কোরবানি ইসলামের অন্যতম একটি শিআর বা নিদর্শন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে—‘তোমার প্রতিপালকের উদ্দেশে নামাজ আদায় করো ও পশু কোরবানি করো।’ (সুরা কাউসার: ২) কোরবানির রক্ত প্রবাহিত করার মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য অর্জিত হয়। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আল্লাহর কাছে পৌঁছায় না উহার (জন্তুর) গোশত এবং রক্ত, বরং পৌঁছায় তোমাদের তাকওয়া।’ (সুরা হজ: ৩৭)
সামর্থ্যবানদের ওপর কোরবানি ওয়াজিব। নারী হোক বা পুরুষ, নিসাব পরিমাণ সম্পদ ১০ জিলহজ ফজরের পর থেকে ১২ জিলহজ সূর্যাস্তের পূর্ব পর্যন্ত কারো মালিকানায় থাকলে তাকে কোরবানি দিতে হবে। কোরবানির ওয়াজিব হওয়ার জন্য ওই সম্পদ এক বছর অতিক্রম হওয়া শর্ত নয়। (আদ দুররুল মুখতার, পৃষ্ঠা-২১৯, খণ্ড: ৫)
সামর্থ্য থাকার পরও যারা কোরবানি করে না, তারা (নারী-পুরুষ যে-ই হোক) কঠিন গুনাহগার হবে। এক হাদিসে রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি সামর্থ্য থাকার পরও কোরবানি করে না, সে যেন আমাদের ঈদগাহের কাছে না আসে।’ (ইবনে মাজাহ: ৩১২৩; মুসতাদরাক হাকেম: ৩৫১৯; আত-তারগিব ওয়াত-তারহিব: ২/১৫৫)
প্রসঙ্গত, নিসাব হলো- স্বর্ণের ক্ষেত্রে সাড়ে সাত (৭.৫) ভরি। রুপার ক্ষেত্রে সাড়ে বায়ান্ন (৫২.৫) ভরি। আর অন্যান্য বস্তুর ক্ষেত্রে সাড়ে বায়ান্ন ভরি রুপার সমমূল্যের সম্পদ। স্বর্ণ বা রুপার কোনো একটি যদি পৃথকভাবে নিসাব পরিমাণ না হয় তবে স্বর্ণ-রুপা উভয়টি মিলে কিংবা এর সঙ্গে প্রয়োজন-অতিরিক্ত অন্য বস্তুর মূল্য মিলে সাড়ে বায়ান্ন ভরি রুপার সমমূল্যের হয়ে যায়, সেক্ষেত্রেও কোরবানি ওয়াজিব হবে। স্বর্ণ-রুপার অলংকার, নগদ অর্থ, যে জমি বাৎসরিক খোরাকির জন্য প্রয়োজন হয় না এবং প্রয়োজন অতিরিক্ত আসবাবপত্র এসবই কোরবানির নিসাবের ক্ষেত্রে হিসাবযোগ্য। (ফতোয়ায়ে তাতারখানিয়া: ১৭/৪০৫)
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে কোরবানিসহ প্রত্যেক বিষয়ে সুন্নাহর অনুসরণের তাওফিক দান করুন। আমিন।
নয়াশতাব্দী/এমটি
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ