ঢাকা, সোমবার, ১১ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ কার্তিক ১৪৩১, ৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জুমার খুতবার সময় সুন্নত নামাজ পড়া যাবে?

প্রকাশনার সময়: ১২ অক্টোবর ২০২৩, ১৯:১৩ | আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০২৩, ১৯:১৫

প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক, জ্ঞানসম্পন্ন (যিনি মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন নন) মুকিম (যিনি মুসাফির নন) স্বাধীন (যিনি ক্রিতদাস নন) নগর বা লোকালয়ের অধিবাসী মুসলমান পুরুষদের ওপর জুমার দিন জুমার নামাজ আদায় করা ওয়াজিব; যার এমন কোনো গ্রহণযোগ্য অসুবিধা, অসুস্থতা বা বার্ধক্য নেই যে কারণে তিনি মসজিদে উপস্থিত হতে ও জুমা আদায় করতে অক্ষম। রাসুল সা. বলেছেন, জুমার নামাজ প্রত্যেক মুসলিমের উপর জামাআতের সাথে আদায় করা ওয়াজিব। কিন্তু তা চার প্রকার লোকের উপর ওয়াজিব নয়; ক্রীতদাস, মহিলা, শিশু ও অসুস্থ ব্যক্তি। (সুনান আবু দাউদ: ১০৬৭)

ইমাম দারাকুতনি ও বায়হাকির বর্ণনায় এসেছে, আল্লাহ ও পরকালের ওপর যাদের ইমান আছে, তাদের ওপর জুমা ওয়াজিব। তবে অসুস্থ, মুসাফির, নারী, শিশু ও ক্রিতদাসদের ওপর জুমা ওয়াজিব নয়।

জুমার দুই রাকাত নামাজের পাশাপাশি জুমা পূর্ববর্তী ইমামের দুটি খুতবা শোনাও ওয়াজিব। রাসুলুল্লাহ এর নির্দেশনা হলো, জুমার দিন যত দ্রুত সম্ভব মসজিদে চলে যেতে হবে। মসজিদে গিয়ে যদি দেখা যায়, ইমাম খুতবার জন্য বসেননি, তাহলে নফল নামাজ পড়বে। ইমাম খুতবার জন্য বসে গেলে খুতবা শুনবে। রাসুল (সা.) বলেন, মুসলমান ব্যক্তি যদি জুমার দিন গোসল করে মসজিদে যায়, কাউকে কষ্ট দেওয়া থেকে বিরত থাকে, ইমাম বের হয়নি দেখলে যে পরিমাণ ইচ্ছা নামায পড়ে, ইমাম বের হয়ে থাকলে বসে যায় ও চুপ থেকে খুতবা শোনে ও ইমামের সাথে নামাজ আদায় করে, তাহলে ওই জুমায়ই এ ব্যক্তির জীবনের সব গুনাহ যদি মাফ না-ও হয়, এটা তো অবশ্যই হবে যে, পরবর্তী জুমা পর্যন্ত তা তার জন্য কাফফারা হয়ে যাবে। (মুসনাদে আহমদ: ২০৭২১)

তাই জুমার আগের সুন্নত পড়ার জন্য খুতবার আগেই মসজিদে উপস্থিত হতে হবে। খুতবা শুরু হয়ে গেলে খুতবা শোনা ওয়াজিব। তখন আর সুন্নাত পড়া যাবে না।

তবে যদি সুন্নত নামাজ শেষ হওয়ার আগে ইমাম খুতবা দিতে শুরু করে, তাহলে এমন অবস্থায় দুই রাকাতের পর সালাম ফিরিয়ে নিতে হবে। আর যদি তৃতীয় রাকাতে দাঁড়িয়ে যান, তাহলে তৃতীয় রাকাতের সেজদা না করে থাকলে বসে যাবেন এবং সালাম ফিরিয়ে নামাজ শেষ করবেন। উভয় অবস্থায় জুমার পর ওই চার রাকাত সুন্নত পড়ে নেওয়া উত্তম। আর যদি তৃতীয় রাকাতের সেজদা করে ফেলেন, তাহলে চার রাকাতই পূর্ণ করবেন। কারণ হাদিস দ্বারা সুদৃঢ়ভাবে প্রমাণিত হয়, খুতবার সময় নিশ্চুপ হয়ে খুতবা শোনা ওয়াজিব ও কথাবার্তা বলা হারাম।

অনুরূপ খুতবার সময় সুন্নত-নফল নামাজ পড়াও বৈধ নয়। এক হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, ‘যখন ইমাম খুতবার জন্য বের হবেন, তখন নামাজ পড়বে না, কথাও বলবে না।’ (মেশকাত : ৩/৪৩২)

ফিকহ শাস্ত্রের নির্ভরযোগ্য গ্রন্থ ‘ফাতাওয়ায়ে শামি’তে একটি মূলনীতি উল্লেখ রয়েছে, ‘যেসব কাজ নামাজের মধ্যে হারাম, তা খুতবা চলার সময়ও হারাম। যেমন—কথাবার্তা বলা, পানাহার করা ইত্যাদি।’ (ফাতাওয়ায়ে শামি: ৩ / ৩৫)

নয়া শতাব্দী/আরআর

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ