ঢাকা, রোববার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

আশুরায় করণীয় ও বর্জনীয়

প্রকাশনার সময়: ২৯ জুলাই ২০২৩, ০৭:৫০
ছবি : সংগৃহীত

আশুরা একটি আরবি শব্দ, যার অর্থ দশ। ইসলামের পরিভায়ায় মহররম মাসের দশ তারিখকে আশুরা বলে। এই আশুরাতে আদি পিতা আদম (আ.) এর সৃষ্টি, নূহ (আ.) এর নৌযাত্রা ও প্লাবন, মুসা (আ.) এর সমুদ্রপথে রওনাসহ ইসলামের ইতিহাসে বহু ঐতিহাসিক ঘটনা সংঘটিত হয়েছে।

আশুরার দিন রোজার অনেক সাওয়াব রয়েছে। আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণিত, এক হাদিসে রাগুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘রমজানের পরে সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ রোজা হচ্ছে আল্লাহর মাস মহররমের রোজা।’ আশুরার দিন রোজা একসময় ফরজ ছিল। রমজানের রোজা ফরজ হওয়ার পর তা সুন্নত হয়ে গেছে।

আয়েশা (রা) বলেন, ‘কুরাইশরা জাহেরি যুগে আশুরার দিন রোজা রাখত। রাসুলুল্লাহ (সা.) হিজরতের পর থেকে রোজা রাখতেন এবং সাহাবাদের রোজা রাখার নির্দেশ দেন। অতঃপর যখন রমজানের রোজা ফরজ হয়, তখন তিনি বললেন, যার ইচ্ছে রোজা রাখ, আর যার ইচ্ছে রোজা রাখবে না।’ (মুসলিম: ১১২৫)

আশুরার দিনের রোজা এক বছরের কাফফারা। আবু কাতাদাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আরাফার দিনের রোজা এ বছরে ও আগামী বছরের পাপের কাফফারা। আর আশুরার রোজা এক বছরের পাপের কাফফারা হবে।’ (মুসনাদে হুমাইদি: ৪৩৩)

আশুরার আগের দিন বা পরের দিন মোট দুইটা রোজা রাখা সুন্নত। রাসুলুল্লাহ (সা.) হিজরতের পর মদিনা এসে দেখলেন ইহুদিরা আশুরার একটি রোজা রাখে। তাই রাসুলুল্লাহ (সা.) মুসলমানদের দুইটি রোজা রেখে ইহুদিদের বিরোধিতা করার আদেশ করেন। কিন্তু ৬১ হিজরিতে ১০ মহররম প্রিয় নবী (সা.) এর দৌহিত্র জান্নাতের যুবকদের সর্দার হুসাইন (রা) সপরিবারে কারবালার প্রান্তরে ইয়াজিদ বাহিনীর নিকট শাহাদাত বরণ করেন। এই ঘটনা ইসলামের ইতিহাসকে কলঙ্কিত করেছে।

মুসলিম উম্মাহর জন্য অন্যতম বৃহৎ বেদনাবিধুর ঘটনা এটি। কিন্তু এই কারবালার ঘটনাকে কেন্দ্র করে শিয়া সম্প্রদায় মহররম মাসে অনেক বিদআতের প্রচলন করেছেন। মহররম মাস আগমনের সঙ্গে সঙ্গে প্রথম ১০ দিন তারা নিরামিষের নামে আমিষে ভরপুর খাবার খায়। কারবালার ঘটনাকে কেন্দ্র করে তাজিয়া তৈরি করে।

অনেকের ধারণা এই তাজিয়াতে হোসাইন (রা) সমাসীন হয়ে থাকে (নাউজুবিল্লাহ)। এজন্য তারা তাজিয়াকে সিজদাহ করে। হাদিসে প্রিয় নবী (সা.) ঢাক-ঢোল ও অন্য বাদ্যযন্ত্র বাজানোর ব্যাপারে কঠোর ভাষায় নিষেধ করেছেন। তারপরও তারা মহররম মাসে ঢাক, ঢোল ও তবলা বাজিয়ে শোক পালন করে।

এ ছাড়া আশুরার দিন হোসাইন (রা.) কারবালার যুদ্ধের ঘটনাকে কেন্দ্র করে বুক-পিঠ চাপড়িয়ে ক্ষতবিক্ষত করে এবং ‘হায় হোসাইন, হায় হোসাইন’ মাতম করে। যার সঙ্গে ইসলামি শরিয়তের সামান্যতম সর্ম্পক নাই।

মূলত হোসাইন (রা.) এর বিরোধীরাই এসব বিদআত চালু করেছেন। একাধিক হাদিসে এসবের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি উচ্চারিত হয়েছে। এসব বিদআত ও কুফরি ঈমানকে নষ্ট করে দেয়। তাই প্রত্যেক মুসলমানের উচিত শরিয়ত বিরোধী এসব কাজ থেকে দূরে থাকা। প্রিয় নবী (সা) এর সুন্নত তরিকায় মহররম মাসে আমল করা।

নয়া শতাব্দী/এমআর

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ