ঢাকা, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

কী কী কারণে ওযু ভঙ্গ হয়ে যায়

প্রকাশনার সময়: ০৬ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৯:০৭

যে সব কারণে ওযু ভেঙ্গে গেলে, আবার শুধু ওযু করলেই হবে সেগুলো নিচেই দেওয়া হলো। নামাজ পড়ার পূর্বশর্ত হলো অজু। অজু ছাড়া নামাজ হয় না। অজু করার পর যদি ভেঙে যায়, তখন নতুন করে অজু করে নিতে হবে । অজুর সওয়াব ও ফজিলত অনেক বেশি। তাই, ওযু ভাঙার কারণ জেনে রাখা অত্যন্ত জরুরি।

১। পায়খানা ও পেশাবের রাস্তা দিয়ে কোনো কিছু বের হওয়া।

যেমন বায়ু, পেশাব-পায়খানা, কৃমি । (হেদায়া, হাদিস : ১/৭)

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমাদের কেউ প্রসাব-পায়খানা সেরে আসলে (নামাজ পড়তে পবিত্রতা অর্জন করে নাও)।’ (সুরা মায়িদা, আয়াত : ০৬ )

আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত আছে যে, নিশ্চয় রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘শরীর থেকে যা কিছু বের হয়, তার কারণে অজু ভেঙে যায়...।’ (সুনানে কুবরা লিলবায়হাকি, হাদিস : ৫৬৮)

২। রক্ত, পূঁজ বা পানি বের হয়ে গড়িয়ে পড়া। (হেদায়া : ১/১০)

সামান্য পরিমান রক্ত, পূঁজ বা পানি বের হলে ওযু ভাঙ্গে না।

আবদুল্লাহ বিন উমর (রা.)-এর যখন নাক দিয়ে রক্ত ঝড়তো, তখন তিনি ফিরে গিয়ে অজু করে নিতেন। (মুয়াত্তা মালিক, হাদিস : ১১০)

৩। মুখ ভরে বমি করা। তবে যদি ঢেঁকুর এর সাথে সামান্য পরিমান বের হয়ে আসে তাতে ওযু ভাঙ্গে না। আয়শা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তির বমি হয়, অথবা নাক দিয়ে রক্ত ঝরে, বা মজি (সহবারের আগে বের হওয়া সাদা পানি) বের হয়, তাহলে ফিরে গিয়ে অজু করে নেবে।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১২২১)

৪। থুথুর সঙ্গে রক্তের ভাগ সমান বা বেশি হওয়া। হাসান বসরি রহ. বলেন, যে ব্যক্তি তার থুথুতে রক্ত দেখে তাহলে থুথুতে রক্ত প্রবল না হলে তার ওপর অজু করা আবশ্যক হয় না। (মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবা, হাদিস : ১৩৩০)

৫। চিৎ বা কাত হয়ে বা হেলান দিয়ে ঘুম যাওয়া। তবে বসে বসে ঝিমুলে ওযু ভাঙ্গে না। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত। রাসুল (সা.) বলেন, ‘সিজদা অবস্থায় ঘুমালে অজু ভঙ্গ হয় না, তবে চিৎ হয়ে শুয়ে পড়লে ভেঙ্গে যাবে, কেননা চিৎ বা কাৎ হয়ে শুয়ে পড়লে শরীর ঢিলে হয়ে যায়।’ [ফলে বায়ু বের হয়ে যাবার সম্ভাবনা রয়েছে] (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ২৩১৫; সুনানে আবু দাউদ, হাদিস : ২০২)

৬। পাগল, মাতাল বা অচেতন হলে। হাম্মাদ (রহ.) বলেন, যখন পাগল ব্যক্তি সুস্থ হয়, তখন নামাজের জন্য তার অজু করতে হবে। (মুসান্নাফ আব্দুর রাজ্জাক, হাদিস : ৪৯৩)

৭। নামাজে উচ্চস্বরে হাসি দিলে। ইমরান বিন হুসাইন (রা.) থেকে বর্ণিত। রাসুল (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি নামাজে উচ্চস্বরে হাসে, সে ব্যক্তি অজু ও নামাজ পুনরায় আদায় করবে। (সুনানে দারা কুতনি, হাদিস : ৬১২)

শরীরের আউরা (শরীরের যে অংশ ঢেকে রাখা ফরজ) বের হয়ে গেলে ওযু ভাঙ্গে না। যেমন, আপনি যদি উলঙ্গ হয়ে একা একা বাথরুমে গোসল ও ওযুর নিয়ম মেনে গোসল সেরে, পরে কাপড় পরে নেন, তাতে আপনার ওযু ভাঙ্গবে না। কিন্তু আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে যে, মানুষের সামনে আপনার আউরা বের হয়ে গেলে গুনা হবে। আর যে কোন অবস্থায় যদি লজ্জা স্থান বের হয়ে যায়, তখন ফেরেস্তারা সেখান থেকে চলে যায়, এবং শয়তানরা সেখানে এসে শয়তানি শুরু করে।

ইয়া আল্লাহ, আমাদেরকে সঠিক ভাবে পাক পবিত্র হওয়ার তৌফিক দান করুন এবং আমাদের আমলের ভুল ত্রুটি মাফ করে, আমাদের আমলকে কবুল করে নিন। নয়াশতাব্দী/আরজে

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ