নববর্ষ মানে নতুনের আগমনই শুধু নয়; নববর্ষ মানে জীবন থেকে পুরনো একটি বছরের বিদায়ও। বুদ্ধিমান সে, যে নতুন বছর উদযাপনের আগে হারিয়ে ফেলা বছরটির জন্য শোক পালন করে।
যত দিন যাচ্ছে, থার্টি ফার্স্ট নাইটের উন্মত্ততা ততই বাড়ছে। ডিজে পার্টি, অবাধ যৌনাচার এবং মদপানের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বিকট শব্দের আতশবাজি, পটকা ফোটানো ও ফানুস ওড়ানোর অপসংস্কৃতি।
গত বছর থার্টি ফার্স্ট নাইটে তিনটি মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। উল্লাসকারীদের পটকার আওয়াজ একটি নিষ্পাপ শিশুর জীবন কেড়ে নেয়। ফানুস-সৃষ্ট আগুনে সর্বস্ব দিয়ে গড়ে তোলা একজন দরিদ্র নারীর প্লাস্টিক কারখানা সম্পূর্ণ ভস্ম হয়ে যায় এবং ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, পটকার বিকট শব্দে ভয় পেয়ে একঝাঁক পাখি একটি বাসার ড্রয়িংরুমে ঢুকে ক্রমাগত চিৎকার করে ডানা ঝাপটাচ্ছে।
পাখি প্রকৃতির শোভা ৷ সবুজ গাছের ডালে ডালে পাখিরা কলরব করবে, এটাই সৃষ্টির নিয়ম ও সৌন্দর্য। অথচ উৎসবের নামে অযৌক্তিক এই উন্মাদনার কারণে আমাদের পরিবেশ ও প্রাণীবৈচিত্র্য ধ্বংস হচ্ছে।
নতুন বছরের আগমন যদি আনন্দের কারণ হয়, তবে পুরনো বছরের বিদায় বেদনার কারণ হওয়া উচিত। নববর্ষে যারা আনন্দ উদযাপন করে, হারিয়ে ফেলা বছরটির জন্য তারা কি কখনো বেদনা অনুভব করে?
মানুষকে আল্লাহ বিবেক দিয়ে সৃষ্টি করেছেন। বিবেকসম্পন্ন মানুষের পাশবিক উন্মাদনায় পাখিরা যদি আতঙ্কে ডানা ঝাপটায়, রাস্তার কুকুর যদি দিগ্বিদিক ছোটাছুটি করে ভয়ে, গরিবের মাথাগোঁজার আশ্রয় যদি ছাই হয় ফানুসের আগুনে, পটকার বিকট শব্দ যদি খালি করে মায়ের কোল, তবে মানুষ তোমার শ্রেষ্ঠত্ব রইল কোথায়!
নয়া শতাব্দী/আরআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ