আপনার স্ত্রীকে রানীর মর্যাদা দিন, বিনিময়ে তিনি আপনাকে রাজার মর্যাদা দিবেন। সাফিয়্যা (রা.) ছিলেন, নবীজির অন্যতম স্ত্রী। তিনি কিছুটা খাটো ছিলেন, ফলে উটের পীঠে আরোহন করতে কষ্ট হতো। তাই রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে সাহায্য করার জন্যে নিজের হাঁটু পেতে দিতেন। সাফিয়্যা (রা.) সেই হাঁটুতে পা রেখে উটের হাওদায় ওঠে বসতেন। [সহিহ বুখারি : ৪২১১]
আম্মাজান সাফিয়্যা (রা.) বলেন, ‘একবার রাসুল (সা.) তার স্ত্রীদের সাথে হজে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে আমার উট বসে পড়ল, কারণ ওটা ছিল সবচেয়ে দুর্বল উট, তাই আমি কেঁদে ফেললাম। নবী (সা.) আমার কাছে আসলেন আর আমার চোখের জল নিজের জামা ও হাত দিয়ে মুছে দিলেন।’ [মুসনাদে আহমাদ : ৬/৩৩৭]
সুবহানাল্লাহ!.....
পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মানুষটি তার স্ত্রীর সাহায্যে নিজের হাঁটু বিছিয়ে দেন আর সেই হাঁটুতে পা দিয়ে ভর করে স্ত্রী উটের পীঠে চড়েন! কী অসাধারণ দৃশ্য! কী চমৎকার বিনয় ও ভালবাসা! আবার স্ত্রীর চোখের পানি নিজের জামা ও হাত দিয়ে পরম মমতায় মুছে দেন। অন্য হাদিসে এসেছে, তিনি উঠের পীঠে তন্দ্রালু হয়ে পড়তেন, তখন নবীজি তার মাথা ধরে রাখতেন! একজন স্ত্রী তার স্বামীর কাছ থেকে আর কী চায়?
একজন স্ত্রী হিসেবে সাফিয়্যা (রা.) নিজ স্বামী রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে কীভাবে মূল্যায়ন করতেন? কতটুকু ভালবাসতেন? এটি বুঝতে একটি হাদিসই যথেষ্ট হতে পারে।
হাদিসে এসেছে, ‘রাসুল (সা.) যখন প্রচ- অসুস্থ হয়ে মৃত্যু শয্যায় ছিলেন, তার স্ত্রীরা তার চারপাশে জড়ো হলেন। তখন সাফিয়্যা (রা.) বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল! আল্লাহর শপথ! আপনার জায়গায় যদি আমি থাকতে পারতাম!’ (অর্থাৎ, আপনার কষ্টটা আপনার না হয়ে যদি আমার হতো!) তার কথা শুনে অন্য স্ত্রীগণ মুখটিপে হাসলেন। রাসুল (সা.) তাদের দেখে ফেললেন এবং বললেন, ‘তোমাদের মুখ ধুয়ে ফেল।’ তারা বলল, ‘হে আল্লাহর রাসুল! কেন?’ তিনি জবাবে বললেন,‘কারণ তোমরা তাকে বিদ্রুপ করেছ। আল্লাহর শপথ! সে সত্য বলছে।’ [তবাকাতে ইবনে সা’দ: ৮/১০১]
মূলকথা হলো, স্ত্রীকে ভালোবাসা ও সম্মান দিন। তাকে রাণীর মত ট্রিট করুন। সে আপনাকে রাজার মত ট্রিট করবে, আপনাকে সম্মান করবে, ভালোবাসবে। যেমনটি আমরা দেখেছি সাফিয়্যা (রা.) ও নবীজির জীবনে।
নয়া শতাব্দী/এসএম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ