ঢাকা, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

জুমার দ্বিতীয় আজানের উত্তর দিতে হবে?

প্রকাশনার সময়: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৯:০৯

আজান শব্দটি আরবি। এর অর্থ হলো ঘোষণা দেওয়া, জানিয়ে দেওয়া, আহ্বান করা, ডাকা ইত্যাদি। ইসলামি শরিয়তে নির্ধারিত কতকগুলো বাক্যের মাধ্যমে নির্ধারিত সময়ে নামাজের জন্য মানুষকে আহ্বান করার নামই হলো আজান। আজান ইসলামের অন্যতম নিদর্শন বা প্রতীক। আজানের মাধ্যমে প্রতিটি মুমিনের অন্তর এক ঈমানী শক্তিতে উজ্জ্বীবিত হয়।

জামাআতে নামাজ পড়ার জন্য আজান দেয়া সুন্নত। কেউ কেউ একে ওয়াজিব বা আবশ্যক বলেছেন। আজান ওহী না হলেও কতিপয় সাহাবায়ে কেরামের স্বপ্নেপ্রাপ্ত বাক্য। যাই হোক নামাজের জন্য আজান অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ আজানই মানুষকে দ্রুত নামাজের জন্য তৈরি হতে উদ্বুদ্ধ করে।

জুমার খুতবার আগে যে আজান দেওয়া হয় এর জবাব দেওয়া যাবে কি না— এ ব্যাপারে ফকিহদের থেকে দুই ধরনের মতামতই রয়েছে। একটি মতে, এ আজানের জবাব দেওয়া যাবে না। এক বর্ণনায় এসেছে— আতা (রহ.) থেকে বর্ণিত, আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) ও আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, তারা জুমার দিন ইমাম সাহেব খুতবার জন্য বের হওয়ার পরে (মুসল্লিদের জন্য) নামাজ পড়া এবং কথা বলা অপছন্দ করতেন। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা : ৫৩৪০)

এই বর্ণনা এবং অন্যান্য আরও বর্ণনার আলোকে অনেক ফকিহ বলেছেন, খুতবার আজানের জবাব দেওয়া যাবে না।

পক্ষান্তরে সহীহ বুখারির একটি হাদিস এবং অন্য আরও বর্ণনার আলোকে অনেক ফকিহ বলেছেন, জুমার খুতবার আজানের জবাব দেওয়া জায়েজ আছে। আবু উমামা ইবনে সাহল ইবনে হুনাইফ থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, আমি মুআবিয়া ইবনে আবু সুফিয়ান (রা.)-কে দেখেছি, তিনি মিম্বারে বসা ছিলেন এবং মুআজ্জিন আজান দিলেন। মুআজ্জিন যখন বললেন, اللهُ أَكْبَرُ اللهُ أَكْبَرُ তখন মুআবিয়া (রা.) বললেন, اللهُ أَكْبَرُ اللهُ أَكْبَرُ। ... যখন আজান শেষ হল তখন তিনি বললেন, হে লোকসকল! আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে এই মজলিশে যখন মুআজ্জিন আজান দেয় তখন এমনটিই বলতে শুনেছি, যেমনটি তোমরা আমাকে বলতে শুনলে। (বুখারি : ৯১৪)

আরেক বর্ণনায় রয়েছে, সাইদ ইবনুল মুসায়্যিব (রহ.) বলেন, ইমাম খুতবার জন্য বের হলে নামাজ পড়া যাবে না এবং খুতবা শুরু করে দিলে আর কথা বলা যাবে না। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা : ৫৩৪২)

উল্লিখিত হাদিস ও আছারের আলোকে অনেক ফকিহ বলেছেন, খুতবা শুরু করার আগে আজানের জবাব দেওয়া জায়েয আছে। হিন্দুস্তানের একাধিক ফকিহ এ মত দিয়েছেন। আব্দুল হাই লখনোভী (রহ.), মুফফি কিফায়াতুল্লাহ (রহ.), জাফর আহমাদ উসমানি (রহ.), মুফফি আব্দুর রহিম লাজপুরী (রহ.) প্রমুখ ফকিহরা জুমার আজানের জবাব দেওয়া জায়েজ আছে বলে মত ব্যক্ত করেছেন।

সুতরাং কেউ যদি জুমার খুতবার আজানের জবাব দেয় তাহলে তাকে নিষেধ করা যাবে না। (বাদায়েউস সানায়ে : ১/৪৯৫, আলবাহরুর রায়েক : ২/১৫৫, কিফায়াতুল মুফতি : ৫/২০৫, ইমদাদুল আহকাম : ১/৪১৯)

নয়া শতাব্দী/আরআর

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ