ঈমানের পর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল নামাজ। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহর পক্ষ থেকে বার বার নামাজের তাগিদ পেয়েছেন। কুরআনে পাকে আল্লাহ তাআলা বিভিন্ন জায়গায় সরাসরি ৮২ বার সালাত শব্দ উল্লেখ করে নামাজের গুরুত্ব তুলে ধরেছেন। তাই প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নামাজকে ঈমানের পর স্থান দিয়েছেন। নামাজের গুরুত্ব ও ফায়েদা সম্পর্কে সাহাবায়ে কেরামের সামনে অসংখ্য হাদিন বর্ণনা করেছেন।
ইসলামের পাঁচটি স্তম্বের মধ্যে নামাজ এবং রোজা ধনী, দরিদ্র সকলের জন্যই ফরজ। তবে হজ এবং জাকাতের বিধান শুধুমাত্র ধনী ব্যাক্তিদের জন্য ফরজ করা হয়েছে। শারীরিক অসুস্থতাসহ কিছু কিছু ক্ষেত্রে ফরজ রোজা ভঙ্গ করার হুকুম রয়েছে এবং পরে তা আদায় করে নেওয়া যায়। রোজা ভঙ্গের পর অক্ষম ব্যাক্তি ফকির, মিসকিনকে পেট ভরে খাবার খাওয়ানোর মাধ্যমে রোজার কাফফারা আদায় করতে পারবেন এইরকম বিধানও ইসলামে রয়েছে। তবে নামাজের ক্ষেত্রে কাজা করার হুকুম শুধুমাত্র বিশেষ ক্ষেত্রেই দেওয়া হয়েছে এবং নামাজের কোনো কাফফারা বা বদলা হয় না। বলা হয়েছে যদি পানির অভাবে নামাজ কাজা হবার সম্ভবনা থাকে তবে সে যেন তাইমুম করে নামাজ আদায় করে। যদি কোন ব্যাক্তি দাঁড়িয়ে নামাজ পড়তে না পারে সে যেন বসে বসে নামাজ আদায় করে নেয়। যদি কারো বসে বসে নামাজ পড়তেও কষ্টকর হয়ে পড়ে তারপরেও সে যেন শুয়ে নামাজ আদায় করে। এমনকি চোখের ইশারায় নামাজ আদায় করতে বলা হয়েছে।
নামাজ এমন পবিত্র ও মহিমান্বিত ইবাদত, যা শুধু পবিত্র জায়গায় আদায় করার সুযোগ রয়েছে। নামাজের ১৩ ফরজের মধ্যে জায়গা পবিত্র হওয়া অন্যতম। অর্থাৎ জায়গা পবিত্র হওয়া নামাজ শুদ্ধ হওয়ার অন্যতম শর্ত।
মূলত পুরো জমিনই উম্মতে মুহাম্মদির জন্য নামাজের স্থান। শুধুমাত্র পাক হওয়া ও নামাজের প্রতিবন্ধক কিছু না থাকলেই হয়। জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, আমার জন্য সমগ্র জমিনকে মসজিদ ও পবিত্রতা অর্জনের উপকরণ করে দেওয়া হয়েছে। আমার উম্মতের যে ব্যক্তি যেখানেই নামাজ পায়, সেখানেই নামাজ আদায় করবে।’ (নাসায়ি: ৭৩৬)
অতএব, যে জায়গায় নাপাকি রয়েছে, সেই জায়গায় নামাজ পড়া যাবে না। অন্যদিকে যদি কোনো ধরনের নাপাকি না থাকে, সেটি স্বামী-স্ত্রীর ঘুমানোর বিছানা হলেও সেখানে নামাজ পড়া যাবে।
জেনে রাখা প্রয়োজন, তোষকের ওপর নামাজ শুদ্ধ হওয়ার শর্ত রয়েছে। তা হলো- কপালকে শক্ত জায়গা পর্যন্ত চাপিয়ে নিতে হবে। যাতে চাপ দিলে আর নিচে না যায়। (রদ্দুল মুহতার: ১/৪৫৪, মাজমাউল আনহুর: ১/১৪৮, আহসানুল ফতোয়া: ৩/৪৩২)
নয়া শতাব্দী/আরআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ