ঢাকা, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

অন্যতম হারাম অবৈধ মুনাফা অর্জন

প্রকাশনার সময়: ০২ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৭:২৩

ইসলাম মুনাফাখোরীকে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করেছে এবং তা প্রতিরোধের জন্য কয়েক ধরনের কারবারকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। যথা-

১. পণ্যমূল্য জানে না এমন ক্রেতার কাছ থেকে বেশি মূল্য আদায় করা ইসলামে নিষিদ্ধ এবং এটা এক ধরনের ধোঁকার শামিল। ইমাম ইবনু তায়মিয়াহ (রহ.) এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘কোনো বিক্রেতা সম্পর্কে যদি জানা যায়, সে ক্রেতাদেরকে ধোঁকা দেয় তাহলে সে শাস্তির হকদার হবে। এমনকি আল্লাহ ও তদীয় রাসুল (সা.)-এর আনুগত্য অবলম্বন না করা পর্যন্ত তাকে মুসলমানদের বাজারে বসা থেকে নিষেধ করা হবে। অন্যদিকে প্রতারিত ব্যক্তি বিক্রয় ভঙ্গ করে পণ্য ফিরিয়ে দিয়ে মূল্য গ্রহণ করতে পারে। আর যদি এই অত্যাচারী প্রতারক তওবা করে এবং অত্যাচারিতদের কাছে তাদের পাওনা ফিরিয়ে দেয়া সম্ভব না হয়, তাহলে সে ক্রেতার সঙ্গে কৃত প্রতারণা ও জুলুমের পরিমাণ মাফিক সদকা করবে। যাতে এর দ্বারা আল্লাহর জিম্মা (পাকড়াও) থেকে সে রেহাই পায়।’

২. অনেক সময় ব্যবসায়ীরা বেশি মুনাফা অর্জনের জন্য নিজের পণ্যের প্রশংসা করে মিথ্যা কসম করে। এতে হয়তো সাময়িক লাভ হয়, কিন্তু এরূপ ধোঁকাপূর্ণ ব্যবসায়ে বরকত থাকে না। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘কসম দ্বারা পণ্যের কাটতি বাড়ে তবে তা বরকত নির্মূল করে দেয়।’ (বুখারি: ২০৮৭)

অন্য বর্ণনায় এসেছে, ‘কসম দ্বারা মালের কাটতি বাড়ে তবে তা মুনাফা নির্মূল করে দেয়।’ (মুসলিম: ১৬০৬)

ব্যবসায়ে পণ্যের কাটতি বাড়ানোর জন্য রাসুলুল্লাহ (সা.) কসম করাকে নিষেধ করেছেন স্পষ্ট ভাষায়। এ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘ব্যবসায়ে অধিক কসম খাওয়া থেকে বিরত থাক। এর দ্বারা মাল বেশি বিক্রি হলেও বরকত দূর হয়ে যায়।’ (মুসলিম: ১৬০৭)

ব্যবসা-বাণিজ্যে অধিক কসম করা নিষিদ্ধ হওয়ার কারণ সম্পর্কে শাহ অলিউল্লাহ মুহাদ্দিছ দেহলভী (রহ.) তার জগদ্বিখ্যাত গ্রন্থ ‘হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগাহ’তে বলেন, ‘দুটি কারণে ক্রয়-বিক্রয়ের ক্ষেত্রে অত্যধিক কসম করা অপছন্দনীয়। ১. এটা ক্রেতাদের ধোঁকা দেওয়ার শামিল। ২. তা হূদয় থেকে আল্লাহর নামের মর্যাদা দূরীভূত হওয়ার কারণ। আর মিথ্যা কসম পণ্যের কাটতি বৃদ্ধি করে। কেননা তখন কাটতি বাড়ার ভিত্তি হয় ক্রেতাকে ধোঁকা দেয়া এবং তা (মিথ্যা কসম) বরকত নির্মূল করে। কেননা তার (বিক্রেতার) জন্য ফেরেশতামণ্ডলির দোয়া বরকতের ভিত্তি। আর পাপের কারণে সেই বরকত দূরীভূত হয়ে যায়। এমনকি ফেরেশতাগণ তার ওপর বদদোয়া করে।’ (হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগাহ: ২/২০৩)

৩. নাজাশ: নাজাশ শব্দের মূল অর্থ হচ্ছে- কোনো জিনিসের অতিরিক্ত প্রশংসা করা। ‘বিদায়াতুল মুজতাহিদ’ গ্রন্থে বলা হয়েছে, ‘নাজাশ হলো কেউ পণ্যের বেশি দাম বলবে অথচ তা কেনার ইচ্ছা তার নেই। এর দ্বারা সে বিক্রেতার লাভ এবং ক্রেতার ক্ষতি সাধন করতে চায়।’ (বিদায়াতুল মুজতাহিদ ওয়া নিহায়াতুল মুকতাছিদ: ২/১৬৭)

ফকিহগণ উল্লেখ করেছেন নাজাশের মধ্যে এটিও অন্তর্ভুক্ত যে, বিক্রেতা বলবে, আমি এ জিনিসটি এত দামে ক্রয় করেছি। অথচ সে মিথ্যাবাদী। ক্রেতা যাতে ধোঁকায় পড়ে বেশি দামে ক্রয় করে সেজন্য সে মিথ্যা দামের কথা বলে। অথবা বিক্রেতা বলবে, এ পণ্যের জন্য আমাকে এত দাম দেয়া হয়েছে। অথবা বলবে, এ পণ্যের এত মূল্য হাঁকা হয়েছে। অথচ সে মিথ্যাবাদী। তার উদ্দেশ্য হলো ক্রেতাদেরকে ধোঁকা দেয়া। যাতে তার এই কল্পিত মিথ্যা দামের চেয়ে তারা বেশি দাম বলে। এটিও নাজাশ। যা থেকে আল্লাহর রাসুল (সা.) নিষেধ করেছেন।

এটি মুসলমানদের সঙ্গে প্রতারণা করা এবং মিথ্যা বলে তাদের ধোঁকা দেয়া। তাছাড়া ব্যবসায়ীরা বা দোকানদাররা যদি এ মর্মে ঐকমত্য পোষণ করে যে, কোনো পণ্য আমদানি হলে কেউ কারও চেয়ে বেশি দাম বলবে না। যাতে আমদানিকারক সস্তা মূল্যে তাদের কাছে সেই পণ্যটি বিক্রি করতে বাধ্য হয়। আর সবাই এর সুবিধাভোগী হয়। শায়খ ছালেহ ফাওযান বলেন, ‘এটি হারাম, নাজাশের অন্তর্ভুক্ত এবং অন্যায়ভাবে মানুষের সম্পদ ভক্ষণ করার নামান্তর।’

ক্রেতাদেরকে ধোঁকা দিয়ে মুনাফা অর্জনের এ উপায়কে রাসুলুল্লাহ (সা.) কঠোরভাবে নিষেধ করে বলেন, ‘তোমরা দালালি করো না।’ (বুখারি: ২১৪০; মুসলিম: ১৪১৩)

ইবনু কুদামা (রহ.) বলেন, ‘এ ধরনের বিক্রয় নিষিদ্ধ হওয়ার কারণ হলো, এটি ক্রেতার সঙ্গে প্রতারণা করা ও তাকে ধোঁকা দেয়ার শামিল।’ (আল-মুগনি: ৬/৩০৪-৫) আর রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘প্রতারণার ঠিকানা জাহান্নাম।’ (বুখারি: ২১৪২)

৪. তালাক্কি: আল্লামা তাহের পট্টনী ‘তালাক্কি’র সংজ্ঞা প্রদান করতে গিয়ে বলেন, ‘গ্রামের লোক শহরে প্রবেশের পূর্বেই শহুরে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তার সঙ্গে আনীত পণ্যের বাজার মন্দার মিথ্যা সংবাদ প্রদান করবে অল্পমূল্যে তা ক্রয় করার জন্য। এটাই হচ্ছে তালাক্কি।’ (তুহফাতুল আহওয়াযী: ৪/৩৪৫)

ড. ওয়াহবা আয-যুহায়লী বলেন, ‘কোনো শহুরে গ্রাম থেকে পণ্য নিয়ে শহরের দিকে আগত লোকদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাদের পণ্য কিনে নিয়ে পরে তার ইচ্ছামতো দামে শহর-নগরবাসীদের কাছে বিক্রি করাকে তালাক্কি বলে।’ (আল-ফিক্বহুল ইসলামি ওয়া আদিল্লাতুহু: ৪/২৩৯)

মুনাফাখোরীর পথকে রুদ্ধ করার জন্য রাসুলুল্লাহ (সা.) বাজারে মাল আসার আগেই বাইরে এভাবে ক্রয় করতে নিষেধ করেছেন। তিনি বলেন, ‘বিক্রয়ের বস্তু বাজারে উপস্থিত করার পূর্বে অগ্রগামী হয়ে তা ক্রয়ের জন্য যেও না।’ (বুখারি: ২১৬৫)

উল্লিখিত ক্রয়-বিক্রয়ের ফলে মূল বাজারে পণ্যদ্রব্যের আমদানি ব্যাহত হয়। ফলে পণ্যের সঠিক মূল্যও নির্ধারিত হয় না। কেননা সঠিক মূল্য নির্ধারণ সম্ভব হয় বাজারে পণ্যের আমদানি ও তার চাহিদা অনুপাতে। কিন্তু উক্ত অবস্থায় বিক্রেতা বাজারের দর-দাম কিছুই জানতে পারে না। এজন্য নবী করীম (সা.) বলেছেন, ‘যারা বাজারে বিক্রি করার জন্য পণ্যদ্রব্য নিয়ে আসছে, অগ্রগামী হয়ে তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে না। যদি কেউ তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এবং তার নিকট থেকে কোনো বস্তু ক্রয় করে, তবে ওই পণ্যের মালিক বাজারে আসার পর (উক্ত বিক্রয়কে ভঙ্গ করার) অবকাশ পাবে।’ (মুসলিম: ১৫১৯)

শাহ অলিউল্লাহ দেহলভী (রহ.) বলেন, ‘এ ধরনের ক্রয়-বিক্রয়ে বিক্রেতার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কেননা যদি সে বাজারে পৌঁছতে পারত, তাহলে বেশি মূল্যে বিক্রি করতে পারত।... অনুরূপভাবে এটা সাধারণ লোকদেরও ক্ষতির কারণ। কেননা তাতে শহরের সকল অধিবাসীর হক রয়েছে। যে অধিক মুখাপেক্ষী তার কাছে পণ্য পৌঁছিয়ে দেয়া নাগরিক কল্যাণের দাবি। সুতরাং তালাক্কির মাধ্যমে তাদের একজনের সকল মাল একচেটিয়াভাবে দখল করা এক ধরনের জুলুম।’

ইমাম বুখারি (রহ.) বলেন, ‘এটা ক্রয়-বিক্রয়ের ক্ষেত্রে ধোঁকা দেয়ার নামান্তর। আর ধোঁকা দেয়া নাজায়েজ।’ (বুখারি: ২১৬২) ইমাম তিরমিজি (রহ.) বলেন, ‘এটা এক ধরনের প্রতারণা।’ (তিরমিজি: ১২২১)

৫. ইসলামে মজুতদারিকে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। যাতে মুনাফাখোরির কোনো সুযোগ না থাকে। কারণ মজুতদারির উদ্দেশ্যই হচ্ছে অত্যধিক মুনাফা অর্জন। নবী করীম (সা.) বলেছেন, ‘যে পণ্য মজুত করে, সে পাপী।’ (মুসলিম: ১৬০৫) ইমাম নববী (রহ.) বলেন, ‘মজুতদারি নিষিদ্ধ হওয়ার ব্যাপারে এ হাদিসটি দ্ব্যর্থহীন।’

উল্লেখ্য, সাধারণভাবে পণ্য মজুত করা দোষের নয়। রাসুলুল্লাহ (সা.) নিজের পরিবারের জন্য এক বছরের খাদ্য মজুত রেখেছেন। (বুখারি: ৫৩৫৭) তবে বাজারে পণ্যের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে মুনাফাখোরির উদ্দেশ্যে মজুত করলে অবশ্যই তা অপরাধ হবে।

৬. ঈনা ক্রয়-বিক্রয়: কোনো ব্যক্তি কারও নিকট বাকিতে নির্দিষ্ট দামে কোনো জিনিস বিক্রি করবে এবং সেটি তার নিকট হস্তান্তর করবে। অতঃপর মূল্য গ্রহণের পূর্বে বিক্রিত মূল্যের চেয়ে কম দামে নগদে বস্তুটি ক্রয় করে নেবে। অতঃপর নির্দিষ্ট মেয়াদান্তে প্রথম ক্রেতার কাছ থেকে প্রথম নির্ধারিত মূল্য গ্রহণ করবে। এ ধরনের ক্রয়-বিক্রয়কে ‘বায়য়ে ঈনা’ বলা হয়। যেমন বিক্রেতা ১ বছরের জন্য কারও কাছে ১২০০০/- টাকায় একটি জিনিস বিক্রি করল। অতঃপর ক্রেতা মূল্য গ্রহণের পূর্বেই বিক্রেতা ১০ হাজার টাকা দিয়ে তার কাছ থেকে সেটি ক্রয় করে নিল। পরে মেয়াদান্তে সে প্রথম ক্রেতার কাছ থেকে ১২০০০/- উসুল করে নিল। এভাবে সে ২০০০/- টাকা বেশি লাভ করল। এটিকেই বলা হয় ‘বায়য়ে ঈনা’।

ক্রেতা পণ্যের পরিবর্তে নগদ মূল্য গ্রহণ করার কারণে একে ‘বায়য়ে ঈনা’ বলা হয়। অথবা বিক্রিত মূল বস্তুটি বিক্রেতার কাছে ফিরে আসার কারণে একে বায়য়ে ঈনা বলে। ইমাম ইবনু তায়মিয়াহ (রহ.) বলেন, ‘ঐকমত্য সত্ত্বেও এটি ক্রয়-বিক্রয়দ্বয়কে বাতিল করে দেবে। কেননা এটা কৌশল।’ শায়খ ছালেহ ফাওযান বলেন, ‘এটা হারাম। কারণ এটা সুদ খাওয়ার কৌশল। যেন আপনি বর্তমান মূল্যের চেয়ে বাকিতে বেশি মূল্যে বিক্রয় করলেন এবং স্রেফ সুদ খাওয়ার কৌশল ও মাধ্যম হিসেবে পণ্যকে গ্রহণ করলেন।’ (আল-বুয়ূ আল-মানহি আনহা ফিল ইসলাম, পৃ. ২১-২২)

রাসুলুল্লাহ (সা.) এ ধরনের পাতানো ক্রয়-বিক্রয় নিষিদ্ধ করে বলেন, ‘যখন তোমরা প্রকৃত মূল্যের চেয়ে বাকিতে অধিক মূল্যে ক্রয়-বিক্রয় করবে, গরুর লেজ আঁকড়ে ধরবে, কৃষিকাজেই সন্তুষ্ট থাকবে (অর্থাৎ দুনিয়া নিয়ে ব্যস্ত থাকবে এবং আখিরাতের ওপর দুনিয়াকে প্রাধান্য দেবে) এবং জিহাদ পরিত্যাগ করবে তখন আল্লাহ তোমাদের ওপর লাঞ্ছনাদায়ক ও অপমানকর অবস্থা চাপিয়ে দেবেন। তোমরা নিজেদের দ্বীনে প্রত্যাবর্তন না করা পর্যন্ত আল্লাহ তোমাদেরকে এই অপমান ও লাঞ্ছনা থেকে মুক্তি দেবেন না।’ (আবু দাঊদ: ৩৪৬২)

৭. নিজের কাছে মজুত নেই এমন জিনিস বিক্রি করা ইসলামে নিষিদ্ধ। যেমন- ক্রেতা কোনো ব্যবসায়ীর কাছে এসে কোনো নির্দিষ্ট পণ্য কিনতে চাইল। অথচ সেই পণ্যটি এই ব্যবসায়ীর কাছে মজুত নেই। এবার নগদে বা বাকিতে ক্রেতা ও বিক্রেতা চুক্তি ও মূল্যের ব্যাপারে ঐকমত্যে পৌঁছল। তখন পর্যন্ত ব্যবসায়ী বা বিক্রেতা পণ্যের মালিক নন। অতঃপর ব্যবসায়ী সেই পণ্য ক্রয় করে এনে ক্রেতার কাছে হস্তান্তর করল। এ ধরনের ক্রয়-বিক্রয় হারাম।

হাকীম বিন হিযাম রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে এসে বলল, ‘আমার নিকট কোনো ব্যক্তি এসে এমন জিনিস ক্রয় করতে চায়, যা আমার কাছে নেই। আমি কি বাজার থেকে পণ্য কিনে তারপর তার নিকট সেটি বিক্রি করব? তিনি বললেন, ‘তোমার নিকট যা মজুত নেই, তা তুমি বিক্রি করো না।’ (তিরমিজি: ১২৩২; আবু দাঊদ: ৩৫০৩)

উপসংহার: পরিশেষে বলা যায়, মুনাফাখোরী সমাজ ও জনকল্যাণ বিরোধী ঘৃণ্য পুঁজিবাদী মানসিকতা। অত্যধিক মুনাফা অর্জনের নেশায় বুঁদ হয়ে ব্যবসায়ীরা পণ্যদ্রব্য মজুত করে বাজারে পণ্যের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে। এমনকি অনেক সময় শত শত মণ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য (গম, আলু প্রভৃতি) গুদামে রেখে পচিয়ে ফেলা হয়। তবুও চড়া মূল্যের আশায় বাজারজাত করা হয় না। আবার কখনো কখনো মুনাফাখোর ব্যবসায়ীরা বাজারে পণ্যের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির জন্য আমদানিকৃত চাল/গম সমুদ্রে নিক্ষেপ করে। এতে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির যাঁতাকলে সাধারণ মানুষ পিষ্ট হয়।

দৈনন্দিন চাহিদা মেটাতে তাদের ওঠে নাভিশ্বাস। কিন্তু সেদিকে মুনাফাখোররা দৃষ্টিপাত করে না। ইসলাম এ ধরনের মুনাফাখোরী মনোভাবকে ধিক্কার দিয়েছে। তবে ইসলামে হালাল উপায়ে ব্যবসার মাধ্যমে মুনাফা অর্জনে কোনো বাধা নেই। বরং তা বৈধ। কিন্তু অবৈধ ব্যবসার মাধ্যমে উপার্জিত মুনাফা অবৈধ বা হারাম।

ফলকথা, মুনাফাখোরী, মজুতদারি ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি একটি অপরটির সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। অত্যধিক মুনাফা অর্জনের জন্যই পণ্যদ্রব্য মজুত করে রাখা হয়। আর এর ফলেই বাজারে পণ্যের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি হয় এবং দ্রব্যমূল্য গগণচুম্বী হয়ে সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে যায়।

তাই দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির লাগাম টেনে ধরার জন্য মুনাফাখোরদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয়ভাবে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। গড়ে তুলতে হবে সামাজিক সচেতনতা। সঙ্গে সঙ্গে জাকাতভিত্তিক অর্থব্যবস্থা চালু করে মজুতদারি ও মুনাফাখোরীর কবর রচনা করতে হবে।

নয়াশতাব্দী/আরজে

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ