ঢাকা, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইবাদতের সুবর্ণ সময় শীতকাল

প্রকাশনার সময়: ২৮ নভেম্বর ২০২৩, ০৮:০০

শীত হলো মুমিনের জন্য ইবাদতের বসন্তকাল। বসন্তকালে যেভাবে গাছগাছালি পত্রপল্লবে সমৃদ্ধ থাকে। পশুপাখি যত ইচ্ছা খেয়ে তাদের স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে পারে। তেমনি মুমিন বান্দা এ ঋতুতে ইবাদত-বন্দেগি করে আত্মিক উন্নতি করতে পারে, রবের অধিক নিকটবর্তী হতে পারে।

শীতে একদিকে যেমন নানারকম শাকসবজি আর ফলমূলে প্রকৃতি জেগে ওঠে, অন্যদিকে বিভিন্ন ইবাদত পালনের সুবর্ণ সুযোগও হয়ে ওঠে এ ঋতুতে। বছরের অন্যান্য ঋতুতে যেসব ইবাদত আদায় কষ্টসাধ্য হয়, শীতের ঋতুতে তা পালন করা সহজতম হয়ে যায়। যেমন, শীতকালে রাত বড় হয়ে থাকে। ফলে যথেষ্ট পরিমাণ ঘুমানোর পরও ভোর রাতে ওঠে ইবাদত করা যায়। আর দিন ছোট হওয়ায় নফল অথবা কাজা রোজা ক্ষুধা, পিপাসায় কাতর হওয়ার আগেই অনায়াসে রাখা যায়।

আবু সাঈদ খুদরী (রা.) রাসুল (সা.) থেকে বর্ণনা করেন, ‘শীত হলো মুমিনের বসন্ত। অন্য বর্ণনায় আছে, ‘শীতে রাত বড় হয়ে থাকে, ফলে সে (নামাজের জন্য) জাগ্রত হয়। আর দিন হয়ে থাকে ছোট। ফলে সে রোজা রাখে।’ (মুসনাদে আহমদ: ১১৭১৬; সুনানে কুবরা-বায়হাকি: ৮৪৫৬)

অনেক সময় চাইলেও কোরআন তিলাওয়াতের সুযোগ হয়ে ওঠে না। শীতকালীন শেষরাতের নির্জন সময়টুকু কাজে লাগাতে পারি, এ সময় কোরআন নিয়ে তাকাব্বুর (গবেষণা) করতে পারি, কোরআনের সান্নিধ্যে নিজের ঈমানকে শাণিত করতে পারি।

উবাইদ ইবনে উমাইর (রা.) বলতেন, ‘হে কোরআনের হাফেজরা, কোরআন পড়ার জন্য তোমাদের রাত দীর্ঘায়িত করা হয়েছে। সুতরাং কোরআন পড়তে থাকো। রোজা রাখার জন্য তোমাদের দিনকে ছোট করা হয়েছে। সুতরাং দিনের বেলা রোজা রাখো। শীতের রাতে জাগ্রত থেকে ইবাদত করা (সওয়াবের ক্ষেত্রে) গ্রীষ্মের দিনে রোজা রাখার সমান।’ (লাতায়িফুল মাআরিফ পৃ. ৩২৭)।

শীতের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ আমল হলো, নিজের তৌফিক ও সামর্থ্য অনুযায়ী শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানো। তাদের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়া। এটি যেমন মানবিক ও নৈতিক কর্তব্য, তেমনি ঈমানি দায়িত্বও। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘বান্দা যতক্ষণ পর্যন্ত তার ভাইয়ের সাহায্যে থাকবে আল্লাহ ততক্ষণ পর্যন্ত তার সাহায্য করবেন।’ (মুসলিম: ২৬৯৯)

গ্রীষ্মকালে মানুষ ইবাদত-বন্দেগি স্বাভাবিকভাবে করলেও শীতকালে কিছুটা অলসতাবোধ করে। অজু-গোসলে অবহেলা করে। আবার অনেকে এশা, ফজর কাজা করে ফেলে। এটা একদমই উচিত নয়। খেয়াল রাখতে হবে, শীতের তীব্রতা যেন আমাদের উদাসীন করে না দেয়। শীতের প্রকোপে আমরা যেন গাফিলতির শিকার না হই।

আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, একদা রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘আমি কি এমন আমলের কথা জানাব না! যার দ্বারা আল্লাহ তায়ালা তোমাদের পাপগুলো মার্জনা করে দেবেন এবং আখিরাতে তোমাদের উচ্চ মর্যাদা দান করবেন। সাহাবিরা আরজ করেন, অবশ্যই বলুন। তিনি তখন বললেন, ‘কষ্টের সময় পূর্ণরূপে অজু করা, মসজিদে বেশি বেশি গমন করা এবং এক নামাজ আদায়ের পর পরবর্তী নামাজের অপেক্ষায় থাকা।’ (বুখারি: ৫৭৪)

নয়াশতাব্দী/আরজে

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ