার্ভিস চার্জ বাংলাদেশি টাকায় ৬২ হাজার ২৭১ টাকা নির্ধারণ করা হয়, যা অতিরিক্ত। হজযাত্রীদের ওপর এ ধরনের অর্থ আরোপ প্রমাণ করে যে, বাংলাদেশ বা সৌদি সরকার মহান আল্লাহর মেহমানদের কাছ থেকে অর্থ উপার্জনে খুবই আগ্রহী।

তাছাড়া এ বছরের হজ প্যাকেজে বাংলাদেশি টাকায় ৯ হাজার টাকা ভিসা ফি, ইলেক্ট্রনিক সার্ভিস, গ্রাউন্ড সার্ভিস ফি, ক্যাম্প ফি নতুন করে যুক্ত করা হয়েছে, যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। সৌদি আরব সরকার এই ভিসা ফি আরোপ করতে পারে না। কারণ সমস্ত হজযাত্রীরা সর্বশক্তিমান আল্লাহর প্রতি তাদের পবিত্র দায়িত্ব পালনের জন্য পবিত্র মক্কা ও মদিনায় যাচ্ছেন।

নোটিশে আরও বলা হয়েছে, গেজেটে বিমান ভাড়া বাংলাদেশি টাকায় ১ লাখ ৯৪ হাজার ৮০০ টাকা যেখানে ঢাকা-জেদ্দা-ঢাকা রুটে বর্তমান প্লেন ভাড়া বাংলাদেশি টাকায় ৭৬ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা। প্রতি বছর সরকার হজযাত্রীদের বিমান বাংলাদেশ এবং সৌদি এয়ারলাইন্স থেকে বিমানের টিকিট কিনতে বাধ্য করে যাতে ওই এয়ারলাইন্স কোম্পানিগুলিকে অবৈধ সুবিধা দেয়, যাতে হজযাত্রীদের স্বাধীনতা এবং পছন্দের ক্ষতি হয়। এছাড়াও প্রতি হজ গাইডের বিপরীতে বাংলাদেশি টাকায় ১৩ হাজার ৫৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে, যা অপ্রাসঙ্গিক। সরকার হজযাত্রীদের এই টাকা অযৌক্তিকভাবে পরিশোধ করতে বাধ্য করে।

এতে আরও বলা হয়, বাড়ি ভাড়া, পরিবহন খরচ, স্বাস্থ্য বীমা সার্ভিস চার্জ এবং জমজমের পানিতে ন্যূনতম ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করা বেআইনি ও অনৈতিক। উভয় সরকারই হজযাত্রীদের ওপর এই ধরনের ভ্যাট আরোপ করতে পারে না। কারণ হজযাত্রীরা ভ্রমণকারী নয়, তারা সর্বশক্তিমান আল্লাহর মেহমান।

নোটিশে বলা হয়, আমরা হজযাত্রীদের সাধারণ এবং বিশেষ হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করার কোনো যৌক্তিকতা খুঁজে পাচ্ছি না। এটা স্পষ্ট যে এই হজ প্যাকেজ প্রকৃত তথ্য ও পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে তৈরি করা হয়নি এবং হজযাত্রীদের সেবা করার জন্য তৈরি করা হয়নি বরং এটি মুনাফা অর্জনের নগ্ন স্বার্থে হজযাত্রীদের শোষণের জন্য তৈরি করা হয়েছে। এই প্যাকেজের এসব কর্মকাণ্ড থেকে জানা যায় যে, বাংলাদেশ ও সৌদি সরকার ইসলামী চেতনা ও নৈতিকতা বজায় না রেখে হজযাত্রীদের উস্কানি দিয়ে বিপুল অর্থ উপার্জনের চেষ্টা করছে।

নয়া শতাব্দী/এসআর

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ