মানুষ মাত্রই তার গুনাহ হয়ে থাকে। নবীরা (আ.) ছাড়া কেউ গুনাহের ঊর্ধ্বে নয়। মানুষের যেমন পাপে জড়িত হওয়া নৈমিত্তিক ঘটনা, দয়াময় আল্লাহও তেমনি মানুষকে ক্ষমার সহজ সুযোগ রেখেছেন দৈনিকভিত্তিতে।
দৈনিক ক্ষমার আওতায় কেউ না আসতে পারে, দয়াময় তাকে ক্ষমার সুযোগ দিয়েছেন সাপ্তাহিক ভিত্তিতে, তাও যদি না পারে তবে সুযোগ খোলা রেখেছেন বার্ষিক একটি পুরো মাস।
আর আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত— রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ, এক জুমা থেকে আরেক জুমা এবং এক রমজান থেকে আরেক রমজান মধ্যবর্তী সময়ের গুনাহসমূহকে মুছে দেয়— যদি সে কবিরা গুনাহ থেকে বেঁচে থাকে।’ (মুসলিম : ২৩৩)।
রমজানের এই মাগফিরাতের বিশেষ মৌসুমে জুমার দিনগুলো নিজের পাপরাশি ক্ষমা করে নেওয়ার তিন তিনটি সুযোগ একসঙ্গে নিয়ে আবির্ভূত হয়। রমজানের জুমার দিন যদি কেউ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে থাকেন, তাহলে তিনি উপর্যুক্ত হাদিসে বর্ণিত ক্ষমার তিন স্তরের সবগুলোর আওতায় একসঙ্গে আসবেন।
সারা বছর আল্লাহর মাগফিরাতের দুয়ার খোলা থাকা সত্ত্বেও আমরা অনেকে তা হাসিল করতে পারি না। তাই রমজানে ক্ষমাপ্রাপ্তির সুযোগ যেন কিছুতেই হাতছাড়া না হয়। রমজানের অন্য দিনগুলো লুফে নিতে না পারলেও রমজানের জুমাবারগুলো অন্তত যেন হাতছাড়া না হয়।
ইমাম নববি (রহ.) বলেন, ‘জুমা হলো সপ্তাহের শ্রেষ্ঠ দিন আর রমজান হলো বছরের শ্রেষ্ঠ মাস।’ সুতরাং রমজানের জুমা মানে আল্লাহর কাছে ক্ষমাপ্রাপ্তির দ্বিগুণ-বহুগুণ সুযোগ।
বলাবাহুল্য, আল্লাহর মাগফিরাত তথা মার্জনা লাভ করা মানবজীবনের সবচেয়ে বড় অর্জন। সবচেয়ে বড় সাফল্য। গুনাহ থেকে ক্ষমা পেয়ে জাহান্নাম হতে মুক্তি এবং জান্নাতে প্রবেশের ছাড়পত্র অর্জন করা।
আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘প্রত্যেক প্রাণীকে আস্বাদন করতে হবে মৃত্যু। আর তোমরা কিয়ামতের দিন পরিপূর্ণ বদলাপ্রাপ্ত হবে। তারপর যাকে দোজখ থেকে দূরে রাখা হবে এবং জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে, সেই (প্রকৃত) সফল। আর পার্থিব জীবন ধোঁকা ছাড়া অন্য কোনো সম্পদ নয়।’ (সূরা আলে ইমরান : ৮৫)।
রমজান পেলেও ক্ষমার সুযোগ হাতছাড়া হলে তারচেয়ে বড় দুর্ভাগ্যের আর কিছু হতে পারে না। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, মহানবী (সা.) বলেন, ‘ওই লোকের নাক মলিন হোক যার কাছে রমজান মাস আসল, তারপর তা শেষ হয়ে গেল, অথচ সে ক্ষমাপ্রাপ্ত হলো না।’ (তিরমিজি)।
নয়া শতাব্দী/এমআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ